এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ডিও/বিএলও মামলার রায় আগামীকাল – রাজ্য সরকারের ‘সমস্যার’ সমাধানে চূড়ান্ত ‘চমক’ শিক্ষকদের?

ডিও/বিএলও মামলার রায় আগামীকাল – রাজ্য সরকারের ‘সমস্যার’ সমাধানে চূড়ান্ত ‘চমক’ শিক্ষকদের?


বহু চর্চিত ও সংবেদনশীল ডিও/বিএলও মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হওয়ার কথা আগামীকাল। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মিলে মোট ২১ রকমের শিক্ষা-বহির্ভূত কাজ করতে হয় রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের। যার মধ্যে অন্যতম এই ডিও/বিএলও ডিউটি। অথচ এই কাজ করতে গিয়ে শিক্ষকদের প্রাথমিক যে কাজ – শিশুদের শিক্ষাদান তা বহুলাংশে ক্ষতিগ্রস্ত। অথচ সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী – এই কাজ প্রাথমিক শিক্ষকদের দিয়ে করানোই নাকি ‘বেআইনি’ বলে দাবি মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের। কিন্তু, যে কাজ করতে প্রাথমিক শিক্ষকরা আদৌ বাধ্য নন বলে দাবি – সেই কাজ করাতে গিয়েই প্রশাসনিক আধিকারিকরা যে ‘সম্মান’ দেখান তাঁদের তা আর বলার কহতব্য নয়।

সম্প্রতি এই ডিও/বিএলও ডিউটি নিয়ে শিক্ষক শাশ্বত ঘোষ দুটি আপাতনিরীহ প্রশ্ন করায় – তাঁর সঙ্গে নাকাশিপাড়ার বিডিও যা করেছেন সেই স্মৃতি এখনো রীতিমত দগদগে রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের মনে। আর তাই ‘অনেক হয়েছে’ এই মনোভাব নিয়ে এবং শিক্ষকদের প্রাথমিক যে কর্তব্য সেই শিক্ষাদানের অঙ্গীকার নিয়ে – অবশেষে আদালতের দ্বারস্থ হতে একপ্রকার বাধ্য হয়েছেন শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের নেতৃত্ত্বে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা। সেই মামলার শুনানিতে তাঁদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের সুপ্রিম কোর্টের রায় দেখিয়ে তোলা প্রশ্নের সামনে রীতিমত ‘হতচকিত’ দেখিয়েছে রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবীদের বলে সেদিনের শুনানিতে উপস্থিত থাকা দর্শকদের দাবি।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

এমনকি, ফিরদৌস সাহেবের তোলা প্রশ্নের উত্তরে, পাল্টা সুপ্রিম কোর্টের রায় বা কোনো নির্দিষ্ট আইন না দেখিয়ে বিপক্ষের আইনজীবীরা এক সময় বলেই ফেলেন – কিছু কিছু কাজ দেশের স্বার্থে করতে হয়! অর্থাৎ, রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের এই ডিও/বিএলও ডিউটি দেওয়া ‘ঠিক’ না হলেও ‘দেশের স্বার্থে’ তা করা উচিত – তার জন্য শিক্ষকদের প্রাথমিক কর্তব্য শিক্ষাদানের অঙ্গীকার ব্যাহত হলেও! যে যুক্তি শুনে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী আর থাকতে না পেরে পাল্টা প্রশ্ন করেন – আপনাদের কাছে ‘এক্সেলেন্স’ আগে নাকি ‘ইলেকশন’? এরপরেই বিপক্ষের আইনজীবীরা কার্যত বুঝে যান – হয়ত বা প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবিকে মান্যতা দিয়ে আদালত ডিও/বিএলও ডিউটির উপর ‘স্থগিতাদেশ’ দিতে পারেন – আর তাই তাঁরা যুক্তি সাজান, আগামী জানুয়ারী মাসের মধ্যে রাজ্যের ৪২ টি লোকসভা আসনের ভোটার তালিকার কাজ সম্পূর্ণ না হলে সমগ্র নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে, তাই যেন স্থগিতাদেশ দেওয়া না হয়।

বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী আপাতত বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে। আগামীকাল সেই প্রশ্নের উত্তর পেয়েই তিনি তাঁর রায় জানাবেন, আর তাই তিনি আপাতত স্থগিতাদেশ দেন নি। মূল মামলাকারী শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের শীর্ষনেতৃত্ত্বের ধারণা, যেহেতু এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আইন বা রায় তাঁদের পক্ষে রয়েছে – তাই হয়ত আগামীকাল ‘গণতন্ত্রকে বাঁচানোর’ মত যুক্তি খাড়া করে স্থগিতাদেশ আটকানোর চেষ্টা হতে পারে। কিন্তু তাঁরাও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ – এই যুক্তিতে কিছুতেই শিক্ষাদানের অঙ্গীকারকে তাঁরা ব্যাহত হতে দেবেন না। আর তাই রাজ্য সরকারের এই ‘চরম সমস্যার’ সমাধানে এবার চূড়ান্ত চমক দিতে চলেছেন তাঁরা।

শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের শীর্ষনেতা মইদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, রাজ্য সরকার বা রাজ্য নির্বাচন কমিশন ‘গণতন্ত্র রক্ষার’ যুক্তি খাড়া করলে, আমাদের আইনজীবী পাল্টা প্রস্তাব দেবেন – রাজ্য সরকারের কাছে তো ‘এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক’ আছে, যেখানে রাজ্যের হাজার-হাজার বেকার শিক্ষিত তরুণ-তরুণী নিজেদের নাম নথিভুক্ত করে রেখেছেন চাকরির প্রত্যাশায়। রাজ্য সরকার তাঁদের ‘বেকার-ভাতাও’ দেন সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় – ‘যুবশ্রী’ প্রকল্পের মাধ্যমে মাসে মাসে তাঁদের ১,৫০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়, অথচ তাঁরা সরকারের উন্নয়নের যজ্ঞে শামিল হতে বা এই গণতন্ত্র রক্ষার কাজে যুক্ত হতে পারছেন না। তাই, যদি তাঁদের এই ডিও/বিএলও ডিউটিতে নিযুক্ত করা হয় – তাহলে তাঁরাও একটা কাজ পাবেন আবার শিক্ষকরাও তাঁদের প্রাথমিক কর্তব্য থেকে বিচ্যুত হবেন না। এই যুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বা রাজ্য সরকার কি বলে সেদিকেই তাকিয়ে এখন রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষক।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!