এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > অপরাজিতা > সোনার হরিণ চাই – ( লাভ স্টোরি ) – পর্ব –14, কলমে – অপরাজিতা

সোনার হরিণ চাই – ( লাভ স্টোরি ) – পর্ব –14, কলমে – অপরাজিতা


চন্দ্রেয়ী এইরকম ভুল করিস না, তুই তো বলেছিলি যে ওই রকম একটা গাধাকে বিয়ে করবি না , তো ? পালা চন্দ্রেয়ী , ঈশান দা তোর জন্য ওয়েট করছে , আজ না গেলে সারাজীবন তুই পস্তাবি – এক নিঃশ্বাসে বলে গেলো সংযুক্তা

চন্দ্রেয়ী – সে নিজে মুখে বলুক তারপর ভাববো।

সংযুক্তা – ওকে,

সংযুক্তা কল করলো ঈশান কে।

ঈশান এইসব ভাবছিলো তার মাঝেই ম্যাসেজ এর আওয়াজ পেলো।
ফোন খুলে দেখলো সংযুক্ত হোয়াটস্যাপ একিছু পিকচার পাঠিয়েছে , খুলে দেখলো চন্দ্রেয়ীর ফটো , আজকের। একটা হাফ সাজানো ,আর একটা পুরো কনের সাজে , ভীষণ সুন্দর লাগছে ওকে। আজ চন্দ্রেয়ীকে ঠিক তেমনটাই লাগছিলো যেমনটা ওকে ঈশান দেখতে চেয়েছিলো , খুব সুন্দর। এইসব ভাবতে ভাবতেই সংযুক্তার কল এসেছে।

ভিডিও কল করেছে সংযুক্তা দেখা যাচ্ছে ওকে। দাড়াও এই নে কথা বল।

চন্দ্রেয়ী দেখলো ঈশানকে , মুখ চোখ শুকনো। একরাশ চিন্তা চলছে মুখ দেখলেই বোঝা যাচ্ছে।

ঈশান – আমি ওয়েট করছি চাঁদ, প্লিজ, অনেকবার বলতে চেয়েছি, প্লিজ বিয়েটা করোনা , প্লিজ। তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। তুমি আমার সোনার হরিণ চাঁদ।অনেকবার বলতে চেয়েছি চন্দ্রেয়ী কিন্তু বলতে পারিনি প্লিজ বাঁচবো না তোমাকে ছাড়া।

দরজায় ডাক পড়লো। চন্দ্রেয়ী ফোনটা কেটে দিলো।

সংযুক্তা – কিছু তো বল।

চন্দ্রেয়ী – আমাকে বাইরে ডাকছে।

বাইরে গেলো চন্দ্রেয়ী , ঈশান জানে না সত্যি আসবে কিনা, কিন্তু সে অপেক্ষা করবে সারারাত, কালকেও। আর তারপর ? তারপর জানে না।

 


 

বাইরে বসলো চন্দ্রেয়ী , লোকজন আসছে ,গিফট দিচ্ছে।

হাল ছাড়বে না সংযুক্তা, কিছুতেই না। যাই হোক করে একটু সেজে নিয়ে চন্দ্রেয়ীর কাছে গিয়ে বসলো। তেমন লোকজন নেই ওর কাছাকাছি,বার বার একটাই কথা , চন্দ্রেয়ী এখনো সময় আছে।

চন্দ্রেয়ী – কি করে ? কি করে যাবো বল। আমাকে কেউ বের হতে দেবে ?

সংযুক্তা – তুই হ্যাঁ বল, বাকি আমি আর ইন্দ্র সামলাচ্ছি।

চন্দ্রেয়ী – হ্যাঁ , এরপর ?

