শতবর্ষেও পার্টির জন্মস্থান থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক সব নিয়েও ছাড়ছে না বিতর্ক কলকাতা রাজ্য October 19, 2019 ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি অর্থাৎ সিপিআই বিভাজনের পর ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী উদ্ভব হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বছরগুলোতে অবিভক্ত সিপিআই ছিল একাধিক গণঅভ্যুত্থানের সাক্ষী। ভারতের স্বাধীনতার পর তৎকালীন সরকার কৌশলগত কারণে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে। সোভিয়েত সরকারও চেয়েছিল ভারতের কমিউনিস্টরা ভারত রাষ্ট্রের সমালোচনার ব্যাপারে মধ্যপন্থা অবলম্বন করুক। কংগ্রেস সরকারের সহায়ক মনোভাবাপন্ন হোক। যদিও সিপিআইয়ের এক বিরাট অংশ দাবি করেছিল যে ভারত একটি অর্ধ সামন্ততান্ত্রিক দেশ রয়েছে আর তাই বাণিজ্য বিদেশনীতির শ্রেণীসংগ্রামের গুরুত্ব হ্রাস করা অনুচিত হবে। এরপরে চীন-ভারত বৈদেশিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষ শুরু হয় এবং তা নিয়েই বিরোধিতার মধ্যে দিয়ে কমিউনিস্ট পার্টিও ভাগ হয়ে যায়। স্বাধীনতার প্রাক্কালে কংগ্রেস রাজনীতির বিরোধিতা করেই কমিউনিস্ট পার্টি তৈরি হয়। আর পরবর্তীকালে কংগ্রেসের সঙ্গে কি সম্পর্ক হবে? এই নিয়ে পার্টি ভাগ হয়। আজ কমিউনিস্ট পার্টির জন্ম শতবর্ষ পালনের মধ্য দিয়ে সিপিএমের মুখে কংগ্রেসের হাত ধরার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু শতবর্ষ পার করেও যে নিজেদের মধ্যেই দ্বন্দ্ব মেটেনি তা পরিষ্কার। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির জন্মমুহূর্ত নিয়ে কমিউনিষ্টদের মধ্যেই বিতর্ক আছে। তাসখন্দে না কানপুরে? 1921 না 1925? সিপিএম মনে করে তাসখন্দেই 1902 সালে পার্টির জন্ম হয়। সেই মতো বৃহস্পতিবার আলিমুদ্দিন এর উদ্যোগে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কমিউনিস্ট পার্টির জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠান পালিত হলো। কিন্তু 100 বছর পরেও কংগ্রেস রাজনীতির প্রসঙ্গে পার্টি নীতির অভিমুখ নিয়ে ধন্দ কাটল না। কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েই বারেবারে পার্টি ভাগ অথচ পার্টির জন্মশতবর্ষে কংগ্রেসকে নিয়েই সঙ্গে চলার কথা বলছে সিপিএম। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি জানাচ্ছেন, রাজনীতির মঞ্চে বৃহত্তর জায়গা দরকার। তাই দলে যে আসবেন, তাকেই স্বাগত জানানো হবে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - লোকসভা ভোটের আগেও বামফ্রন্টের শরিকদের মুখে কংগ্রেস নিয়ে নানান বিরোধিতার কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু বিজেপির লোকসভা ভোটে বিপুল জয়ের পর রাজ্যে কার্যত পিছিয়ে রয়েছে সিপিএম। সাথে আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লকও পিছনের সারিতে চলে গেছে। আর তার ফলেই সবার মুখে এখন হাত ধরার বার্তা। সম্প্রতি বিধান ভবন এ গিয়ে চাও খেয়ে এসেছেন নেতারা। বর্তমানে কেন্দ্রে বিজেপি, আর রাজ্যে তৃণমূল। পরিস্থিতি বিচার করে আগেই আলিমুদ্দিনের তরফ থেকে কংগ্রেসের সাথে হাত ধরার কথা বলা হয়। শুরুতে আপত্তি থাকলেও পরবর্তীকালে শরিকরাও অবস্থা বুঝে এই সমীকরণে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু সিপিএম নিজে এখন বুঝেছে অস্তিত্বের লড়াইয়ে টিকে থাকতে গেলে কংগ্রেসকে পাশে দরকার। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটে আসন সমঝোতার পরেও জোট সম্পর্কে বলতে হচ্ছে ঠারেঠোরে। রাজনৈতিক মহল বলছে, কংগ্রেস ও সিপিএম এর সম্পর্ক শত বছরেও ঠিক হলো না। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস সিপিএম জোট লড়েছিল একসাথে। কিন্তু বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, 2019 এর লোকসভা ভোটের পর রাজ্যে বিজেপির রমরমা। এই অবস্থায় সিপিএম যদি কংগ্রেসের হাত না ধরে তাহলে রাজ্য রাজনীতিতে টিকে থাকা মুশকিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আপাতত হাত ও হাতুড়ির সম্পর্ক কোনদিকে গড়ায় তা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সমগ্র রাজনৈতিক মহল। আপনার মতামত জানান -