এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > সোনার হরিণ চাই – ( লাভ স্টোরি ) – পর্ব –11, কলমে – অপরাজিতা

সোনার হরিণ চাই – ( লাভ স্টোরি ) – পর্ব –11, কলমে – অপরাজিতা


এয়ারপোর্টে নিতে এসেছিলো ভাই আর এক দাদা। বার বার পিছনে দেখেছে চন্দ্রেয়ী, একটু দূরে দাঁড়িয়েছিল ঈশান , ওর চোখ দুটো অনেক কিছু বলতে চাইছিলো , আটকাতে চাইছিলো চন্দ্রেয়ীকে। না থামেনি চন্দ্রেয়ী চলে এসেছিলো বাড়ি। গাড়িতে আসতে আসতে অনেকবার মনে হয়েছে ঈশান কি সত্যিই ভালোবাসে চন্দ্রেয়ীকে, নাকি মজা করছে , ওর মুখ দেখে বুঝতে পারে না চন্দ্রেয়ী, শুধু চোখ দুটো অনেক কথা বলে। সংযুক্তার সাথে সত্যি সম্পর্ক আছে নাকি চন্দ্রেয়ীকে রাগানোর জন্য ? উত্তর মেলেনি।

আর ২ সপ্তাহ আছে বিয়ের। কেনাকাটা সবই হয়ে গেছে, চন্দ্রেয়ী কিছুতে এই বিয়ে করবে না। বিয়ের দিন সন্ধেতে সবার সামনে বলবে ও বিয়ে করবে না। কেন সেটাও বলবে। এত লোকের সামনে কি করবে, শুধু তার আগে বাবাকে যদি রাজি করানো যায়। নাহলে পালতে হবে, চৈতালিদি বলেছে ওর কাছে থাকা যাবে কিন্তু চন্দ্রেয়ী চায় না এইসব। সংযুক্তাও মাথা খাচ্ছে পালা পালা। তার খবর নেই। কি করছে কে জানে ? কি আবার করবে? ছন্নছাড়া একটা, বেরিয়ে পড়েছে ঘুরতে? আচ্ছা যদি ওর সাথে সত্যি চলে যায় চন্দ্রেয়ী, খুব খারাপ হবে। এই সব চিন্তা ভাবনার মাঝেই কানে এল একটা খবর।

রবিবার ছেলের বাড়ি থেকে আশীর্বাদ করতে আসবে আর রেজিস্টার আসবে রেজিস্ট্রিও হয়ে যাবে এবার? রেজিস্ট্রি হয়ে গেলে কি করবে চন্দ্রেয়ী?অনেক ভেবে চৈতালিদিকে কল করেছিল চন্দ্রেয়ী। যেমন প্ল্যান ছিল কেউ জানবে না ঈশান আসবে ওকে নিয়ে যাবে সেই মতোই ঈশানের সঙ্গে রাতের অন্ধকারে ঘর ছেড়েছিলো চন্দ্রেয়ী।

বিশ্বাস হচ্ছিলো না চন্দ্রেয়ীর, ঈশান এর সাথে তার বাইকের পিছনে তার সাথে পালাচ্ছে, জানে না এরপর কি? ঠিক করছে না ভুল করছে। চৈতালিদির বাড়িতেই উঠেছিল চন্দ্রেয়ী। এই প্রথম ঈশান আর বাড়ি ফেরেনি, চৈতালিদির বাড়িতেই রাতে থেকে গিয়েছিলো। পরের দিন চৈতালিদির বাড়িতে ফোন এসেছিলো চন্দ্রেয়ীর বাড়িথেকে। চৈতালিদি আমরা কিছু জানিনা বলে দায় ঝেড়েছিলো।

রান্নার মাসিকে ছুটি দিয়েছিলো চৈতালিদি, বলা যায় না কোথায় কি ফাঁস করে দেবে, চৈতালিদি, ঈশান, চৈতালিদির হাসব্যান্ড আশীষদা, আর সংযুক্ত ছাড়া কেউ জানতো না চন্দ্রেয়ী কোথায় আছে। চন্দ্রেয়ী রান্না করেছিল। মনে আছে মুগের ডাল আর পোস্ত , যেন স্বর্গ পেয়েছে হাতে ,খুব তৃপ্তি করে খেয়েছিলো ঈশান। চৈতালিদি ঈশানকে বলেছিলো – থাক এখানে রোজ খাবি, আশ্চর্য, রাজি হয়েছিল ঈশান।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সন্ধ্যেতে সংযুক্তা খবর দিয়েছিলো ওদের মেসে গেছে চন্দ্রেয়ীর মা, ভাই, আর ওর কোনো এক মামা যে পুলিশ। বোধ হয় চৈতালীদিদের বাড়িও যাবে, উপায় নেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও চন্দ্রেয়ীকে ঈশানের সঙ্গে ওর ফ্ল্যাটে চলে আসতে হয়েছিল।