ইন্দ্রকে সংযুক্তা ডাকলো। তিনজনে থেমে থেমে যা কথা হলো তা হলো – চন্দ্রেয়ীর দরকারি সব জিনিসপত্র , ওর ব্যাগ , জামাকাপড় , সব দরকারি জিনিস সংযুক্তা ওর ট্রলি ব্যাগে ইন্দ্রর গাড়িতে রেখে দেবে। কেউ সন্দেহ করবে না কেননা সবাই জানে ওটা সংযুক্তার ব্যাগ। এরপর যখন বর আসবে চন্দ্রেয়ীর কাছে তেমন কেউ থাকবে না , শাড়ী খুলে গেছে এমন একটা অজুহাতে ঘরে আসবে, দেন ফাঁকা দেখে পিছনের দরজা দিয়ে ইন্দ্রর গাড়িতে উঠবে চন্দ্রেয়ী। এদিকে সংযুক্তা বরের কাছাকাছি থাকবে যাতে ওকে কেউ সন্দেহ না করে। ইন্দ্র গাড়ির তেল ভরাবার নাম করে চন্দ্রেয়ীকে নিয়ে বেরিয়ে যাবে। আর ঈশান এর কাছে পৌঁছে দিয়ে আবার ভালো মানুষের মতো ফিরে আসবে কেউ বুঝতে পারবে না।

কিন্তু ভরসা পাচ্ছে না চন্দ্রেয়ী। বর এলো। বরকে ঠিক মেয়ের সাথে বিয়ে দিচ্ছে কিনা সেটা দেখতে চন্দ্রেয়ীকে নিয়ে যাওয়া হলো বরের গাড়ির কাছে। ইটা ওদের বাড়ির নিয়ম। সেই দম্ভভরা চোখ, একটা হাসি, যেন পারলে না সেই আমাকে বিয়ে করতে হচ্ছে। গা জলে উঠলো চন্দ্রেয়ীর।
বরের গাড়ির কাছেই ওর কাকার মেয়ে একটু ছোটাছুটি করছিলো, তার পায়ের চাপে চন্দ্রেয়ীর শাড়িটা সত্যিই আলগা হয়ে গেছে। কুচি ঠিক করতে হবে। এই সুযোগ।

ঘরে গিয়ে দরকারি ব্যাগটা নিলো – আর দেরি করিস না , বাকি আমাকে বল আমি পরে নিয়ে যাচ্ছি তুই যা – ঘুরতেই দেখলো – দরজায় ওর ভাই। চন্দ্রেয়ীর হাতটা ধরে বললো – পালাচ্ছিস ? টানতে টানতে নিয়ে বাইরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে , সংযুক্তা ওকে বোঝাতে লাগলো – চন্দ্রিল তোর দিদি এই বিয়েটা করে সুখী হবে না , যেতে দে। ওর ভালো হবে না বিয়েতে।

ওমা ওর শাড়ী ঠিক হয়েছে – বসতে হবে বরের বাড়ির লোক দেখবে তো ওকে – সেজমাসি এসেছে , সব শেষ।

চন্দ্রিল – না হয়নি তুমি যায় আমি নিয়ে আসছি। সেজমাসি ছাড়া আর কেউ নেই। সেজমাসি চলে গেলো।

কি প্ল্যান বলো – চন্দ্রিল জিজ্ঞাসা করলো সংযুক্তাকে।

সংযুক্তা – দেখ ও কি

চন্দ্রিল – দেরি করো না, তাড়াতাড়ি বলো। এরপর সবই চলে আসবে।

সংযুক্তা – ইন্দ্র পিছনের দরজার বাইরে গাড়ি নিয়ে ওয়েট করছে।

চন্দ্রিল – ওকে, চলো

গাড়িতে বসিয়ে চন্দ্রেয়ীকে বললো – তুই যা , আমি এদিকটা সামলে নেবো , আর শোন্ ,আমি তোকে ভালোটালো বাসিনা, কিন্তু অপূর্বকে আমারও ভালো লাগেনি, তুই ভালো থাকবিনা হয়তো, যা। আর শোন্, মা আমাকে ভালোবাসে তোকে না।

গাড়ি স্টার্ট হলেও বাড়ির সামনের দিকে এসে দাঁড়াতেই হলো। বরের লোকজনের গাড়ি আসছে, একটু ভিড় ভাট্টা, ছুটে এসে সামাল দিয়েছে চন্দ্রিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো কি?

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!