শহরে একের পর এক এটিএম জালিয়াতি – কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছেন মমতা কলকাতা রাজ্য December 6, 2019 টাকা তোলার পদ্ধতি হিসাবে অটো ট্রেইলার মেশিন বা এটিএম জনপ্রিয় হয়েছে বহুদিন। এটিএম কার্ড ও পিন ব্যবহার করে গ্রাহকরা টাকা তোলেন। এবার সেই এটিএম প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর দুষ্কৃতীরা জালিয়াতি চালিয়ে যাচ্ছেন কলকাতার বিভিন্ন এলাকায়। গত তিনদিনে এটিএম এর মাধ্যমে গ্রাহকদের একাউন্ট থেকে প্রায় 15 লক্ষ টাকা গায়েব হয়েছে। ঘটনা সামনে আসার সাথে সাথেই নড়েচড়ে বসেছে লালবাজারের গোয়েন্দা দপ্তর। কলকাতা শহরে এই প্রথম এটিএম প্রতারণা নয়, তবে গত কয়েকদিন ধরে বেশ বড় রকমের প্রতারণা চলছে শহরজুড়ে। বেশিরভাগ প্রতারিতরা দাবি করেছেন, তাঁরা কাউকে এটিএম কার্ড বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য দেননি। তা সত্ত্বেও তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা লোপাট হয়ে গেছে। এবার এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের আধার লিংক এর নীতিকেই দোষারোপ করেছেন। এদিন সংহতি দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যের মাঝেই বললেন, আধার লিঙ্ক করার ফলেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় অর্থনীতির বেহাল অবস্থার জন্য এদিন কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন তিনি। একের পর এক বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণের পর আক্রমণ চালিয়ে যান তিনি। প্রথমেই উঠে আসে পিঁয়াজের বর্ধিত দাম, এরপর বেকারত্ব আর তারপরেই প্রসঙ্গক্রমে আসে সাম্প্রতিক এটিএম কেলেঙ্কারির কথা। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি তো আগেই বলেছিলাম, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার লিঙ্ক করলেই সব টাকা তুলে নেবে। সেটাই তো হচ্ছে। দিন এদের টাকা ফেরত দিন।’ এর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে মোবাইল নাম্বারের সাথে আঁধার লিঙ্ক করিয়ে নেওয়ার নির্দেশের সময় নবান্নে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী কার্যত ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, মোবাইল নাম্বারের সাথে তিনি কোনমতেই আধার লিঙ্ক করবেন না। কারণ, তাতে যদি তাঁকে মোবাইল ছেড়ে দিতে হয় তিনি তাও করবেন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - গত 26 সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সাথে আধার নাম্বার যুক্ত করা বাধ্যতামূলক নয়। আর এর পরেই ইতালির মিলানে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর বাইরে চলে গেলে সেখান থেকে কারচুপি করে টাকা তুলে নেওয়া যেতে পারে। এখন তো হরদম এটিএম থেকে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। মোবাইলেও আধার কার্ড ঢোকানো মানে আপনি কাকে মেসেজ করছেন, কার সঙ্গে কথা বলছেন সব তথ্য বাইরে চলে যেতে পারে। তাই আমাদের তরফেও এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টে পিআইএল করা হয়েছিল। আমরা খুব খুশি যে সুপ্রিম কোর্ট মোবাইল ও ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক নয় বলেছে।’ একই কথা মুখ্যমন্ত্রী আবার রিপিট করলেন মেয়ো রোডের সভাতে। এদিকে গত শনিবার থেকে একের পর এক এটিএম থেকে গ্রাহকদের টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ায় শহর জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন, ডেবিট কার্ডের নাম্বার বা কার্ড সংক্রান্ত কোন তথ্য কারো সাথে শেয়ার না করা সত্বেও কিভাবে এটিএম থেকে টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। অন্যদিকে, পুলিশের তথ্যে জানা গেছে একটি বড় স্কিমার চক্র রয়েছে এই জালিয়াতির পেছনে। উল্লেখ্য, গত বছর মে মাসে ঢাকুরিয়া,লেক গার্ডেন্স সহ দক্ষিণ কলকাতার একাধিক এলাকায় এটিএম জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছিল। সে সময় কলকাতা পুলিশ তদন্ত করে রোমানিয়ার একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করেছিল। এতদিন পর্যন্ত ফোন করে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে কার্ড ও অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতিয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নিত প্রতারকরা। কিন্তু এ ব্যাপারে সাধারণ জনতা সাবধান হয়ে যাওয়ায় এবার বিকল্প পথ বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ থেকে। অন্যদিকে, প্রতারিতদের অভিযোগ, ব্যাংকের তরফ থেকে তাঁদেরকে সেভাবে সচেতন করা হচ্ছে না। উল্টে ব্যাংকে গেলে তাঁদের সেভাবে কোন সুপরামর্শ দিতে পারছেন না আধিকারিকরা। অন্যদিকে, রাজ্যের গোয়েন্দা দপ্তর এই ঘটনার কথা সামনে আসার পরেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে ব্যাংকের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। আপাতত সমগ্র বিষয়টির ওপর নজর রাখছেন রাজ্যের প্রশাসনের কর্তারা। আপনার মতামত জানান -