তাকে নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে‌। সেভাবে তিনি আর রাজনীতির ময়দানে নেই। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর এখন কার্যত নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছেন কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। বহুবার তার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা সৃষ্টি হলেও, সেভাবে কোনো বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি তাকে। তবে বর্তমানে যখন দুর্যোগের মধ্যে দিয়ে চলছে গোটা বাংলা, ঠিক তখনই দেখা গেল সেই শোভন চট্টোপাধ্যায়কে।

প্রায় দীর্ঘ 18 মাস পর মুখ খুলে তিনি মেয়র থাকার সময় কতটা যোগ্যতা সহকারে কলকাতা পৌরসভা পরিচালনা করেছেন সেই ব্যাপারে বার্তা দিলেন কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র। পাশাপাশি সদ্য প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিমকেও নাম না করে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না শোভন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু হঠাৎ কোন ইস্যুতে মুখ খুলতে হল শোভন চট্টোপাধ্যায়কে?

বস্তুত, বর্তমানে দুর্যোগের পর কলকাতা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। তেমনভাবে পানীয় জল পরিষেবাও নেই। আর এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হচ্ছে। যার ফলে কিছুটা হলেও চাপে পড়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে কলকাতা পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সেখানকার প্রশাসক করা হয়েছে বিদায়ী মেয়র তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে।

সূত্রের খবর, এদিন এই প্রসঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি থাকলে কলকাতার পরিস্থিতি এতটা খারাপ হত না। তাণ্ডবের পর চার দিন কেটে গেলেও কলকাতা স্বাভাবিক হল না। এজন্য পৌরসভা ব্যর্থতাই দায়ী। এই পরিস্থিতিতে মেয়র বা প্রশাসক কেউই দায় এড়াতে পারেন না।” দুর্যোগ মোকাবিলায় কলকাতা পৌরসভার ভূমিকা নিয়ে আরও সোচ্চার হতে দেখা যায় সেখানকার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে।

তিনি বলেন, “আমপানে কলকাতা পৌরসভার ভূমিকা রোগী ভেন্টিলেশনে চলে যাওয়ার পর চিকিৎসা শুরু হওয়ার মতই। পৌরসভায় আগে এতটা গুরুত্ব দিয়ে ভাবেনি ঘূর্ণিঝড়। তাই সেই ঝড় তাণ্ডব চালানোর পর পৌরসভা কাজ করেছে। ততক্ষনে রোগী ভেন্টিলেশনে চলে গিয়েছে। কাজে ঘাটতি রয়ে গিয়েছে। যার ফল ভুগতে হচ্ছে কলকাতাবাসীকে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন পর কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমান বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় কোনো বিষয়ে মুখ খুললেন। তবে তিনি যেভাবে কলকাতা পৌরসভার পক্ষ থেকে দুর্যোগ মোকাবিলায় অপদার্থতার অভিযোগ তুললেন, তাতে তার প্রাক্তন দল তৃণমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি দ্বিগুণ ভাবে বাড়িয়ে দিলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।