এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > হেভিওয়েট মন্ত্রীর পুজোর উদ্বোধনে এলেনই না মুখ্যমন্ত্রী! বাড়ছে জল্পনা

হেভিওয়েট মন্ত্রীর পুজোর উদ্বোধনে এলেনই না মুখ্যমন্ত্রী! বাড়ছে জল্পনা


তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যেই একটা কথা খুব চলে – দলে কোন নেতার গুরুত্ব বাড়ছে বা কমছে তা নাকি বোঝা যায় দুটো ঘটনা থেকে। এক – দলনেত্রীর গাড়ির ব্যাকসিটে কে বসছেন, আর দুই – কার পুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী আগে যাচ্ছেন। আর এবার সেই পুজোর উদ্বোধনেই কার্যত রাজ্যের এক হেভিওয়েট মন্ত্রী ব্রাত্য থেকে যাওয়ায় – তুমুল জল্পনা শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরে।

লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিতর্ক যেন আর পিছু ছাড়ছেনা তৃণমূল কংগ্রেসের। সারদা-নারদার দ্বিমুখী আক্রমণে এমনিতেই দল হিসাবে তৃণমূল বেশ অস্বস্তিতে। তার ওপর এবার বিজেপি দুর্গাপূজার উদ্বোধনে নাম লিখিয়ে দুর্গাপূজাকে রাজনৈতিক স্তরে নিয়ে গেছে। আর এবার পুজো উদ্বোধন নিয়েও বিতর্কের সূত্রপাত হল তৃণমূলের অন্দরে। একদিকে, যখন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি এসে পুজোর উদ্বোধন করে গেলেন কলকাতার বুকে – সেখানে এবার এক হেভিওয়েট পুজোর উদ্বোধনী গেলেন না মুখ্যমন্ত্রী!

গতবছর মুখ্যমন্ত্রী প্রথম উদ্বোধন করেছিলেন শ্রীভূমি স্পোর্টিংয়ের পূজা – যা কিনা দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর পূজা হিসাবেই পরিচিত। তখনও অবশ্য সুজিতবাবু মন্ত্রীত্ব পান নি। কিন্তু, পিতৃপক্ষেই সেই পূজার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রদীপ জ্বালিয়ে উদ্বোধনের পাশাপাশি করেন মন্ত্রোচ্চারণও। আর তারপরেই সুজিত বসু পান রাজ্যের মন্ত্রীত্ব। প্রয়াত সিপিএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর ভাবশিষ্য হিসাবে পরিচিত সুজিত বসু দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল করলেও – গতবারের পূজা উদ্বোধনের পরেই অবশেষে মন্ত্রীত্ব পান।

কিন্তু, সেই পূজা উদ্বোধনকে ঘিরেই শুরু হয়েছিল তীব্র বিতর্ক। বিজেপি সহ সমস্ত বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করে, পিতৃপক্ষে কিভাবে পূজার উদ্বোধন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী? কিভাবেই বা সেখানে মন্ত্রোচ্চারণ করেন? এমনকি, এই ঘটনাকে ‘হিন্দু ধর্মের অপমান’ বলেও ক্ষোভ উগরে দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে, সেই অভিযোগ অবশ্য তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে। কিন্তু, তারপরে গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। বাংলার রাজনৈতিক সমীকরণ গেছে সম্পূর্ণ বদলে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

যে বিজেপিকে ‘শূন্য’ ধরেছিলেন তৃণমূল নেত্রী, তারাই এখন নবান্নের কুর্শি দখলের জন্য তাল ঠুকছে। ফলে, এবারেও পিতৃপক্ষে পূজা উদ্বোধন করলেও – আর প্রদীপ জ্বালাতে বা মন্ত্রোচ্চারণ করতে দেখা যায় নি – মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার থেকেও বড় কথা, সবার প্রথমে তো দূরের কথা – সুজিত বসুর শ্রীভূমি স্পোর্টিংয়ের পূজার উদ্বোধনেই গেলেন না মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার সন্ধ্যায় শ্রীভূমির পুজোর উদ্বোধন হয়ে গেল – ছিলেন এক ঝাঁক তারকা, কিন্তু সবাইকে আশ্চর্য করে ছিলেন না স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী!

যদিও তৃণমূল সূত্রের খবর, তিনি আসতে পারবেন না আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন এবং সবার উদ্দেশ্যে একটি শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছিলেন। প্রতিবছর মুখ্যমন্ত্রী সুজিত বসুর পুজো উদ্বোধন করেন। কিন্তু এ বছরই দমদম শ্রীভূমির পুজো উদ্বোধন করলেন না মুখ্যমন্ত্রী। তবে, রাজনৈতিক মহল অবশ্য বলছে অন্যকথা। এর আগে যাঁদেরই মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির ব্যাকসিট থেকে নেমে যেতে হয়েছে – তাঁদেরই সরে যেতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বৃত্ত থেকে, এমনকি দলও ছাড়তে হয়েছে! ফলে, এবারে পুজোর উদ্বোধনের ঘটনা কি নতুন কোনো রাজনৈতিক বার্তা-বহ হবে?

এ বছরে মুখ্যমন্ত্রীকে সবার আগে মণ্ডপে হাজির করেছেন কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। শুক্রবার দিন মুখ্যমন্ত্রী অতীন ঘোষের পুজো অর্থাৎ হাতিবাগান সর্বজনীন এর পূজা উদ্বোধন করেন। এরপরে চালতাবাগান হয়ে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এর পুজো বলে পরিচিত গড়িয়াহাট হিন্দুস্থান ক্লাবের পুজো উদ্বোধন করতে মুখ্যমন্ত্রী যান। উদ্বোধনের পর সভা মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, ‘চন্দ্রিমাকে এবারে বাদ করে দিয়েছিলাম। আমার প্রোগ্রাম ছিল। আগের বার শ্রীভূমি যেতাম মহালয়ার আগের দিন। এবার সুজিতকে বলেছি, হবেনা। চন্দ্রিমা বলল, দিদি আমারটা কেন বাদ হবে।’

একে একে মুখ্যমন্ত্রী এরপর অর্থাৎ রবিবার বেহালা নতুন দল, অজেয় সংহতি, বড়িশা ক্লাব থেকে শুরু করে বোসপুকুর তালবাগান, 41 পল্লী, বোসপুকুর শীতলা মন্দির ও 21 পল্লী সার্বজনীন দুর্গোৎসব উদ্বোধন করেন। তাহলে প্রশ্ন উঠছে মুখ্যমন্ত্রী এতগুলি পুজো উদ্বোধন করতে পারলেও শুধুমাত্র সুজিত বসুর পুজোকে কেন বাদ রাখলেন? একটা পুজো উদ্বোধন কি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনেকটাই বেশী ? সবার পুজো উদ্বোধন করলেও সুজিত বসুর পুজোকে মুখ্যমন্ত্রী কেন বাদ রাখলেন? তা নিয়ে ইতিমধ্যে রাজ‍্যে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।

তাহলে কি এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুজিত বসুর মধ্যে কোন চিড় ধরল সম্পর্কে? প্রশ্নের উত্তর অবশ্য এখনো অজানা। তবে তৃণমূল দলীয় সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর হাতে এত পুজো উদ্বোধনের আহ্বান এসেছে যে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সুজিত বসুর পুজো ক্যানসেল করেছেন। এতে সন্দেহজনক কোন ব্যাপার নেই। সুজিত বসু নিজেও ব্যাপারটা জানেন। তবে আদৌ কি ঘটেছে সে ব্যাপারে এই মুহূর্তে জানা না গেলেও, পরবর্তীতে ঠিকই জানা যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!