সোনার হরিণ চাই – ( লাভ স্টোরি ) – পর্ব -২ – কলমে – অপরাজিতা অন্যান্য গল্পে-আড্ডায় June 13, 2020 একটু নড়ে উঠলো চন্দ্রেয়ী, হুঁশ ফিরলো ওর। প্রদীপ্তা বৌদি, ছোট পিসির ছেলের বৌ। সেই থেকে ডাকছি সাড়াই নেই , এখন থেকেই বরের কথা এত ভাবলে হবে ? হালকা মাথা নাড়লো চন্দ্রেয়ী। কথা বলতে হলো না। সেজমাসি মিষ্টির থালা নিয়ে এসে তাকে খেতে দিলো। ছোট পিসি তোমাদের আক্কেল হবে না, এতটা রাস্তা ওই মোটর সাইকেলে এলে? প্রদীপ্ত বৌদি – আমি কি করবো? আপনার ছেলেকে বলুন, তার তো ওই বাইকটা প্রাণ, সে ওটা ছাড়া কোথাও যায়? ছোট পিসি – হ্যাঁ , তুমি তো কিছুই জানো না, যেদিন একটা বিপদ হবে বুঝবে। গজগজ করে চলে গেলো। সুব্রতদা অনেক শখ করে রয়েল এন্ডফিল কিনেছিলো, বাড়িতে রীতিমতো ঝগড়া করে, চন্দ্রেয়ীদের মতো মাধবিত্ত বাড়িতে ২-৩ লক্ষ টাকা দিয়ে একটা বাইক কেনা মানে লাক্সারি। একটা ছোট খাটো গাড়ি হয়ে যাবে। চন্দ্রেয়ী এর আগে জানতোই না যে এতো টাকার বাইকও হয়। পার্লারের দিদি – চোখটা একটু বন্ধ করো। চোখ বুঝলো চন্দ্রেয়ী। মনে পড়লো – সেদিন যখন চন্দ্রেয়ীকে সন বলেছিলো – সন – বয়ফ্রেইন্ড আছে? চন্দ্রেয়ী একটু বিরক্ত হয়ে জিগেস করেছিল – কেন? সন বলেছিলো – আমি ফ্রি আছি, একটু টাইম পাস করতাম। চন্দ্রেয়ী বিস্মিত হয়ে জোরে বলেছিলো – কি? সন – কিছুই না, টাইম পাস, মানে ধরো আমার টাইগার এ তুমি আর আমি, একটু বেরোতাম,তারপর একটু গল্প,আড্ডা খাওয়াদাওয়া, আর চন্দ্রেয়ী – টাইগার ? সন – রয়েল এন্ডফিল। রয়েল আর যেহেতু এটা বেঙ্গল তাই আমার জানের নাম টাইগার। আর কোনো কথা বলেনি, ভাব দেখেই বুঝেছে বড়লোক বাবার বখাটে ছেলে, টাকা পয়সার ভাবনা নেই। শুধু মেয়েদের ঝাড়ি মারা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - উঠে চলে যাচ্ছিলো চন্দ্রেয়ী। হঠাৎ শাড়ীতে টান পড়লো পিনআপের জায়গাটা ছিড়েছে। ঘুরে দেখলো সন শাড়ীটা টেনে ধরেছে। সন – যাচ্ছ কেন? উত্তর দিয়ে তো ……………………..( ঘুরে রেগে দেখছে চাদ্রেয়ী, সন এবার দেখেছে শাড়ী ছিড়েছে তাই কথা বলতে গিয়ে থেমেছে ) সরি। বলে ছেড়ে দিলো হাতটা। চৈতালিদিকে বলে চলে এসেছে মেসে। এসেই সংযুক্তাকে সব বলেছে, যতটা গালাগালি দেওয়া যায় দিয়েছে। এমন করেই দিনগুলো কাটছিলো। সন একের পর এক ঝাড়ি মেরে যায়, চন্দ্রেয়ী বুঝিয়ে দেয় সে একেবারে পছন্দ করে না সনকে তবুও সে ছেলের কোনো হেলদোল নেই। পরের সপ্তাহে যেদিন চৈতালিদির বাড়ি গেছে বাস থেকে নেমে কিছুটা যাবার পরেই একটা বাইকের আওয়াজ পেয়েছে, আওয়াজটা চেনে এমনি বাইকের মতো নয়, কান ঝালাপালা ধরে যায়। হটাৎ পশে এসে দাঁড়ালো। চন্দ্রেয়ী তাকাতেই সন কোনো কথা না বলে ইশারায় পিছনে বসতে বললো। অদ্ভুত একটা। ঠাস করে একটা চড় মারতে হয়। আজ সালোয়ার পড়েছে, আজ যদি সালোয়ার বা ওড়না ধরে টানে ওকে সবার সামনে মারবে চন্দ্রেয়ী। পাস্ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলো ফের হর্ন। চন্দ্রেয়ী – আমি হেঁটে যেতে পারবো। সন – ওকে কিন্তু ওকে বললেই যতটা আস্তে যাওয়া যায় ঠিক ততটা আস্তে বাইক চালাচ্ছে সন, চন্দ্রেয়ীর