সোনার হরিণ চাই – ( লাভ স্টোরি ) – পার্ট 15, কলমে – অপরাজিতা অপরাজিতা গল্পে-আড্ডায় July 11, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –লোকজন গিফট দিলেও ওর মনের মধ্যে অন্য কিছু চলছিল। খুব ভয় করেছে চন্দ্রেয়ীর, সত্যি পালাবে? অনেকবার ভেবেছে, ও যেতে চায় সবকিছু ছেড়ে ঈশানের কাছে। কিন্তু এইভাবে পালিয়ে? নাকি যেভাবে ভেবেছিলো বিয়ে করবে না বলবে, সেভাবে। ভয় হয়েছে যদি তবুও জোর করে বিয়ে দেয়। অনেক কিছু চলছিল ওর মনের মধ্যে। এর মধ্যেই সংযুক্তা ওর হাতে একটা হার দিয়েছিলো, একটা সরু সোনার চেন তাতে একটা ছোট্ট লকেট। লোকেটটা একটা হরিণ। চিনতে এক মুহূর্তের জন্যই দেরি হয়নি ,ওটা ঈশানের মায়ের হার। ঈশান এই হারটা কাছ ছাড়া করে না। যখন ঈশানের ফ্ল্যাটে ছিল ও বলেছিলো – এই হারটা নাকি ওর মায়ের হার, এটা ওর জন্য খুব লাকি, যে দিন এটা ওর কাছ ছাড়া হয়ে যাবে সেদিন ও আর থাকবে না। ওই ছোট হরিণটা ও টিউশানি করে, হাতখরচ বাঁচিয়ে মায়ের জন্য বানিয়েছিলো। সংযুক্তা বলেছিলো – ঈশানদা বলেছে এটা তোকে দিতে, তুই যদি নাও যাস ঈশানদার কাছে তবুও যেন আমি হারটা আর ফেরত না নিই। এটা নাকি ঈশানদার রক্ষাকবচ, যেটা এবার তোর, সব বিপদ থেকে তোকে বাঁচাবে। আর পারেনি চন্দ্রেয়ী, সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছে ঈশান। যা হবে হোক আর ভাবেনি কিছু শুধু মনে হয়েছে কি করে পালাবে , সত্যি পারবে তো। যখন ভাই দেখে ফেলে হাত ধরেছে ,মনে হয়েছে সব শেষ হয়ে গেলো। কিন্তু ভাই সঙ্গ দেবে স্বপ্নেও ভাবেনি ,ভাই সত্যি ভাবে চন্দ্রেয়ীর জন্য? বরের বাড়ির লোকজন দাঁড়িয়েছিল বাড়ির সামনেই, ইন্দ্র গাড়িটা নিয়ে এলেও থামতে হয়েছে, সাথেই ভয় হয়েছে যদি কেউ দেখে ফেলে। চন্দ্রিল ছুটে এসেছে, সাইড করে ঠিক বের করে দিয়েছে। ঈশান দাঁড়িয়েছিল গাড়িতে ঠেস দিয়ে। ইন্দ্র হর্ন দিয়ে ওর সামনে দাঁড় করলো গাড়িটা। চন্দ্রেয়ী নেমেছে। ঈশানের এতক্ষন ভীষণ টেনশন হচ্ছিলো , চন্দ্রেয়ীকে দেখে গাড়িতে মাথাটা ঠেকিয়ে দিলো। ইন্দ্র – ডিকি খোলো , দেরি করোনা। চন্দ্রেয়ী গাড়িতে বসো তাড়াতাড়ি। গাড়িতে ট্রলি আর অন্য ব্যাগ তুলে দিলো ইন্দ্র , আর দেরি নয়। গাড়ি ছুটলো। ঈশান আর ওর সোনার হরিণ। এদিকে চন্দ্রেয়ীর গাড়ি বের হতেই সংযুক্তা বরের পাশে গিয়ে বসেছে। হাই, আমি সংযুক্তা, চন্দ্রেয়ীর বান্ধবী। অপূর্ব হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। হ্যান্ডশেক করলো সংযুক্তা, না হাত চার্চে না অপূর্ব , এই ছুঁওয়া চেনে সংযুক্তা। হাতটা জোর করে ছাড়িয়ে নিয়ে সংযুক্তা বললো – চন্দ্রেয়ী এক চড় মারবে , সামলাতে পারবে তো ? অপূর্ব – একটু তাচ্ছিল্য করে – আমাকে ? সংযুক্তা – ইয়েস এদিকে কনেকে দেখতে পাচ্ছে না ,বরের বাড়ির লোকজন সেই নিয়েও কথা শোনাতে বাকি রাখছে না , সংযুক্তাকে কেউ জিজ্ঞাসা করলো ওর সাথেই চান্দ্রেয়ী ছিল, এখনো কি করছে শাড়ী পড়া হয়নি? সংযুক্তা স্মার্টলি মিথ্যা বলে এবারেও বললো – আমি নিয়েই যাচ্ছিলাম কিন্তু আপনাদের বাড়ির কেউ একজন আমি তো সবাইকে চিনি না , সে ঘরে নিয়ে গিয়ে শাড়ী ঠিক করে দেবে বললো , আমি বর দেখতে চলে