এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বকেয়া ডিএ নিয়ে আজ মহানগরীর রাজপথে ঝড় তুলতে চলেছেন সরকারি কর্মচারীরা

বকেয়া ডিএ নিয়ে আজ মহানগরীর রাজপথে ঝড় তুলতে চলেছেন সরকারি কর্মচারীরা


বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন সরকারি কর্মচারীদের পাশে দাঁড়িয়ে তৎকালীন বাম সরকারকে তুলোধোনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করতেন, যে সরকার নিজের কর্মীদের পাওনা দিতে পারে না তাদের আর এক মুহূর্তও সরকারে থাকার অধিকার নেই। অথচ সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসে সম্পূর্ণ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে বিপরীত মেরুতে অবস্থান নিয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁর আমলে বকেয়া ডিএর পরিমান আকাশ ছুঁলে, সরকারি কর্মচারীরা নিয়ম মেনে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যাল বা স্যাটে আবেদন করেন।

কিন্তু স্যাট পত্রপাঠ সেই, আবেদন খারিজ করে দিয়ে জানিয়ে দেয় ডিএ সরকারের দয়ার দান, এই নিয়ে দাবি জানাতে পারবেন না সরকারি কর্মচারীরা। ফলে অনন্যপায় হয়ে সরকারি কর্মচারীরা মামলা করেন কলকাতা হাইকোর্টে – সেখানে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর এক ঐতিহাসিক রায়ে কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ডিএ সরকারি কর্মচারীদের সাংবিধানিক অধিকার, কখনোই দয়ার দান নয়। আর ডিএর হার কি হবে বা তা বছরে কতবার করে দেওয়া হবে সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে স্যাটকে নির্দেশ দেয়।

পুনরায় স্যাটে মামলা এলে, সরকারি আইনজীবীরা ফাইল হারিয়ে গেছে বা অতিরিক্ত সময় চায় প্রভৃতি কারণ দর্শিয়ে, হাইকোর্টে বারবার দৌড়ে সেই মামলাকে দীর্ঘায়িত করার কোনো প্রচেষ্টায় বাকি রাখে না। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয় না! অবশেষে স্যাটও নিজেদের রায়ে সরকারি কর্মচারীদের সমস্ত দাবিই মেনে নেয়। কিন্তু সেই রায় বেরোনোর পর, মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, তাঁর আমলেই সরকারি কর্মচারীদের ডিএ ১২৫% করা হয়েছে, তারপরেও তাঁরা ‘আরো দাও’ করে যাচ্ছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য ছিল – টাকা নেই, সরকারি কর্মচারীদের দিতে গিয়ে তিনি রাজ্যের উন্নয়ন বন্ধ করে দিতে পারবেন না। বা সাধারণ মানুষের জন্য বিভিন্ন ‘শ্রী’ প্রকল্প বন্ধ করে দিতে পারবেন না। কিন্তু এর পাল্টা সরকারি কর্মচারীদের বক্তব্য, যে ১২৫% ডিএ ২০১৬ সালের জানুয়ারী মাসে তাঁদের পাওয়ার কথা ছিল, তা দেওয়া হয়েছে, ২০১৯ সালে। অন্যদিকে ১২৫% ডিএ দেওয়ার নাম করে ১০% ইন্টিরিম রিলিফ ডিএর সঙ্গে ‘অনৈতিকভাবে’ মিশিয়ে দিয়ে, প্রকারন্তরে তাঁদের বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আরও দাবি, গত ছ বছরে বাজেটে বরাদ্দ করেও সময়মত ডিএ না দেওয়ায় রাজ্য সরকার নিজেদের কোষাগারে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা ফিরিয়ে নিয়েছে। এইসময়ে মুখ্যমন্ত্রী থেকে অর্থমন্ত্রী সকলেই জানিয়েছেন রেকর্ড পরিমান রাজস্ব বৃদ্ধি হয়েছে, কেন্দ্রও রাজ্যের বরাদ্দ অতিরিক্ত ১০% বাড়িয়ে দিয়েছে। তাছাড়া চালু হয়েছে জিএসটি, যাতে গোটা দেশে শীর্ষে আছে বাংলা বলে দাবি খোদ অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর। এই পরিস্থিতিতে সরকারের টাকা নেই বলে হাইকোর্ট বা স্যাটের রায়ের পরেও ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না – এই যুক্তি কতটা যুক্তিসঙ্গত?

সরকারি কর্মচারীদের আরও দাবি, যে কর্মচারীদের হাত ধরে তাঁর বিভিন্ন ‘শ্রী’ প্রকল্প বাস্তবে রূপায়িত হচ্ছে, তাঁদেরই কেন মুখ্যমন্ত্রী এত বঞ্চনা করছেন? তাঁরা তো কোনো ভিক্ষা চাইছেন না, চাইছেন তাঁদের ন্যায্য পাওনা – যা এতদিনে সারা ভারতের সমস্ত সরকারি কর্মচারী পেয়ে গেছেন। সেই পাওনা নিয়ে বঞ্চনার পাশাপাশি, যাঁরা এই এই নিয়ে প্রতিবাদ করছেন – তাঁদেরই দূরবর্তী প্রত্যন্ত জায়গায় বদলি করে দিয়ে মুখ বন্ধের চেষ্টা চলছে। আর তাই, এবার পথে নেমে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে সরকারি কর্মচারীরা।

সূত্রের খবর, আজ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ১৭ টি সংগঠন একযোগে রাস্তায় নেমে বকেয়া ডিএ, অনৈতিক বদলি সহ একাধিক দাবিতে ঝড় তুলতে চলেছেন। কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ, আশা, নবপর্যায় সহ মোট ১৭ টি সংগঠনের সদস্যরা আজ মিছিল করে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে ময়দানে গান্ধী মূর্তি পর্যন্ত যাবে বলে জানা গেছে। সমস্ত সরকারি কর্মচারী যাতে দলমত নির্বিশেষে এই মিছিলে পা মেলাতে পারেন, তাই কোনো সংগঠনের কোনো পতাকা এই মিছিলে থাকছে না বলেও জানা গেছে। এখন দেখার সরকারি কর্মচারীদের রাস্তায় নেমে এই আন্দোলনের পরে রাজ্য সরকার আদালতের নির্দেশ মেনে তাঁদের বকেয়া মিটিয়ে দেয় কিনা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!