স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাদের জেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। যার পরেই দলনেত্রীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠতাকে বৃদ্ধি করে সেই বান্ধবীকে সাথে নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে নাম লেখান শোভন চট্টোপাধ্যায়।

কিন্তু বিজেপিতে যোগ দিয়ে সেইভাবে গুরুত্ব পাননি শোভনবাবু। যার ফলে ভাইফোঁটার দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে গিয়ে তার ফোটা নেওয়ার পরেই তার তৃণমূলের যোগদানের সম্ভাবনা জোরালো হয়ে ওঠে। কিন্তু সেইভাবে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলে যোগ দেননি তিনি। আর এরই মাঝে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সক্রিয় করা নিয়ে বিজেপিতে যখন তৎপরতা চলছে, ঠিক তখনই শোভনবাবুর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দেড়ঘন্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক নানা জল্পনা তৈরি করেছে রাজনৈতিক মহলে।

অনেকেই বলছেন, এই বৈঠকের মধ্যে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ লুকিয়ে আছে। যদিও বা এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু শোভন চট্টোপাধ্যায় খাতায়-কলমে এখনও পর্যন্ত বিজেপিতে থাকলেও, তিনি যেভাবে বিজেপির কোনো কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন না, তাতে কি শিবির বদলাবেন! নাকি ভারতীয় জনতা পার্টিতে থেকেই কাজ করে যাবেন! এই প্রসঙ্গে কৌশলী উত্তর দিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।

সেদিক থেকে শোভনবাবুর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পেছনে অন্তরায় যে তার স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়, তা ঘুরিয়ে হলেও পরিষ্কার করে দিয়েছেন বৈশাখীদেবী। এদিন তিনি বলেন, “শোভনদা কি হলে কি করবেন, তা দলনেত্রীকে জানিয়ে দিয়েছেন। শোভননদা জানিয়ে দিয়েছেন, রত্নার সঙ্গে তিনি এক মঞ্চে রাজনীতি করবেন না।” আর বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কথা থেকেই স্পষ্ট যে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছা থাকলেও, তার স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলে আছেন জন্যেই তার আপত্তি রয়েছে। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের এহেন শর্ত মানেন, নাকি রত্নাদেবীকে দলে রেখে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন নিজের প্রাক্তন সতীর্থ শোভনবাবুর দিকে! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।