প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একসময় তাকে “অগ্নিকন্যা” বলে অভিহিত করতেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তার অনেক পরিবর্তন হয়েছে বলে দাবি করতে দেখা যায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে। সেভাবে তৃণমূলের পক্ষ থেকেও “অগ্নিকন্যা” বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিহিত করতে দেখা যায় না। কিন্তু তিনি যে বরাবর লড়াই করতে পছন্দ করেন, তা নিজের মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে মাঝেমধ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতা দখল করা তার কাজের কার্যত চ্যালেঞ্জ। বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতি মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়ে রাজ্যের ক্ষমতা দখলের ব্যাপারে ব্লু প্রিন্ট তৈরি করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিজেপি নেতারা কার্যত আত্মবিশ্বাসী, তার রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছে।

ইতিমধ্যেই প্ররোচনামূলক মন্তব্য করার কারণে 24 ঘন্টা প্রচার প্রক্রিয়া থেকে বাদ রাখা হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে তিনি যে কোনোভাবেই কোনো কিছুর কাছে মাথানত করতে রাজি নন, তা নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা ওঠার পরেই প্রকাশ্য সভা থেকে জানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। যেখানে বিজেপির পক্ষ থেকে একাধিক এজেন্সি লাগিয়েও তার কিছুই করা যাবে না বলে কার্যত আত্মপ্রত্যয়ী মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সূত্রের খবর, এদিন বারাসাতের সভা থেকে এই ব্যাপারে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে নিজেকে “স্ট্রিট ফাইটার” বলে দাবি করেন তিনি। তৃণমূল নেত্রী বলেন, “আমাকে এত ভয় কিসের? সারাদেশের এজেন্সি নিয়ে নেমেছেন আপনারা। তাও আমাকে এত ভয়? ভারত সরকারের যত এজেন্সি সব বিজেপির কাছে আছে। কিন্তু তাও ওরা হারবে। কারণ আমি স্ট্রিট ফাইটার। আমি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে লড়াই করি।” অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপি এবারের নির্বাচনে পরাজিত হবে।

তবে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর প্রকাশ্য সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই কথা বললেও, তা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে চর্চা। বিরোধীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখন বারবার লড়াকু নেত্রী হিসেবে পরিচয় দিতে হচ্ছে? আসলে তিনি বুঝে গিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে বাংলার ক্ষমতা দখল করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই শেষ মুহূর্তে টিকে থাকতে এই রকম মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছে তাকে। কিন্তু এসব করে লাভের লাভ কিছুই হবে না।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, তৃণমূলের অনেকে রাজ্যের ক্ষমতা দখল করবে কি করবে না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে। তাই শেষ মুহূর্তে দলের অনেক নেতা কর্মীরা যখন সংশয় প্রকাশ করতে শুরু করেছেন রাজ্যে ক্ষমতায় ফেরা নিয়ে, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য সেই সমস্ত নেতাকর্মীদের অনেকটাই উজ্জীবিত করবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।