পিছনে পিছনে। দাঁড়ালো চন্দ্রেয়ী – তুমি যাবে ? সন – আমার বাইক, রাস্তা সরকারের আমি যেমন খুশি যেতে পারি। আর কথা বলেনি তাড়াতাড়ি হাঁটছে, খুব ভালো করে বুঝছে ওদিকে বাইকের গতি বেড়েছে। প্রায় রোজ একবার করে সন অফার কর , এই বেড়াতে যাবার কিন্তু চন্দ্রেয়ী পাত্তা দে না। স্পষ্ট না করে দেয়। দুজনের মাঝে বসে যাতে সন ওর ধরে কাছে বসতে না পারে। রিহার্সাল শেষ হলেই পালায়। ওই ছেলেটাকে দেখলেই মাথা গরম হয়ে যায় , বাকিরা ওকে নিয়ে বড্ডো নাচে , এত নাচার কি আছে বোঝে না চন্দ্রেয়ী। শুধু দুঃখ একটাই এই কার্টুনটাকে এখন সহ্য করতে হবে। অবশ্য শুধু এরাই নয়, এর কাণ্ডকারখানার রীতিমতো ইন্টারেস্টেড সংযুক্তা। সে খোঁচায় চন্দ্রেয়ীকে আর সেসব শুনে হেসে লুটোপুটি খায়. আবার একধাপ এগিয়ে সংযুক্তার বক্তব্য হলো – ছেলেটা ভালো সে নাকি চন্দ্রেয়ীর প্রেমে পড়েছে তাই এমন করছে। সংযুক্তার এক্সপেরিয়েন্স আছে তাই সে বোঝে। যতসব। এরপর শনিবার চন্দ্রেয়ী আর সংযুক্তা এসপ্ল্যানেড গেছে , ওখানের ফুটের দোকান থেকে জাঙ্ক জুয়েলারি নেবে। সংযুক্তা তারপর ওর বয়ফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করে রাত্রে ফিরবে আর চন্দ্রেয়ী চৈতালিদির বাড়ি যাবে। টাকা দিতে যাবে দোকানদারকে , হঠাৎ – আমার জন্য ওয়েট করছো? গলা চিনতে ভুল হয়নি। হাতে টাকা ধরে রইলো। সন – হুম, দেখলাম আমার জন্য দাঁড়িয়ে আছো, তাই দাঁড়ালাম। চন্দ্রেয়ী – একদম , সন – ওয়েট ( সংযুক্তার দিকে তাকিয়ে ) হাই , ইউ আর সো বিউটিফুল। সংযুক্তা ভীষণ স্পর্টিংলি নেয় এইসব। হেসে হাত বাড়িয়ে – হাই, সংযুক্তা। সন – সন, বাই থা ওয়ে লোকে আমাকে পৃথ্বীরাজ ও বলে সংযুক্তা হা হা করে হেসে উঠলো। গুড অবাক লাগছে চন্দ্রেয়ী – সিরিয়াসলি লোকে এমন ও হয়। সন – বয়ফ্রেন্ড আছে ? সংযুক্তা – ইয়েস সন – ওকে, টাইম পাস করা যায়? চন্দ্র্রেয়ী – অবাক বিস্বয়ে ভাবছে – এ কি? পাগল নাকি। … সংযুক্তা – ওকে , নো প্রব্লেম , সন – তাহলে চলো ঘুরে আসি, সংযুক্তা – ওকে , নো প্রব্লেম , সন – চন্দ্রেয়ীর দিকে তাকিয়ে – যাবে ? পিছনে আর একজনের হবে। চন্দ্রেয়ী – না। সন – পরে কিন্তু রাগ করো না, আমি তোমাকে অফার করেছিলাম, তুমি রাজি হওনি। এরপর দুজনে বাইক করে চলে যায় চন্দ্রেয়ীর নাকের ডগা দিয়ে। দোকানদার বেচারা এইসবের ফাঁকে টাকা তখন হাতে পায়নি। দিদি টাকাটা ? চন্দ্রেয়ী টাকাটা দোকানদারের হাতে দিয়ে বাস ধরে, রাস্তায় দেখেছে দুজনে ফুটের চাটের দোখান থেকে হাসতে হাসতে চাট খাচ্ছে। সত্যি এইরকম হয়, সংযুক্তার বয়ফ্রেইন্ড আছে তারপরেও এই ছেলেটাকে কি দেখে ? চৈতালিদির বাড়িতে তারপর রিহার্সালে সংযুক্তার সাথে কেমন কাটলো , সংযুক্তার ঢালাও প্রসংসা করেছে সন চন্দ্রেয়ীর কাছে , সাথেই বলেছে চন্দ্রেয়ী যেন রাগ না করে। ওদিকে সংযুক্তাও সন এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ওরা নাকি শুধু বন্ধু। মানে যা হলো এবার রোজ রোজ ওই মাতালটার গল্প শোনো। …………………………….. সোনার হরিণ চাই – ( লাভ স্টোরি ) – পর্ব -৩ – কলমে – অপরাজিতা আপনার মতামত জানান -