এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পে-কমিশন ঘোষণার মাধ্যমে ‘ভিখিরি’ বানিয়ে দেওয়া হল! ক্ষোভে ফুঁসছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা!

পে-কমিশন ঘোষণার মাধ্যমে ‘ভিখিরি’ বানিয়ে দেওয়া হল! ক্ষোভে ফুঁসছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা!

প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – আর কয়েকদিনের মধ্যেই বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজো শুরু হতে চলেছে – আর তার আগেই নিজের দেওয়া কথামত আজ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ষষ্ঠ পে-কমিশনের মন্ত্রীসভার অনুমোদন দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরেই এক সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ‘সুখবর’ শোনালেন। কিন্তু, তিনি রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি হয়ে যাকে ‘সুখবর’ বলছেন, তা নিয়ে কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন যাদের জন্য এই ‘সুখবর’ – সেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।

রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার কথা ডান-বাম সব পক্ষের গলাতেই। এমনকি, এই পে-কমিশন নিয়ে ‘হতাশা’ লুকিয়ে রাখতে পারলেন না তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী সংগঠনের শীর্ষনেতাও! আর তাই, রাজ্য সরকার ‘সুখবর’ দিতে চাইলেও, এই ঘোষণা কার্যত রাজ্য সরকারি কর্মীদের ‘ভিখিরির’ মর্যাদা দিল – জাতীয় তীব্র ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের। পুজোর মুখে রাজ্য সরকারের দেওয়া ‘সুখবরের’ প্রতিক্রিয়া নিতে গিয়ে – কার্যত গণক্ষোভের যে যে তীব্র আঁচের আভাস আমরা পেলাম – তাই তুলে ধরলাম আপনাদের সামনে –

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বাড়ি ভাড়া ভাতা কমিয়ে ১৫ থেকে ১২ শতাংশ করে দেওয়া হল – কলকাতা শহরে বাড়ি ভাড়া তো দিনদিন বাড়ছে। তাহলে কি রাজ্য সরকার চায় যে ৫০ মেইল দূরের মফস্বল থেকে ভিড় ঠেলে এসে কর্মীরা কাজ করুন? ডিএ নিয়ে স্যাটের নির্দেশ ১ বছর বা পে-কমিশন যেটা আগে হবে তার আগে ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে, কিন্তু সেই ডিএ নিয়ে একটি শব্দও নেই! ফলে, এ থেকে আশঙ্কা করাই যায় যে আবার ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকার আইনি পথে যাবে! এছাড়া কর্মচারীদের ‘ভিখিরি’ মনে করে এরিয়ার টুকুও দিল না রাজ্য সরকার! চার বছরের এরিয়ার দেওয়া হয় নি – আজ পর্যন্ত ভূ-ভারতে কোনো পে-কমিশনে এ জিনিস হয় নি! আমাদের তো সরকার ‘ভিখিরি’, ‘দয়ার পাত্র’ মনে করে যা খুশি দিল! এ সরকারি কর্মচারীদের মস্ত বড় অপমান – এর বিরুদ্ধে পুজো মিটলেই বৃহত্তর আন্দোলনে নামতেই হবে।


– দেবাশীষ শীল, সরকারি কর্মচারী পরিষদ

রাজ্য সরকার প্রায় ৪ বছর বাদে কর্মচারী সমাজ, শিক্ষক মহাশয় দের ও প্রবীণ অবসরপ্রাপ্ত দের প্রতি চরম আর্থিক বঞ্চনা, বিভ্রান্তিকর ও প্রতারণা মূলক ঘোষণা করেছে। বকেয়া ৪১% ডিএ ঘোষণা হল না বা এরিয়ার কি হবে? স্বাভাবিকভাবে আমাদের রাজ্যের কর্মচারী সমাজ, শিক্ষক মহাশয় ও অবসরপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রবল ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এই বিভ্রান্তিকর ও প্রতারণা মূলক ঘোষণার তীব্র বিরোধিতা নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রী-সহ মন্ত্রীদের লক্ষাধিক টাকার বেতন বৃদ্ধি, ক্লাব-পুজো-খেলা-মেলা-উৎসব-কার্নিভ্যাল দেদার হরিলুটের মত স্বেচ্ছাচাররের সাথে খরচ হচ্ছে। আর কর্মচারী সমাজ ও তাদের পরিবার, শিক্ষক মহাশয় ও প্রবীণ অবসরপ্রাপ্ত দের সামাজিক সম্মানে আঘাত করা সহ চরম আর্থিক বঞ্চনা করা হচ্ছে। যা ভূ-ভারতে কোথাও হচ্ছে না। দেশের সব কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা পে-কমিশন ও ডিএর আর্থিক সুবিধা ভোগ করছে। আমরা এই পাহাড় প্রমাণ বঞ্চনার প্রতিবাদে সরকারকে পুনরায় বিবেচনার জন্য বলছি। অন্যথায় আপামর কর্মচারী সমাজের স্বার্থে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি অর্থাৎ প্রশাসনকে স্তব্ধ করে দাওয়ার মত কর্মসূচি নেবো – এই হুঁশিয়ারি দিচ্ছি।


