এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > শাসকদলে শুরু ‘শুদ্ধিকরণ’ – শিল্পশহরে বিদ্রোহী নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের পথে ঘাসফুল শিবির

শাসকদলে শুরু ‘শুদ্ধিকরণ’ – শিল্পশহরে বিদ্রোহী নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের পথে ঘাসফুল শিবির

লোকসভা ভোটকে টার্গেট করে দুর্গাপুরের দলীয় সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে মরিয়া শাসকদল। এবার দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিকে পা বাড়িয়েছে ঘাসফুল শিবির। তৃণমূল সূত্রের খবর, দিনকয়েক আগে পুরভবনের নীচে একটি হল ঘরে দলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন দাসুর প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীন বাবুরাম দাসের নেতৃত্ব কয়েকজন ঢুকে গন্ডোগোল পাকিয়েছিলেন।

পাশাপাশি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজও করা হয় নেতাদের। সেকারণে মূল অভিযুক্ত বাবুরামের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। এবং বাকি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে পুলিশকে। অশান্তি সৃষ্টি করার তালিকায় আরো ১৫ জনও রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।

বিদ্রোহীদের কাছে মাথা নত করতে নারাজ তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বরা এবং যারা দলকে এভাবে লোকসভা ভোটের আগে বিপাকে ফেলেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতেই আসরে নামছে নেতৃত্ব। দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের চিহ্নিত করে তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে বলেও জানা গিয়েছে তৃণমূল সূত্রের খবরে।

এই বিষয়টি সম্প্রতি রাজ্য নেতৃত্বের নজরেও আনা হয়। ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নবান্ন কর্তারা। আগামী দিনে বিদ্রোহীদের এধরনের আচরণের জন্যে কৈফিয়তও দিতে হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। তবে সকলেরই দলের কিছু আইনশৃঙ্খলা মেনে চলা উচিৎ, এমনটাই বললেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি।

প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে দুর্গাপুর পুরসভায় জলদপ্তরের নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানেই স্থানীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন দলীয় জেলা সভাপতি শিবদাসন দাসু। বৈঠক চলাকালীন হঠাৎ করেই তৃণমূলেরই কয়েকজন বিক্ষুব্ধ নেতা ঢুকে দাবী করতে থাকে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের যেসব ঠিকা শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হয়েছে তাদের পুনরায় কাজে নিয়োগ করতে হবে।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

এই দাবীদাওয়াকে সামনে রেখেই অশ্রাব্য গালিগালাজের সঙ্গে দলের জেলা সভাপতিকে হেনস্তা করার অভিযোগও ওঠে বিদ্রোহী নেতাদের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে পড়েন জেলা নেতৃত্ব। কিছুতেই বিদ্রোহীদের কাছে নতি স্বীকার করবেন না এমনটাই স্থির করেছেন তিনি। বরং ওইসব বিদ্রোহী নেতাদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্তে নেমে এক মেয়র পরিষদ সদস্য এবং এক বরো চেয়ারম্যানকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলেই খবর দলীয় সূত্রের। এই দু’জনই কাউন্সিলরদের নিয়ে গন্ডোগোল পাকানোর চেষ্টা করেছেন এমন অভিযোগ রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও জানানো হয়েছে বলেই জানান জেলার অপর এক নেতা। তবে এ অভিযোগ মানতে নারাজ বিদ্রোহী নেতারা।

‘আমরা যা বোঝার বুঝে নেবো’ এমনটাই জানালেন এক বিদ্রোহী নেতা ধর্মেন্দ্র যাদব। অন্য একজন বিদ্রোহী কাউন্সিলরের দাবী,জলদপ্তরে নিয়োগ বেনিয়মভাবে হচ্ছে এটা রাজ্যনেতৃত্বকে তাঁদের তরফ থেকে জানানো হবে। এই অনিয়ম রুখতে আন্দোলন আগামী দিন পর্যন্ত চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন তাঁরা।

উল্লেখ্য, দুর্গাপুর পুরসভার জলদপ্তরের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে তৈরি হওয়া এই জট অবিলম্বে সমাধান না করলে দলীয় অন্দরেই যে বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে তা আগামী দিনে আরো মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে বলেই আশঙ্কা রয়েছে শাসকদলের অভিজ্ঞমহলের। এবং এই ইস্যুর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে দুর্গাপুরের তৃণমূলের সংগঠনে।

বিক্ষুব্ধদের বিরোধীদের দলের দিকে ঝোঁকার সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না কোনোমতেই। এই প্রেক্ষিতে জেলা সংগঠনের পরিকাঠামোর ত্রুটিগুলোর উপসম করতে বিদ্রোহী নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!