এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > কংগ্রেস > মুকুলকে দেখে হতাশ বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীরা? পিছু হঠছেন অনেকেই? রাজ্য রাজনীতিতে নতুন জল্পনা!

মুকুলকে দেখে হতাশ বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীরা? পিছু হঠছেন অনেকেই? রাজ্য রাজনীতিতে নতুন জল্পনা!


তৃণমূল ছেড়ে তিনি যখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তখন তৃণমূলের শীর্ষস্তরের নেতারা দাবি করেছিলেন, একটা মুকুল রায় গেলে ২ লক্ষ মুকুল রায় তৈরি হবে। তবে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার পর একের পর এক তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা, বিধায়কদের বিজেপিতে এনে তৃণমূলের সেই বক্তব্যকে কার্যত খণ্ডন করে দিয়েছিলেন। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে কিছুদিন আগে পর্যন্ত মুকুল রায় দাবি করেছিলেন, সময় আসছে। তৃণমূলের অনেক বিধায়ক তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

এমনকি মুকুলবাবুর দাবি ছিল, তারা সকলেই ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেবেন। আর নানা মহলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছিল, লকডাউনের পরবর্তী সময়কালে তৃণমূলের অনেক হেভিওয়েট জনপ্রতিনিধি গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাবেন, আর এটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। তবে তৃণমূলের বিদ্রোহী হয়ে যারা বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে মনস্থির করেছেন, এবার তারাই বিজেপিতে মুকুল রায়ের অবস্থা দেখে আর গেরুয়া শিবিরে পা বাড়াতে চাইছেন না বলে রাজ্য-রাজনীতিতে নতুন জল্পনা।

সকলের মনে একটাই চিন্তা, প্রায় আড়াই বছরের বেশি সময় হয়ে গেল, মুকুল রায়ের মত বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ বিজেপিতে গিয়ে পদ না পেয়ে বসে রয়েছেন। একের পর এক হেভিওয়েট নেতাদের বিজেপিতে আনা থেকে শুরু করে লোকসভায় বিজেপিকে সাফল্য পাইয়ে দেওয়া, সমস্ত কিছুর পেছনে ছিল মুকুল রায়ের মস্তিস্ক – তা কার্যত মান্যতা দিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিজেপি তাকে পদ দেবে দেবে করে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে বসায়নি।

কথা হচ্ছে, তাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় কয়লা মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা জল্পনার পর্যায়ে রয়েছে। জানা যাচ্ছে, একেবারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা চূড়ান্ত সম্প্রসারণের জন্য বর্তমানে মন্ত্রিত্বে কোন রদবদল করা হচ্ছে না। যার ফলে মন্ত্রিত্বের বাসনা পূরণ না হওয়ায় আবার কলকাতায় ফিরে আসছেন মুকুল রায়। আর এসব দেখেই তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়ে থাকা ব্যক্তিরা এবার সময় নিতে চলেছেন। তাদের চিন্তা, যদি বিজেপিতে গিয়েও তাদের বসে থাকতে হয়, তাহলে তৃণমূলে থাকাই ভালো।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সেক্ষেত্রে মুকুলবাবু নিজের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতি-প্রকৃতিতে আরও ভালোভাবে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তুলে ধরে এই সমস্ত তৃণমূলের বিদ্রোহী নেতা কর্মীদের এখন গেরুয়া শিবিরে যোগদান করাতে চাইলেও, পদহীন মুকুল রায়ের অবস্থা দেখে সেই সমস্ত বিদ্রোহী নেতা কর্মীরা বিজেপিতে কতটা পা বাড়াবেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে সংশয়। ফলে, লোকসভার আগে যতটা ভাঙনের ঝড় উঠেছিল, বর্তমানে তা অনেকটাই স্তিমিত বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

এছাড়াও, বর্তমান পরিস্থিতিতে মুকুল রায় যদি সেই সমস্ত তৃণমূলের বিদ্রোহী নেতা কর্মীদের বিজেপিতে না আনতে পারেন, তাহলে গেরুয়া শিবিরে থাকা তার বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতারা তাকে আরও কোণঠাসা করতে তৎপর হবেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু মুকুল রায়ের রাজনৈতিক বিচক্ষণতা সবার থেকে একদমই আলাদা। তাই তিনি কখন কোন ছক কষবেন, তা বলা মুশকিল। ফলে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বঙ্গ রাজনীতির চাণক্যের নতুন ‘মুভ’ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল জল্পনা।

এদিকে, বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীদের এই মানসিক দোলচাল স্পষ্ট হয়ে গেছে, যখন এই নিয়ে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আব্দুল মান্নান চিঠি লিখেছেন স্বয়ং সোনিয়া গান্ধীকে। তিনি সেই চিঠিতে স্পষ্ট লিখেছেন, তৃণমূলের একটা বড় অংশ বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপি বা তৃণমূল থেকে সম দূরত্ব রেখে নতুন একটি দল করার ভাবনায় আছে। এই পরিস্থিতিতে যদি বামফ্রন্ট-কংগ্রেসের জোটের সঙ্গে এই বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীদের এক ছাতার তলায় আনা যায় – তাহলে একদিকে যেমন বিজেপিকেও আটকানো যাবে।

মান্নান সাহেব জানিয়েছেন, এই মহাজোট সম্ভব হলে, অন্যদিকে তেমনই তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে সরানো যাবে। সব মিলিয়ে মুকুল রায়ের বিজেপিতে অবস্থান দেখে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীদের এখন নতুন করে ভাবনা চিন্তা করতে হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে কি সত্যিই নতুন মোড় নেবে বঙ্গ রাজনীতি? নাকি মুকুল রায় আবারো গেরুয়া শিবিরের হয়ে কামাল দেখবেন? নাকি এই সব জল্পনাকে গঙ্গায় ভাসিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবারো ক্ষমতার শীর্ষে থাকবেন? সেই দিকেই আপাতত নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!