এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > সোনার হরিণ চাই – ( লাভ স্টোরি ) – পর্ব –12, কলমে – অপরাজিতা

সোনার হরিণ চাই – ( লাভ স্টোরি ) – পর্ব –12, কলমে – অপরাজিতা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া  –পরের দিন সকালে ঈশান কোথায় একটা বেরোচ্ছিল, একটা ব্লু শার্ট আর জিন্স, বেশ লাগছিলো ওকে। যাবার সময় শুধু বলেছিলো – একটা সারপ্রাইস দেব বাড়ি এসে। তখন বোঝেনি চন্দ্রেয়ী কি সারপ্রাইস।

চন্দ্রেয়ীর ফোনটা অফ করা আছে তাই ঈশান নিজের অন্য একটা সিম কার্ড ইউজ করতে দিয়েছিলো চন্দ্রেয়ীকে, নিতে চায়নি চন্দ্রেয়ী। কিন্তু জোরাজুরিতে রাজি হয়। বেলার দিকে ওর ফোনে একটা ফোন এসেছিলো সংযুক্তা কল করেছিল ওকে। যা বলেছিলো তা শুনে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি ও, বসে পড়েছিল চন্দ্রেয়ী। মুখে বলেছিলো কংগ্রাচুলেশন। ভালো থাকিস তোরা।

সংযুক্ত বলছিলো – আজ ও আর ওর পৃথ্বীরাজ বিয়ে করেছে বাড়িতে লুকিয়ে , কেন কি সেসব কিছু বলেনি। এটাই তবে সারপ্রাইস , এক মুহূর্তের জন্য চারিদিকটা অন্ধকার হয়ে গিয়েছিলো চন্দ্রেয়ীর। ব্যাগ গুছিয়ে, সিম আর একটা চিঠি লিখে বাড়ির চাবিটা কাজের দিদিকে দিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছিলো।চৈতালীদিকেও ফোন করে বলেছিলো ওর মায়ের শরীর খারাপ।

চিঠিতে লিখেছিলো তুমি আর সংযুক্তা ভালো থেকো, মায়ের খুব শরীর খারাপ আমাকে ফিরতে হবে। জানিনা আর কোনোদিন দেখা হবে কিনা, তাই আজ বলছি সব কিছুর জন্য থাঙ্কস।

বাড়িতে ঢোকার পর আর কোনো কথা বলেনি, বাবা , মা বাড়ির লোক অনেক কথা বলেছে, মা গায়ে হাত তুলেছে যা মুখে এসেছে তাই বলেছে , কিছুই মনে হয়নি চন্দ্রেয়ীর এটা হবে জানতো ও। তারপর থেকে আর ফোন ও করেনি, সংযুক্তা ভাইকে কল করেছিল কিন্তু চন্দ্রেয়ী তেমন কথা বলেনি। শুধু বলেছিলো তোরা ভালো থাকিস, কিছু বলতে চেয়েছিলো সংযুক্তা, শোনেনি বলেছিলো তুই আর তোর পৃথ্বীরাজ পারলে আসবি বিয়েতে।

অনেক কথা মনে হয়েছে ওর, মনে হয়েছে চন্দ্রেয়ী কি সত্যি ভুল দেখেছিলো ঈশানের চোখে, হয়তো নাহলে কেন ঈশান সংযুক্তাকে বিয়ে করবে, আচ্ছা সংযুক্তা কি চন্দ্রেয়ী ঈশানের সাথে আছে বলেই বিয়ে করলো, মনে পড়লো একসময় ও ইন্দ্রকে পৃথ্বীরাজ বলতো আজ ঈশানকে বলে। বলতো ও ইন্দ্রকে ছাড়া বাঁচবে না, সে তো দিব্বি ভুলে গিয়ে ঈশানকে বিয়ে করলো। তবে চন্দ্রেয়ীও পারবে ঈশানকে ভুলে যেতে , যদি না পারে অপূর্বর সাথে থাকতে তাহলে মরে যাবে, কত লোক তো মরে যায়, চন্দ্রেয়ীও যাবে। ঈশানের কষ্ট হবে শুনে, জানবে কি করে ?মা কাঁদবে? ভাই? জানেন হয়তো কাঁদবে। বাবা কাঁদবে জানে চন্দ্রেয়ী।

আবার ? কাঁদছো ? ধমকে হুশ ফিরলো চন্দ্রেয়ীর। পার্লারের দিদি , অনেক কষ্ট করে সাজিয়েছি প্লিজ খারাপ করো না, তোমার আর কি? তুমি তো বিয়ে করে পগার পার। লোকে বলবে পার্লারের দিদি খারাপ সাজাতে পারেনা , আমার আর কাস্টমার জুটবে না।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

