সৌমিত্র খাঁ বিজেপিতে যোগ দিতেই খোল-করতাল ও গাঁদাফুলের মালা সহযোগে শাসকদলের ‘শুদ্ধিকরণ’ রাজ্য January 11, 2019 রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়েই দল ছাড়লেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। প্রকাশ্যে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে বিজেপিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায় সৌমিত্র বাবুকে। জেলার এসডিপিও সুকমল দাস তাঁর ব্যক্তিগত আপ্তসহায়ক সুশান্ত দাসকে অপহরণের পাশাপাশি তাঁকে খুনের চক্রান্ত করছেন। এমন অভিযোগ জানিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন সৌমিত্র। এরপর ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই একেবারে দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে গিয়ে দিলীপ ঘোষ,মুকুল রায়দের উপস্থিতিতে গেরুয়া পতাকা তুলে নেন তিনি। এমনকি দলত্যাগ করার পরও চুপ থাকেননি তিনি। অভিযোগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাবতীয় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি।সরাসরি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে তিনি জানিয়েছেন,যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতির স্বৈরচারী মনোভাব এবং পুলিশের দাদাগিরির জন্যে বাধ্য হয়ে দল পাল্টাতে হয়েছে তাকে। লোকসভা ভোটের মুখে দলীয় সাংসদের এহেন আচরণে শাসকদল চাপে পড়ে গেলেও চুপ করে বসে থাকেননি শীর্ষ নেতৃত্বরা। সৌমিত্রের তৃণমূল বিরোধী বক্তব্য শোনার পর সঙ্গেই তাকে দল থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে,এদিন বাঁকুড়ার তৃণমূল কংগ্রেসও এদিন প্রতাপশালী তৃণমূল নেতা এবং দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের কথামতোই সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে ধিক্কার মিছিল বের করল। ১৯’এর ব্রিগেড সমাবেশের প্রচারে বেরিয়ে জঙ্গলমহলের রাইপুরের সভামঞ্চে দলত্যাগী সাংসদ সৌমিত্র খাঁর ছবিতে গাঁদা ফুলের মালা জড়িয়ে খোল কীর্তণ সহযোগে ‘শুদ্ধিকরণে’র পথে হাঁটল তৃণমূল। রাইপুর সবুজ বাজারের এই গোটা কর্মসূচিতেই উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্ম্মু, সহ সভাধিপতি শুভাশিস বটব্যাল, বিধায়ক বীরেন্দ্রনাথ টুডু সহ ব্লক স্তরের পদাধিকারীরা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সভার শুরুতেই মঞ্চে উঠে রাইপুর ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি রায়কুমার সিং ঘোষণা করেন,শুদ্ধিকরণ কর্মসূচির মাধ্যমে এদিনের সভার সূচনা হবে। সভায় উপস্থিত দলীয় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি গর্জে উঠে বলেন, “আপনারা জানেন আমাদের দলে এসেছিল কিছু ধান্দাবাজ, যাদের গতকালই দল বহিস্কার করেছে। তাই জঙ্গলমহলের রাইপুর ব্লক তৃণমূলের পক্ষ থেকে খোল করতাল নিয়ে হরিনাম সংকীর্তণের মধ্য দিয়ে শুদ্ধিকরণ করছি।” এরপর জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ দলবিদ্বেষী সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের নামোল্লেখ না করেই বলেন,দলবিরোধী কাজের জন্যে বহিষ্কার করা মানুষটাকে আমরা তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। দল থেকে সবকিছু পাওয়ার পরও সে দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এরপর সৌমিত্র বাবুকে পরোক্ষভাবে কটাক্ষ করে তিনি জানান,এসব দলবিরোধী লোক তৃণমূল থেকে বেরিয়ে গিয়ে দলকে আরো উন্নয়নের দিকেই এগিয়ে দিল। অন্যদিকে,এদিন বড়জোড়ায় ১৯’এর ব্রিগেড সমাবেশের প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তালডাংরার বিধায়ক সমীর চক্রবর্ত্তীও দলত্যাগী সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে যাবতীয় ক্ষোভ উগড়ে দেন। বলেন, কংগ্রেসে সুবিধা করতে না পেরে তৃণমূলে এসেই দলের রাজ্য যুব সভাপতি হয়েছিলেন সৌমিত্র খাঁ। এরপর ২০১৪ তে সাংসদ হন। সাংসদ হয়েই স্বার্থ মিটে গেছে। আর বোধহয় তৃণমূলে থেকে ভোটের টিকিট মিলবে না,এটা ভেবেই দলত্যাগ করেছেন সৌমিত্র! এরপর সৌমিত্র খাঁয়ের কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসা,তারপর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগাদান প্রসঙ্গে কটাক্ষের সুর আরো চড়া করে বলেন,’একই অঙ্গে এতো রূপ দেখিনি তো আগে।’ বড়জোড়ায় এদিনের সভায় বিধায়ক সমীর চক্রবর্ত্তীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্ত্তী, তৃণমূল নেতা সব্যসাচী রায়, সুখেন বিদ প্রমুখরা। আপনার মতামত জানান -