শীর্ষ নেতৃত্ব শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নিলেও ছ’মাস পরে তাঁরা স্বপদে বহাল তৃণমূলের নেতারা, বাড়ছে ক্ষোভ তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য November 21, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কিছুদিন আগে রাজ্যে ভয়াবহ দুর্যোগ এসে উপস্থিত হয়েছিল। আমপান নামক ভয়াবহ ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল বিভিন্ন এলাকা। অনেক মানুষের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যার পরই সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এই ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ তৈরি হয়েছিল গোটা রাজ্য জুড়ে। বিভিন্ন মহলের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করতে ব্যাপক দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণ করা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল পরিচালিত নানা পঞ্চায়েত এবং নানা জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার সাথে সাথেই তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করে তৃণমূল কংগ্রেস। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল, তাদেরকে দল থেকে সাসপেন্ড করার কথা জানানো হয়। সেই মত সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির দলীয় সভাপতি জয়ন্ত ঘোষ এবং জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বেচারাম বসুকে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সমস্ত পদ ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি তাদের সাসপেন্ড করাও হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা খাতায়-কলমে সেই সমস্ত পদে রয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। যার জেরে এখন বিরোধীদের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, আসলে তৃণমূল মুখেই শাস্তির ব্যাপারে কথা বলে। কিন্তু বাস্তবে তাদের নেতারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হলেও, তারা তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। স্বভাবতই এই ঘটনায় এখন ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল মুখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও, কেন এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত নেতারা তাদের পদে বহাল রয়েছেন? বিরোধীদের বক্তব্য, আসলে এই সমস্ত শাস্তিমুলক ব্যবস্থা চোখে ধুলো দেওয়া ছাড়া আর কিছু নয়। ব্যবস্থা নিলে দলের অনেক বড় মাথা জড়িয়ে পড়বে। তাই এটা নিয়ে তৃণমূল নেতারা আর খুব বেশিদূর এগোতে চাননি। এদিন এই প্রসঙ্গে যাদের নিয়ে বিতর্ক, সেই সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জয়ন্ত ঘোষ বলেন, “দলকে চিঠি দিয়ে আমার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। দলের নির্দেশ মতো চলছি।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে জগৎবল্লভপুর পাঁতিহাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বেচারাম বসু বলেন, “কেন পদত্যাগ করিনি, বা কেন কাজ করছি, তা দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। দলের অনুগত সৈনিক হিসেবে সাংবাদিকদের কাছে এসব গোপনীয় ব্যাপারে মুখ খুলব না।” আর এখানেই প্রশ্ন, যেখানে সাধারন মানুষের সাহায্য কৃত অর্থ আত্মসাৎ করার মত বিস্ফোরক অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে উঠেছে, সেখানে তারা কেন মানুষের কাছে এই ব্যাপারে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন না? আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - কেন সবটাই দলের ওপরে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে? তাহলে কি তৃণমূল নেতৃত্ব মুখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও, বিরোধীদের অভিযোগ অনুযায়ী কাজে তারা কোনো পদক্ষেপ করছেন না! এখন তা নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। এদিন এই প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “সিদ্ধান্ত আমার ছিল না। দলের রাজ্য নেতৃত্বে নির্দেশে আমি শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলাম। এখন আমি দলের সভাপতি নই। ফলে এখনকার অবস্থা বলতে পারব না।” এদিকে এই ব্যাপারে হাওড়া জেলা তৃণমূলের বর্তমান সভাপতি লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে ফোন করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই গোটা ঘটনা নিয়ে এখন বিতর্ক চরম আকার নিতে শুরু করেছে। যেখানে তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে এই সমস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল এবং তাদের পদ ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেখানে বহু সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কেন তারা নিজেদের পদে বহাল রয়েছেন! এখন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত বিরোধী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -