এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ঘরে ফিরছেন শোভন? উৎফুল্ল তৃণমূল শিবির, মোটেই ভাবিত নয় বিজেপি!

ঘরে ফিরছেন শোভন? উৎফুল্ল তৃণমূল শিবির, মোটেই ভাবিত নয় বিজেপি!

 

“ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা..যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা, যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।” – যখন সমস্ত দিদিরা ভাইদের কপালে চন্দনের তিলক দিয়ে এই বাক্য আওড়াচ্ছেন, ঠিক তখনই সকলকে যেন চমকে দিয়ে নিজের কপালে চন্দনের তিলক পড়তে কালীঘাটে হাজির হলেন বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়।

ফোঁটা নিতে গেলেন নিজের প্রাক্তন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। যা ভাইফোঁটার দিনের ভাই-দিদির সম্পর্ক অপেক্ষা, বঙ্গ রাজনীতির নতুন সমীকরণকেই উসকে দিল বলে মত রাজনৈতিক মহলের। বস্তুত, বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির জন্য মন্ত্রিত্ব এবং মেয়র পদ প্রত্যাহার করে দীর্ঘদিনের নেত্রীকে ছেড়ে সেই বান্ধবীকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।

তবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেও সেইভাবে বিজেপির কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। যেক্ষেত্রে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের “কাঁটা” হওয়ার ঘটনাই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বিজেপির একাংশ। শোভন চট্টোপাধ্যায়কে তাঁরা গুরুত্ব দিলেও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় কে তারা কোনমতেই গুরুত্ব দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। অপমানিত হয়ে অনেক সময় সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছিল বৈশাখীদেবীকে।

কিন্তু যে ব্যক্তি নিজের বান্ধবীর জন্য দীর্ঘদিনের দিদি তথা নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়তে পারেন, তিনি কি করে সেই বান্ধবীকে ছাড়া বিজেপিতে থেকে একা রাজনীতি করবেন! আর তাইতো বান্ধবী বিনা তিনি চলতে পারবেন না, এটা বিজেপিকেও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। কলকাতায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর অনুষ্ঠান হোক, কিংবা গান্ধী সংকল্প যাত্রা কোনো কর্মসূচিতেই উপস্থিত হতে দেখা যায়নি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। যা রাজ্য রাজনীতিতে ব্যাপক জল্পনা বাড়িয়ে দিয়েছিল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এবার সেই সমস্ত জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়ে হঠাৎই ভাইফোঁটার দুপুরে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের 30 বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের কালীঘাটের বাড়িতে উপস্থিত হলেন তার এক সময়কার প্রিয় ভাই কানন চট্টোপাধ্যায়। যে ঘটনা ফের শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

কেননা যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংসর্গ ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিলেন, সেই তিনি আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ফোটা নিতে আসবেন, এটা রাজনৈতিক মহলের কাছে সত্যিই আশ্চর্যের ব্যাপার। তাই দিদি-ভাইয়ের ফোঁটা নেওয়ার মধ্যে রাজনীতি খুঁজে না পেলেও, এর মধ্যে যে ভবিষ্যতের কোনো বার্তা লুকিয়ে আছে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত অনেকে।

তৃণমূলের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া শোভন চট্টোপাধ্যায় থাকতেই পারবেন না। দিদির স্নেহ দিয়ে যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোভন চট্টোপাধ্যায়কে পরিপক্ক রাজনীতিবিদ করে তুলেছিলেন, বিজেপি সেই শোভনবাবুকে ধ্বংসের চেষ্টা করেছে। আর তাই তো দিদির কাছে ভুল করেছে জেনেই ভাই এবার ফোটা নিয়ে দিদির অভিমান ঘোচাতে চাইছে। তবে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বাড়িতে যাত্রা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবিত নয় গেরুয়া শিবির।

এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, “শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁকে দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে খুব একটা দেখা যায়নি। তবে ভাইফোঁটায় উনি কালীঘাটে যাওয়ার মানে এই নয় যে, তিনি বিজেপি ছেড়ে দিয়েছেন! সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যেতেই পারেন। তবে নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ শোভনবাবু নিজেই স্থির করবেন।”

এ প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ”রাজ্যপালও দু’দিন আগে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। সামাজিক অনুষ্ঠানে সবার যাওয়া দরকার। এখানে রাজনৈতিক রং দেখি না। বহু বছর ধরে ওখানে শোভনবাবু যান। আমি এটাকে সামাজিক ভাবেই দেখছি। বাকিটা ওঁরাই বলতে পারবেন”।

বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ”দিল্লিতে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী সোনিয়াজির বাড়িতে গিয়েছেন। এই আদানপ্রদান, সৌজন্য তো চলতেই থাকে। এই সৌজন্য নষ্ট করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সিপিএম”।

আর শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে তৃণমূল বনাম বিজেপির এই আশা- আশংকার দোলাচলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অবস্থা এখন না ঘরকা না ঘাটকা। তৃণমূল থেকে বেরিয়ে গিয়ে বান্ধবীর জন্য বিজেপিতে সেই ভাবে কাজ করতে পারেননি তিনি।

ফলে বিজেপি থেকেও কার্যত মুছে যেতে শুরু করেছিলেন তিনি। আর তাইতো খবরের শিরোনামে থাকার জন্য এবার প্রাক্তন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ভাইফোঁটা নিতে গিয়ে তৃণমূলেই ফিরে যাওয়ার বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একসময়কার ভাই কানন বলে মত বিশ্লেষকদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই যবনিকার পতন কোথায় গিয়ে হয়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!