এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > উস্থিয়ানদের অনশন তুলতে সিপির চাপ? রাতদুপুরে হাজির হয়ে শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি শঙ্কুর বিস্ফোরণ

উস্থিয়ানদের অনশন তুলতে সিপির চাপ? রাতদুপুরে হাজির হয়ে শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি শঙ্কুর বিস্ফোরণ


অনৈতিক ও অমানবিকভাবে ১৪ শিক্ষকের বদলির সিদ্ধান্ত রড করতে এবং নিজেদের ন্যায্য পিআরটি স্কেলের দাবি বুঝে নিতে বিকাশ ভবনের অদূরে উন্নয়ন ভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষক। রাজ্যের শিক্ষকদের দাবিদাওয়াকে এক সুতোয় বাঁধার কাজটি করেছে প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন উস্থি ইউনাইটেড। এনসিটিই রুল মানতে গিয়ে নিজেদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়িয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন রাজ্যের সকল প্রাথমিক শিক্ষক।

কিন্তু, সেই এনসিটিই রুল মেনে কেন্দ্রীয় হারে বেতনের দেখা নেই। দেশের ১৯ টি রাজ্যে তা চালু হয়ে গেলেও বাংলার শিক্ষকদের কপালে জুটেছে শুধুই বঞ্চনা। নিজেদের ন্যায্য বেতনের দাবিতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বারেবারে দরবার করেছেন উস্থির সদস্যরা, শুকনো প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই জোটে নি। এর আগে যখন দুদিনের ধর্ণা কর্মসূচি করে ঝড় তুলে দিচ্ছেন রাজ্যের শিক্ষকরা, তখন শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে জুটেছে ‘অযোগ্য’ বলে তীব্র অপমান।

আর তাই, এবার আমরণ অনশনে উস্থিয়ানরা। কিন্তু, খোলা আকাশের নীচে, ফুটপাথের উপর শুয়েই আন্দোলনকারীদের জন্য ‘মানবিক’ রাজ্য সরকার পানীয় জলের ব্যবস্থাটুকুও করে নি! রয়েছেন অনেক মহিলা আন্দোলনকারী শিক্ষিকা, তাঁদের প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য ন্যূনতম ব্যবস্থাটুকুও নেই! তার উপরে, শিক্ষকদের এই আন্দোলন নিয়ে ‘আলোচনা’ করতে চাপ আসছিল সিপির কাছ থেকে বলে সূত্রের খবর।

যদিও শিক্ষকরা, চাইছিলেন সরাসরি শিক্ষামন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা, কিন্তু সিপির বারবার ‘আমন্ত্রণে’ সাড়া দিয়ে সন্ধ্যের সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পৌঁছান উস্থির অন্যতম শীর্ষনেতা সন্দীপ ঘোষ। দীর্ঘক্ষণ চলে সেই ‘আলোচনা’ – এই নিয়ে সরকারিভাবে কেউ মুখ খুলতে না চাইলেও সূত্রের খবর, অনশন প্রত্যাহার করতে রীতিমত চাপ আসতে শুরু করে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এই সব খবর পেয়েই এবার আসরে অবতীর্ন হন বিজেপি যুব নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা গতকাল রাত প্রায় ১১ টার সময় তিনি পৌঁছে যান আন্দোলনকারীদের মঞ্চে। আর সেখানে পৌঁছেই একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটান তিনি। সেখানে তিনি স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দেন, উস্থির এই আন্দোলন সম্পূর্ণ মানবিক, বাস্তবসম্মত ও ন্যায্য। শিক্ষামন্ত্রীর অবিলম্বে শিক্ষকদের দাবী মেনে নেওয়া উচিৎ। শিক্ষামন্ত্রীকে ‘অপদার্থ’ বলেও তীব্র কটাক্ষ হানেন তিনি, শিক্ষামন্ত্রীর ‘অপদার্থতার’ জন্যই শিক্ষকদের এই করুন হাল বলেও তোপ দাগেন তিনি।

আর তারপরেই বিস্ফোরকভাবে তিনি দাবি করেন, শিক্ষকরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একটা আন্দোলন করছেন, তাকে অনৈতিকভাবে আটকানোর চেষ্টা চলছে! একটা ‘ফ্যাসিস্ট গভর্নমেন্ট’ চলছে! এ জিনিস চলতে পারে না, এ জিনিস কিছুতেই মানব না। আমরা এখানে কোনো রাজনীতি করতে আসি নি, আমরা শিক্ষকদের এই আন্দোলনকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করে আমাদের সহমর্মিতা দেখতে এসেছি। শিক্ষকদের এই দাবী মেটাতে না পারলে ব্যর্থতার দায় নিয়ে দায়িত্ব ছেড়ে দিন শিক্ষামন্ত্রী। বিজেপি ক্ষমতায় এলে, শিক্ষকদের সব প্রাপ্য মিটিয়ে দেবে।

শঙ্কুদেব পণ্ডা আরও জানান, যেখানে রাজ্যের শিক্ষকরা তাঁদের ন্যায্য বেতন পান না, সেখানে রাজ্যের ভবিষ্যৎটা কি? এরপর তো শিক্ষামন্ত্রী বলবেন দুমাস ছুটি দিচ্ছিলাম, এবার বারো মাসই ছুটি দিচ্ছি! শিক্ষা ব্যবস্থাটাই উনি পুরো ভেঙে দিচ্ছেন! আমরা শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে সম্পূর্ণ সহমত। আমি সকলকে অনুরোধ করব, রঙ-ঝান্ডা সব ভুলে শিক্ষকদের এই আন্দোলনের পাশে এসে দাঁড়ান। প্রাথমিক শিক্ষকরাই তো ভিতটা তৈরী করেন, বাংলার ভবিষ্যৎ তো এনাদেরই হাতে। এঁরাই যদি ন্যায্য বেতন না পান, তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থার কি হবে?

এদিকে সূত্রের খবর, শঙ্কুদেব পণ্ডা উস্থির আন্দোলনের মঞ্চে পৌঁছাতেই, সিপির সঙ্গে সন্দীপবাবুর বৈঠক তড়িঘড়ি সমাপ্ত হয়ে যায়। সন্দীপবাবু অবশেষে অনশন মঞ্চের দিকে ফিরতে শুরু করেন। এই প্রসঙ্গে শঙ্কুদেব পণ্ডার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি শুনেছিলাম সিপি শিক্ষকদের ডেকে নিয়ে গিয়ে আন্দোলন তুলে নেওয়ার ব্যাপারে বলছিলেন। কিন্তু, এইভাবে এই মানবিক আন্দোলন আটকানো উচিৎ নয়, যাবেও না। আমার সব রকমের সমর্থন নিয়ে আমি আন্দোলনকারীদের পাশে আছি। সিপি যদি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক ‘শেষ’ না করতেন, প্রয়োজনে সেখানেও যেতাম।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!