এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > শাসক দলের ছত্রছায়ায় থেকে গর্হিত অপরাধ থেকে নিঃশর্ত মুক্তি ? অভিযোগ এমনটাই,শোরগোল রাজ্যে

শাসক দলের ছত্রছায়ায় থেকে গর্হিত অপরাধ থেকে নিঃশর্ত মুক্তি ? অভিযোগ এমনটাই,শোরগোল রাজ্যে

রাজনৈতিক মঞ্চে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব অনেক ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায়। যেকোনো রকম ঘটনায় ক্ষমতার প্রভাবে আইনের হাত এড়িয়ে যায় ক্ষমতাসীন দল। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে তৃণমূল শাসিত সরকার। আর শাসক সরকারের প্রভাব খাটিয়ে অনেক বড় বড় অপরাধ থেকে গা বাঁচানো যায়।

সেরকমই একটি ঘটনার সাক্ষী রইল পূর্ব বর্ধমান ।  অভিযোগ পূর্ব বর্ধমানের আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি শ্লীলতাহানীর মত গর্হিত অপরাধ করেও আদালতের হাত থেকে নিঃশর্তে মুক্ত হলেন। ঘটনাটি যথেষ্ট লজ্জার বলে দাবি করেছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

পূর্ব বর্ধমানের আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি ইফতিকার আহমেদ ওরফে পাপ্পু সম্প্রতি দোকান ভাঙচুর ও মহিলার শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত হন। বৃহস্পতিবার ইফতিকার আহমেদ নিজেই সিজেএম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর আইনজীবী বিশ্বজিৎ দাস আদালতে বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন তাঁর মক্কেল।

পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেনি। রাজনৈতিক শত্রুতার কারণেই তাঁর মক্কেলকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন আইনজীবী। এরপরে ইফতিকার আহমেদের হয়ে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। অভিযুক্তের আইনজীবী এবং সরকারি আইনজীবী দুইপক্ষের বক্তব্য শুনে এই জামিন মঞ্জুর করেন সিজেএম আদালতের বিচারক।

বিচারক তাঁর নির্দেশিকায় লিখেছেন, অভিযুক্ত ইফতিকার আহমেদ তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেনি। তাই অযথা তাঁকে আটকে রাখার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত 6 ই আগস্ট স্টেশন এলাকায় সকালে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী এলাকায় পৌঁছায়। ওইদিনই বিকেলে তিনকোনিয়া গুডস শেড রোড এলাকায় বিজেপি ও তৃণমূল এর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকেই খোকন সেন নামক জনৈক বিজেপি কর্মী এবং আরো 29 জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে অবশ্য ধৃতরা জামিন পেয়ে যায়। ঘটনার সূত্রপাত, তার আগের রাতের একটি চায়ের দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে হয়।

এই ঘটনার বিষয়ে শহরের মেহেদী বাগানের এক মহিলা জানিয়েছেন, ওই রাতে তিনি তার চায়ের দোকানটিতে দাঁড়িয়েছিলেন যা নিয়ে এই গন্ডগোলের সূত্রপাত। তাঁর স্বামী চা দিতে গিয়েছিলেন। সেই সময় ইফতিকারের নেতৃত্বে 100 দেড়শ জন লোক তার দোকানে হামলা চালাতে আসে।

দোকান খোলা নিয়ে নানান রকম প্রশ্ন করা হয় তাঁকে এবং 10 হাজার টাকা ডোনেশন এর দাবি জানানো হয়। এর প্রতিবাদ করায় তৃণমূল এর লোকজন তাঁর চায়ের দোকান ভাঙচুর শুরু করে। ক্যাশ বাক্স থেকে 3800 টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। সেসময় বাধা দিতে গেলে তাঁর কাপড় টেনে ছিঁড়ে দেওয়া হয়। তাঁকে শ্লীলতাহানি করা হয়। উপরন্তু ঘটনার কথা পুলিশকে না জানানোর জন্য ক্রমাগত চাপ আসতে থাকে। শুধু এখানেই থামেনি। ঘটনার দিন দোকানের ফুটন্ত দুধ তাঁর শরীরে ঢেলে দেওয়া হয়।

শুধু তাই নয়, তাঁর স্বামী ফিরলে রিভলভার দেখিয়ে তাকে ভয় দেখানো হয়। ঘটনার পরদিন তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করে পুলিশ। যদিও অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইফতিকারকে নোটিশ পাঠানো হয়। মঙ্গলবার তিনি তদন্তকারী অফিসারদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসেন এবং জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি চলেও যান।

সম্পূর্ণ ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বিজেপির শিবিরের দাবি, এভাবেই অন্যায় অত্যাচার চালিয়ে শাসক শিবিরের সাহায্যে বিচার ব্যবস্থা থেকে দোষীরা পালিয়ে যাচ্ছে। মুক্তি পাচ্ছে। এতে বিচারব্যবস্থার ওপর সাধারণ জনগণের বিশ্বাস উঠে যাবে।

অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, সত্য ঘটনা যাচাই করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক দোষীকে। যদি রং বিচার না করে শাসন চলে, তাহলে রাজ্যবাসীর মনে বিচারব্যবস্থা নিয়ে আশার আলো জাগবে। এই ঘটনায় আপাতত রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব কোন বিবৃতি প্রকাশ করেনি। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বের তরফ থেকে ঘটনার বিরোধীতায় আন্দোলন চলবে বলে জানা গেছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!