এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ডিজিটাল রণকৌশল ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়? চূড়ান্ত গোপনীয়তা ‘যুবরাজের’ কনক্লেভ ঘিরে

ডিজিটাল রণকৌশল ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়? চূড়ান্ত গোপনীয়তা ‘যুবরাজের’ কনক্লেভ ঘিরে


আগামী ১০ সেপ্টেম্বর নজরুল মঞ্চে আয়োজিত শাসকদলের ডিজিট্যাল কনক্লেভকে নিয়ে নয়া নিয়ম তৈরি করল তৃণমূলের স্যোশাল মিডিয়া সেল। কনক্লেভে প্রবেশ করার জন্য লাগবে তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির দেওয়া ‘শংসাপত্র’। এ সপ্তাহের সোমবার, মঙ্গলবার দুদিন ধরেই তৃণমূলভবনে হয়ে গেল নাম নথিভুক্তিকরণ প্রক্রিয়া। শংসাপত্রে যারা নাম নথিভুক্ত করতে পারলেন তাঁদেরই মিলল প্রবেশপত্র। এর আগে কখনোই এমন প্রক্রিয়ায় প্রতিনিধি বাছাই করতে দেখা যায়নি তৃণমূল কংগ্রেসকে।

এই ডিজিট্যাল কনক্লেভের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বেশ কয়েক মাস আগে সুপর্ণ মৈত্র এবং দীপ্তাংশু চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে। তৃণমূলের যুবনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও নিজের দায়িত্বে নজর রেখেছেন প্রস্তুতিতে। জানা গিয়েছে, নজরুল মঞ্চে আয়োজিত কনক্লেভের প্রধান বক্তার ভূমিকায় থাকছেন তিনিই। দলের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের তরফ থেকে ডিজিট্যাল কনক্লেভে যোগদানের জন্য সারা বাংলাকেই আহ্বান জানানো হয়েছিল। তৃণমূলের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া পেজের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা আবেদন করার পাশাপাশি তাঁরাও সুযোগ পাবেন যাঁরা নিজেদের মতো করে তৃণমূলের হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়।

কনক্লেভে যোগ দেওয়ার আগে নাম নথিভুক্ত করিয়ে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে এ কথা প্রথমে জানানো হলেও দলের টিকিটে নির্বাচিত হওয়া কোনো জনপ্রতিনিধি শংসাপত্র না দিলে নাম নথিভুক্ত করা হবে না বা প্রবেশপত্র মিলবে না এ কথা শেষে জানানো হল। প্রথমে স্থির করা হয়েছিল কনক্লেভে যোগদানে ইচ্ছুক কর্মীরা ৩, ৪ ও ৫ ই সেপ্টেম্বর তৃণমূলভবনে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। পরে আবার সে সময়সীমা একদিন কমিয়ে দেওয়া হয়। আর এর নেপথ্যে কারণ হল – কনক্লেভে যোগদানে ইচ্ছুক কর্মীদের প্রথমদিনেই নজরকাড়া ভীড়। শাসক দলের দাবী, তিন দিন ধরে যদি নাম নথিভুক্তকরণের প্রক্রিয়া চালানো হত – তবে নজরুল মঞ্চে এতো লোকজনকে বসতে দেওয়ার যায়গা হতো না।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

তবে ইতিমধ্যেই নাম নথিভুক্ত হয়ে গিয়েছে যাঁদের, তাঁদের অনুষ্ঠানের দিন উপযুক্ত শংসাপত্র সঙ্গে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে উপযুক্ত শংসাপত্র কী? এ ব্যাপারে শাসকদলের তরফে জানা গিয়েছে, কনক্লেভে যোগ দিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের নিজেদের এলাকার কোনো তৃণমূলের জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে শংসাপত্র নিয়ে আসতে হবে। সাংসদ বা বিধায়কদের পাশাপাশি পঞ্চায়েতের যেকোনো স্তরের সদস্য বা কাউন্সিলারের কাছ থেকে শংসাপত্র আনলেও সমানভাবে মান্যতা দেওয়া হবে তাকে। তবে এতো সংগঠিত নিয়ম মেনে ডিজিট্যাল কনক্লেভের আয়োজব আগে কখনো করেনি তৃণমূল কংগ্রেস। কেন এই ব্যবস্থা নেওয়া হল হঠাৎ করে – তা নিয়ে রীতিমত কৌতূহল জাগছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরে।

তৃণমূল সূত্রের খবর থেকেই মিলেছে এর জবাব। জানা গিয়েছে, নজরুল মঞ্চে আয়োজিত কনক্লেভটি কোনো জনসভা নয় – আসলে এটি একটি প্রশিক্ষণ শিবির। স্যোশাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে কীভাবে নির্বাচনী প্রচার চালানো যাবে, সরকারের সাফল্য, প্রকল্প, এমনকী কর্মসূচির কথা মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া যাবে, কীভাবে বিরোধীদের যোগ্য জবাব দেওয়া যাবে তার সামগ্রিক রূপরেখা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে এই ডিজিট্যাল কনক্লেভে। তাই কনক্লেভে বাড়তি মানুষের ভীড়ের কোনো প্রয়োজন নেই। তাতে পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়, শুধু আগ্রহী মানুষদের উপস্থিতিই কাম্য। জানা গিয়েছে কনক্লভের অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঐদিন বিশেষ বার্তা দিতে চলেছেন আইটি সৈনিকদের।

তবে তৃণমূলের রণকৌশলের দিকে নজর থাকবে বিরোধীদেরও। আশঙ্কা ছিল, ঐদিন প্রতিপক্ষের লোকজনও নিজেদের তৃণমূল বলে পরিচয় দিয়ে অনুষ্ঠানে ঢুকে পড়তে পারে। এই আশঙ্কা এড়াতেই পরিচয় যাচাইয়ের ব্যবস্থা করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের এক শীর্ষ কর্তার তরফ থেকে জানা গেল, সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার প্রতিনিধি নজরুল মঞ্চে জড়ো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই সিংহভাগ আসন পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। তবে দূরে থাকা কনক্লেভে যোগদানে ইচ্ছুক মানুষগুলোর কথা ভেবে অনুষ্ঠানের দিন সকালে বেশ কিছু নাম লেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপাতত ডিজিট্যাল কনক্লেভের আয়োজন নিয়ে চূড়ান্ত ব্যস্ততা রয়েছে তৃণমূলের স্যোশাল মিডিয়া সেলের কর্মকর্তাদের মধ্যে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!