প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  সাম্প্রতিককালে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি যোগ নিয়ে ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়েছিল। দল এবং সরকারের সঙ্গে দূরত্ব স্থাপন করে নিজের মত করে অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রীকে। যার ফলে সেই শুভেন্দু অধিকারী দল বদল করতে পারেন বলে দাবি করছে বিভিন্ন মহল। এমত পরিস্থিতিতে রাজ্যে আসতে চলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় চাণক্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর তার হাত ধরেই তৃণমূলের বড় কোনো হেভিওয়েট শীর্ষনেতা বিজেপিতে যোগদান করতে পারেন বলে জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছিল।

যেখানে সমালোচক মহলের একাংশের দাবি করেছিলেন, এই তালিকায় শুভেন্দু অধিকারী থাকলেও থাকতে পারেন। যদিও বা শুভেন্দুবাবুর তরফে প্রথম থেকেই সেই সমস্ত সম্ভাবনাকে কার্যত নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছিল। কিছুদিন আগেই এক বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে স্পষ্ট ভাষায় শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দিয়েছিলেন, তার মুখের কথা ছাড়া কেউ যেন কোনো কিছু বিশ্বাস না করেন। পাশাপাশি আগামী 10 নভেম্বর নন্দীগ্রামের সভা থেকে তিনি সমস্ত কিছু স্পষ্ট করে দেবেন বলেও জানিয়েছিলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী।

সাম্প্রতিককালে কলকাতায় এসে সাংবাদিক বৈঠক থেকে জল্পনায় ইতি টেনে দেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী। যেখানে স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়ে দেন,  “তৃণমূলেই আছি।” তবে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে জল্পনা কিন্তু কিছুতেই থামছে না। তবে অবশেষে অমিত শাহের সফরের আগে এই ব্যাপারে মুখ খুললেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “আমাকে কেউ আপনারা আমাদের নেত্রী বা পার্টির বিরুদ্ধে কোনো শব্দ প্রয়োগ করতে দেখেছেন বা শুনেছেন! শোনেননি। যা হচ্ছে এগুলো একশ্রেণীর মিডিয়ার বাজার গরম করা খবর। আমার মুখে যা শুনবেন, সেটা ছাড়া অন্য কিছু সত্যি মনে করার কারণ নেই।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে সাম্প্রতিক কালে জল্পনা চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। পাশাপাশি বিজেপির পক্ষ থেকেও এই ব্যাপারে জল্পনা বাড়িয়ে দাবি করা হয়, অমিত শাহ রাজ্য সফরে আসলে তৃণমূলে বিস্ফোরণ হবে। স্বাভাবিকভাবেই এই ব্যাপারে গুঞ্জন ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছিল। কিন্তু এমত পরিস্থিতিতে জল্পনায় জল ঢেলে দিলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

একাংশ বলছেন, যদি শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদলের মত কোনো সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তা তৃনমূলের কাছে বড় চাপের কারণ হবে। কেননা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর তৃণমূল কংগ্রেসে যার জনপ্রিয়তা সবথেকে বেশি, তার নাম শুভেন্দু অধিকারী। স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান সময়কালে তার নানা আচার-আচরণ এবং মন্তব্য নিঃসন্দেহে শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে অমিত শাহের সফরকালে শুভেন্দু অধিকারীর দলবদল নিয়ে যখন জল্পনা তৈরি হচ্ছে, ঠিক তখনই “নিজের মুখ থেকে কোনো কিছু না বললে কেউ যেন কোন কথা বিশ্বাস না করে” সেকথা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী।

অর্থাৎ নিজের এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন যে, তার মুখ থেকে না শুনে এই সমস্ত জল্পনায় যেন কেউ কান না দেন। আর এখানেই প্রশ্ন, তাহলে কি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে মিটতে শুরু করেছে? আর তাই তার দলবদলের জল্পনাকে কার্যত উড়িয়ে দিলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী! সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।