মাথা নাড়লো চন্দ্রেয়ী, একবার আয়নায় দেখলো ভালো লাগছে। তাতে কি সকলে গায়ে হলুদ দিতে এসেও অপূর্বর বাড়ির লোক শুনিয়েছে অপূর্বর পছন্দ তাই নাহলে আমাদের খুব একটা পছন্দ ছিল না। কিছু মনে হয়নি চন্দ্রেয়ীর। কিছুই গায়ে লাগছে না ওর। ফিরে আসার পর থেকে মা ও তো যা খুশি তাই বলছে, পাপ বিদেয় হলে বাঁচি, হয়ে মরলে এত কষ্ট করতে হতো না। মাকে কিছু বলেনি মনে মনে বলেছে – খুব বেশিদিন নয় মা, আপদ বিদেয় হবে, তোমাদের জীবন থেকে, অপূর্বদের জীবন থেকে, আর ঈশানের জীবন থেকে। কাউকে দায়ী করবে না ও অপূর্বকেও না।

পার্লারের দিদি গয়না পড়াচ্ছিল, খুব চেনা গলা পেয়ে চন্দ্রেয়ীর বুকের ভেতরটা ধক করে উঠলো , সংযুক্তার গলা। ও সত্যি এসেছে। ঈশান এসেছে ওর সাথে ? কি দেখতে এসেছে ? একটা বড় ট্রলি ব্যাগ নিয়ে এসেছে ও। যেন অনেক কদিন থাকবে। ঈশানের সাথে থেকে ও ওর মতো হয়ে গেলো?

সংযুক্তা – দেখি দেখি , কি সুন্দর লাগছে , কি সুন্দর সাজিয়েছ দিদি। আমাকেও একটু সাজিয়ে দিও।

পার্লারের দিদি – থ্যাংক ইউ গো , কিন্তু মেয়ে তো মুখ গোমড়া করে আছে।

সংযুক্তা – হাসবে হাসবে, মনের মানুষের দেখা পেলেই হাসবে।

চন্দ্রেয়ী একটু হাসলো , মনে মনে বললো সব জেনেও তুইও

পার্লারের দিদি – কিন্তু বর এই মুখ দেখলে তো কাঁদবে

সংযুক্তা – সে তো কাঁদছেই কদিন ধরে

পার্লারের দিদি – সে কাঁদছে কেন?

সংযুক্তা – বা রে এতদিন দেখেনি কাঁদবে না , ভয় নেই যদি চন্দ্রেয়ী অন্য কাউকে বিয়ে করে নেয়।

পার্লারের দিদি – হাসতে লাগলো।

চন্দ্রেয়ী – কার সাথে এলি? জানে উত্তর টা তবুও।

সংযুক্তা – কার আবার আমার পৃথ্বীরাজের সাথে।

একটু হাসলো চন্দ্রেয়ী।

ঘরে এলো ছোট পিসি , মিষ্টি জল নিয়ে,

ছোট পিসি – এত বড় ট্রলিবাগ?

সংযুক্তা – হ্যাঁ , ছোটটা আনছিলাম হ্যান্ডেলটা ছিঁড়ে গেলো,

সত্যি বলছে না মিথ্যা জানে না চন্দ্রেয়ী, সংযুক্তা স্মার্টলি মিথ্যা কথা বলে, আচ্ছা আচ্ছা লোক বুঝতে পারে না, তাই চন্দ্রেয়ীর পক্ষেও বোঝা সম্ভব নয়।
গয়না পড়ানো হলে চন্দ্রেয়ীর একটা পিকচার তুললো সংযুক্তা ।

পার্লারের দিদি একটু বসতেই সংযুক্তা চন্দ্রেয়ীকে কি সুন্দর লাগছে তোকে, সে দেখলে অজ্ঞান হয়ে যাবে, সিরিয়াসলি – বলেই জড়িয়ে ধরলো।

চন্দ্রেয়ীর কানে কানে খুব আস্তে আস্তে বললো – ঈশান দা তোর জন্য গাড়ি নিয়ে ওয়েট করছে সেদিন যেখানে দাঁড়িয়েছিল সেখানেই, আমাকে বলতে বললো – ওখানেই কাল সকাল পর্যন্ত ওয়েট করবে।

পার্লারের দিদি – আরে ছাড়ো, এখনো একটু বাকি আছে।
চন্দ্রেয়ী ঠিক শুনলো, কি বলছে সংযুক্তা, ঈশান দা? গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে?
কাকে বিয়ে করেছে সংযুক্তা?

সংযুক্তার মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে চন্দ্রেয়ী, সংযুক্তা চোখে কথা বলে বোঝাতে চাইছে।

পার্লারের দিদি – এত বন্ধুর জন্য কষ্ট ,তো এত দেরি করলে কেন?

সংযুক্তা – আর বোলো না , আমি তো অনেক আগেই আসতাম। কিন্তু প্রব্লেম হলো রাস্তায় ঈশান দার সাথে দেখা হয়ে গেলো ,তুই চিনিস তো ঈশান দা কে , আমার এক্স বয়ফ্রেইন্ড বলে হা হা করে হাসতে লাগল।

পার্লারের দিদি – এক্স বয়ফ্রেইন্ডকে দাদা বানিয়ে ফেললে।

 

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!