ফ্ল্যাটটা অনেক বড়, কিন্তু ভাগাড় না হলেও অগোছালো , চৈতালিদি ঠিকিই বলেছিলো ওর বাড়িতে যে কাজ করে সে শুধু টাকা চেনে, কাজ কিছু করে না। বাড়িটার অবস্থা দেখলেই বোঝা যায়। অন্য একটা ঘরে থাকছিল চন্দ্রেয়ী। বাইরে থেকে খবর অর্ডার করেছিল ঈশান। খেয়ে বাকি খাবার ফ্রিজ খুলে রাখতে গিয়ে বিয়ারের বোতল দেখে ভয় হয়েছিল চন্দ্রেয়ীর। রাত্রে ঘুম হয়নি, বার বার দেখেছে দরজা ঠিক করে লাগিয়েছে তো। যাকে নিয়ে ভয় সে মনের সুখে ঘুমিয়েছে।

পরের দিনও চন্দ্রেয়ীই রান্না করেছে ,কেননা ওর কাজের দিদি শুধু ডাল আর আলভাজা, ডিমভাজা ছাড়া কিছুই করে না। ঈশান অর্ধেকদিন নাকি বাইরে থেকে তাই খাবার অর্ডার করে। সত্যি ছন্নছাড়া। ওকে রাখা কেন? ওই দিদি নাকি বলে আমি তোমার মায়ের মতো তাই তাকে ছাড়াবে না।

কিছু কাজ ছিল না চন্দ্রেয়ীর, বাড়িটাকে পরিষ্কার করেছে , ঈশানের ঘরটাও ঈশানও হাত লাগিয়েছে। খুব খুশি ছিল ঈশান ,দুজনে অনেক গল্পও করেছে। ঈশানের মাকে দেখেছে চন্দ্রেয়ী সাক্ষাৎ মা লক্ষী, কি সুন্দর দেখতে। বাবার কোনো পিকচার নেই। ঈশানের ছোটবেলার ছবি,ও দেখেছে। এলবাম দেখেছে সেখানে বাবার ছবিতে কালো কালী দিয়ে ঢাকা। ওর একেবারে পুচকে বেলার ছবিতে যেখানে কিছু পরে নাই সেগুলো লাল নীল নানা কালিতে প্যান্ট পড়ানো। খুব হেসেছিলো চন্দ্রেয়ী। ওর পক্ষেই সম্ভব। কোথায় যেন খারাপলাগাগুলো কেটে গেছে। ভালো লাগছে চন্দ্রেয়ীর।

পরের দিন রাত্রে চন্দ্রেয়ী শুয়ে পড়েছিল কানে এলো ঈশান গিটার বাজাচ্ছে, ওর ঘরের ব্যালকনিতে বসে “আমার পরান যাহা চায় ” চন্দ্রেয়ী আর ঈশান বারান্দাটা খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে। ঈশানের খুব পছন্দ হয়েছে। চন্দ্রেয়ী ঘরে গেলো, সেখান থেকে বারান্দায়। আড়ালে দাঁড়িয়ে শুনছিলো ঈশান দেখে ফেলায় চলে যাচ্ছিলো। ঈশান ডাকলো। দুজনে বসে অনেক গল্প করেছে। এই ঈশান আর সেই ঈশান অনেক পার্থক্য, নাকি ঈশান যেমনি হোক চন্দ্রেয়ীর সব কিছুই ভালো লাগছে বুঝতে পারে নি। ঈশান সেদিন ওর মায়ের সাথে কাটানো অনেক মুহূর্ত অনেক কথা বলেছে চন্দ্রেয়ীকে।

 

হটাৎ চাদ্রেয়ীর হাতটা ধরে ঈশান কিছু বলতে গেলো। চন্দ্রেয়ী আজ চাইছে শুনতে , ঈশানের চোখে পড়েছে চন্দ্রেয়ী,ঈশান ওকে ভালোবাসে। কিন্তু বলা হলো না সংযুক্তা কল করেছে, ঈশান কেটে দিলো। ফের কল করছে সংযুক্তা,

তোমরা কথা বলো – চন্দ্রেয়ী উঠে পড়লো।

ঈশান – আরে কিছু না তুমি বস

চন্দ্রেয়ী – অনেক রাত হয়েছে ,কাল কথা বলছি

আজ প্রথমবার সংযুক্তার ফোন দেখে খুব খারাপ লাগছে চন্দ্রেয়ীর। খুব কষ্ট হচ্ছে, সত্যিই ওরা বন্ধু নাকি অন্য কিছু ,ভালো লাগছে না। আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়েছে চন্দ্রেয়ী। ঘুম আসেনি চোখ ভর্তি করে জল এসেছে। এই দুদিনে যেন আরও বেশি করে জড়িয়ে গেছে চন্দ্রেয়ী। ঈশানের সাথে ঈশানের ছেলেমানুষীতে মিশে গেছে।

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!