শোভন-তৃণমূল সম্পর্কের জট ছাড়াতে এবার কি আসরে মুখ্যমন্ত্রী, শোভন ঘনিষ্ঠদের সাথে নেত্রীর বৈঠক ঘিরে জল্পনা কলকাতা রাজ্য June 30, 2019 বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতার জেরে মন্ত্রিত্ব পদ খোয়াতে হয় বেহালা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। এমনকি কলকাতা পৌরসভার মেয়র পদ থেকেও তাকে সরিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরই ক্রমশ দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে সেই শোভনবাবুর। সম্প্রতি তৃণমূলের এই হেভিওয়েট বিধায়কের বিজেপি যোগের জল্পনা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে শুরু করে। আর তারপর থেকেই দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিত শোভন চট্টোপাধ্যায়কে দলের মূলস্রোতে ফেরানোর জন্য একাধিক মন্ত্রীদের দিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। যার মধ্যে ফিরহাদ হাকিম থেকে শুরু করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তিত্বরা রয়েছেন। কিন্তু এতেও তেমনভাবে বরফ গলতে দেখা যায়নি। আর এই পরিস্থিতিতে এবার বেহালা এলাকার 11 জন তৃণমূল কাউন্সিলরকে নিয়ে বৈঠক করলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎই তৃণমূলের তরফে সেই কাউন্সিলরদের বৈঠকের জন্য তলব করা হয়। আর তারপরই শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় পৌঁছে প্রথম অধিবেশন শেষ হওয়ার পরেই সেই কাউন্সিলরদের নিয়ে নিজের ঘরে বৈঠক করেন। যেখানে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, তারক সিংহ, সুশান্ত ঘোষ, অশোক মন্ডলের মত কাউন্সিলরদের এলাকা দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি সকলকে একজোট হয়ে কাজ করারও নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এখানেই তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। এতদিন শোভন চট্টোপাধ্যায় কলকাতা পৌরসভার মেয়র থাকার সময় কোনো কাউন্সিলরকে ডেকে বৈঠক করতে দেখা যায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাহলে কি অবশেষে চাপে পড়েই এবার শোভনের অনুপস্থিতি অনুভব করে কাউন্সিলরদের ডেকে পরিস্থিতিকে মেরামত করতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী! এখন তা নিয়েই তৈরি হয়েছে জল্পনা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অনেকে বলছেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনে কলকাতার 50 টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। ফলে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মত দক্ষ নেতা যদি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে পা বাড়ান, তাহলে সামনেই কলকাতা পৌরসভার নির্বাচনে তৃণমূল বড়সড় ধাক্কা খেতে পারে। আর তাইতো শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করে এদিন প্রিয় ভাই কাননের প্রতিই বার্তা দিতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মত বিশেষজ্ঞ মহলের। কিন্তু এতসব করেও কি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মানভঞ্জন ঘটাতে পারবেন দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! কেননা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে দলীয় নেত্রীর কাছে বারে বারেই অপমানিত হতে হয়েছে শোভনবাবুকে, ফলে তিনি দলের এই দুর্দিনে এখন দিদির পাশে দাঁড়ান কিনা সেদিকেই নজর রয়েছে সকলের। তবে বেহালা পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায় দলের মূলস্রোত থেকে সরে গেলেও বেহালা পশ্চিম এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মত দক্ষ সংগঠক থাকা সত্বেও কেন শোভনবাবুর প্রয়োজনীয়তা বারে বারেই অনুভব করছে তৃণমূল! তাহলে কি পার্থ চট্টোপাধ্যায় তার দায়িত্ব ঠিকমত পালন করতে পারছে না! এখন তা নিয়েও তৃণমূলের অন্দরে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। এদিকে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলরদের নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বৈঠক করে সেই শোভন চট্টোপাধ্যায় কে দলে ফেরানোর বার্তা দিচ্ছেন বলে একাংশ মনে করলে এদিন এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “তৃণমূলের কি আদৌ কোনো নির্দিষ্ট নীতি রয়েছে! কখনও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে তৃণমূলের হয়ে সক্রিয় হওয়ার প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে, বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে। কখনও আবার সেই দলের নেত্রী বেহালার তৃণমূল কাউন্সিলরদের বৈঠকে ডাকলেও শোভন চট্টোপাধ্যায় সেই বৈঠকে ডাক পাচ্ছে না। তাহলে কি দলনেত্রী ধরেই নিয়েছেন যে শোভনবাবু আর তৃণমূলে নেই! এখন তো মনে হচ্ছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বই বুঝতে পারছেন না যে, শোভন চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে তাদের কি অবস্থান নেওয়া উচিত!” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বৈশাখীদেবীর এহেন মন্তব্য কিছুটা হলেও সঠিক। বর্তমানে দলে থেকেও সেই ভাবে কোনো জায়গায় নেই শোভন চট্টোপাধ্যায়। আবার অন্যদিকে তার বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনাও জোরালো হয়ে উঠতে শুরু করেছে। আর এহেন পরিস্থিতিতে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে দলে সক্রিয় হওয়ার কথা বলে বেহালার কাউন্সিলরদের ডেকে সেই প্রিয় ভাই কাননকেই কী বার্তা দিতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এখন তা নিয়েই জল্পনা সব মহলে। আপনার মতামত জানান -