এলাম , আমি তো জানি না। বরণ হয়ে বর আসরে বসতে টাইম লেগেছে এর মধ্যে ইন্দ্রও চলে এসেছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - ওদিকের খবর জানবেন না। আমাদের ঈশান আর চন্দ্রেয়ীর কি করছে ? ঈশান, চন্দ্রেয়ী কেউ কিছু বলেনি, গাড়ি আপন মনে চলছে। চন্দ্রেয়ী কাঁদছে , ঈশান – আরে কাঁদছো কেন? আমার সাথে যাচ্ছ বলে ? চন্দ্রেয়ী – আর কোনো দিন আমি বাড়ি আসতে পারবো না, কোনোদিন ঢুকতে দেবে না। ঈশান – কে বললো ? চন্দ্রেয়ী – আমি পালিয়ে এসেছি বিয়ের পিঁড়ে থেকে , আর কেন ঢুকতে দেবে ?। ঈশান – চিন্তা করোনা চাঁদ, তোমার বাড়ি থেকেই বিয়েটা ক্যানসেল করে দেবে। চন্দ্রেয়ী – সে টুকু জ্ঞান আমার আছে , আমি জানি , আমি নেই তো কার সাথে বিয়েটা দেবে? যতসব। আর কোনোদিন সম্পর্ক রাখবে না আমার সাথে। ঈশান – আরে রাখবে রে বাবা, তোমাকে আদর করে ঘরে তুলবে চন্দ্রেয়ী – তোমার মজা মনে হচ্ছে সবটা , না ? ঈশান – এক ছেলের বাবার সাথে তোমার বাড়ির লোক কি তোমার বিয়ে দেবে? চন্দ্রেয়ী – মানে? অপূর্বর ? ঈশান – সত্যি সত্যি নেই, কিন্তু আছে ? চন্দ্রেয়ী – আমি না তোমার মতো এত ইন্টেলিজেন্ট নয়, পরিষ্কার করে বললে বুঝতে সুবিধা হবে। ঈশান – তুমি এদিকে বাড়ি থেকে বের হলে , ওদিকে একটা গাড়ি ঢুকবে, সেই গাড়ি থেকে একটা মেয়ে নাম শার্মিলা নামবে একটা বাচ্চাকে কোলে করে। এন্ড অপূর্বকে বলবে এটা তার বাচ্চা। চন্দ্রেয়ী – আর অপূর্ব মেনে নেবে? যা খুশি ঈশান – মানবে না, তখন শর্মিলা বলবে ডিএনএ টেস্ট করাও , কিন্তু অপূর্ব রাজি হবে না। চন্দ্রেয়ী হা করে একমুখ বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে। ঈশান – শর্মিলার সাথে ও ২ ইয়ার লিভ টুগেদার করেছে , তারপর ব্রেকআপ, আর শুধু শর্মিলা নয় আরো ২ – ৩ জনের সাথে লিভ টুগেদার করেছে। তোমাকে বলেনি ? লিভ টুগেদার মানে বোঝো নাকি বোঝাবো। চন্দ্রেয়ী – শার্ট আপ, আচ্ছা কিন্তু তুমি বললে বাচ্চারটা ওর নয় তাহলে যদি ডিএনএ টেস্ট করতে রাজি হয়ে যায়। ঈশান – হওয়া উচিত নয়, আর হলে হবে কিন্তু তাতে কি? চন্দ্রেয়ী – তখন তো বেরিয়ে যাবে ওটা ওর বাবি নয়। ঈশান – হুম ওই টেস্ট একদিনে হয় না , সময় লাগবে। তাছাড়া প্রমান হলো যে অপূর্ব যতটা ভালোমানুষ সেজে থাকে ততটা নয়। আর এমন একটা ছেলের সাথে কেউ মেয়ের বিয়ে দেবে না। সো বিয়েটা কালসেল এমনিতেই হয়ে যেত। চাদ্রেয়ী যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই মনে প্রশ্ন এলো – শার্মিলা বলে মেয়েটা কিকরে জানলো অপূর্ব বিয়ে? বা হঠাৎ বিয়ে ভাঙতে গেলো কেন? ব্রেকআপ তো হয়ে গিয়েছিলো ওদের ? চন্দ্রেয়ী ঈশানের দিকে তাকালো সন্দেহের চোখে। বললো- মানে তুমি ? ঈশান আড় চোখে দেখে বললো – তোমাদের জায়গাটা খুব সুন্দর। চাদ্রেয়ী এবার ঈশানের জামার কোলাটটা ধরলো, একদম কথা ঘোরাবে না , তুমি চিনতে না, অপূর্বকে ? ড্রাইভ করছে ঈশান – বললো ছাড়ো, আমি ড্রাইভ করছি, এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে চন্দ্রেয়ী – গাড়ি সাইড করো ঈশান – গাড়ি দাঁড় করানো যাবে না। চন্দ্রেয়ী – দাঁড় করবে নাকি আমি দরজা খুলবো ঈশান – ওকে আপনার মতামত জানান -