– বিজয় শঙ্কর সিংহ, কো-অর্ডিনেশন কমিটি

দীর্ঘতম প্রতীক্ষার পর পে-কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হতে চলেছে। সেখানে অর্থমন্ত্রীর বিবৃতি নতুন কোনো ইঙ্গিতবাহী হয় নি। বরঞ্চ আকাশছোঁয়া বাজারদরের কাছে যখন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা পর্যদুস্ত, তখন এইচআরএ কমিয়ে দেওয়া তাঁদের মানসিকভাবে ভীষণ আঘাত করবে। তাছাড়া ডিএর মত জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে নিশ্চুপ থেকে অর্থমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের আরও হতাশ করেছেন। পেনশনার সংক্রান্ত ঘোষণা না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে তাঁরাও অখুশি। সবমিলিয়ে, বর্তমান রাজ্য সরকারের কাছে যে আকাশচুম্বী প্রত্যাশা ছিল কর্মচারীদের, তা রাজ্য সরকার সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারে নি।


– মনোজ চক্রবর্তী, সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন

নতুন পে-কমিশন হবে – তার মধ্যে থাকবে বেসিক, এইচআরএ আর ডিএ। সেই ডিএ যে আমাদের সাংবিধানিক অধিকার, তা তো হাইকোর্ট জানিয়েই দিয়েছে। অথচ এই ঘোষণায় ডিএ নিয়ে কোনো কথাই নেই। তাহলে আমাদের বেতন কি ডিএ বাদ দিয়েই? সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় ১৯৭৫ সালে ১৫% এইচআরএ করেছিলেন, ৩৪ বছরে বাম আমলে তা ১%-ও বাড়ে নি! আর তৃণমূলের ৮ বছরের জামানায় এসে টি ৩% কমে গেল! বাড়ি ভাড়া কি ভারতবর্ষে তথা বাংলায় কমে গেছে? অনেকে বলছেন কেন্দ্র সরকার এইচআরএ ৩০% থেকে কমিয়ে ২৪% করেছে। কিন্তু, কেন্দ্র সরকারের তো ৩ টি স্ল্যাব আছে, তাহলে রাজ্য সরকার যদি কেন্দ্রের অনুকরণেই করে তাহলে এ-ওয়ান সিটির কর্মীদের ২৪% এইচআরএ দিক। তাছাড়া কেন্দ্র যখন বাড়িয়ে ৩০% করে দিয়েছিল, তখন রাজ্য তো আমাদের বাড়ায়নি! তাহলে কোন যুক্তিতে তা কমিয়ে এখন বঞ্চনা বাড়ানো হচ্ছে?


– সুবীর সাহা, আইএনটিইউসি

আমাদের এরিয়ার নিয়ে একটি কথাও বলা হয় নি, আমাদের আশঙ্কা – রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একটা বড় প্রাপ্য এখন থেকে আত্মসাৎ করবে রাজ্য সরকার। এইচআরএ নিয়ে আমাদের সবসময় দাবি ছিল কেন্দ্রের সর্বোচ্চ হারে পাওয়ার। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় তা বাড়িয়ে ১০% থেকে ১৫% করে মান্যতা দেন। কিন্তু কেন্দ্র যখন তা বাড়িয়ে ৩০% করে, তখন বিগত বাম সরকার তা বাড়ায়নি। তাই এইচআরএ নিয়ে সেই সময় থেকেই আমরা বঞ্চিত। কিন্তু বাম সরকার তা কমায়ও নি। কিন্তু, এই সরকার তা আরও ৩% কমিয়ে দিয়ে নজিরবিহীন বঞ্চনার দৃষ্টান্ত রাখল। কেন্দ্র সরকার ৩০% থেকে কমিয়ে ২৪% করেছে, তাহলে কেন্দ্রের পদানুসরন করতে হলে তো আমাদের এইচআরএ ১৫% থেকে ২৪% করা উচিৎ ছিল। অন্তত ১৫%-ও রাখা যেত – কিন্তু, এ তো প্রতি পদেই নজিরবিহীন বঞ্চনার কথা!


– বিপুল রায়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন

গত পে-কমিশনে ২৭ মাসের এরিয়ার পাওয়া গেল না, সেটা নিয়ে যারা সবথেকে বেশি হৈচৈ করেছিল, তারা আজ সরকারে এসে ৪৮ মাসের এরিয়ার বঞ্চনা করে কর্মচারীদের স্বার্থে চরম আঘাত হানল। যে বঞ্চনাকে প্রতিবাদের অস্ত্র করে ক্ষমতায় এসেছিল এই সরকার, শাসকের আসনে বসে তার দ্বিগুন বঞ্চনা করে দেখিয়ে দিল। এই সরকারকে কি কোনোভাবেই কর্মচারীদের হিতাকাঙ্খী বা বন্ধুমনোভাবাপন্ন বলা যায়? এরিয়ার, ডিএ, এইচআরএ – এই পে-কমিশনের প্রতি পদে শুধুই বঞ্চনা! তাহলে পে-কমিশন কি আসলে বেতন-বঞ্চনা বাড়ানোর জন্য ঘোষিত হল? কর্মচারী স্বার্থবিরোধী এই পে-কমিশন কিছুতেই মেনে নিচ্ছি না। আগামীদিনে রাস্তায় নেমে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমেই আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া ছাড়া রাজ্য সরকার আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা রাখল না।


– সঙ্কেত চক্রবর্তী, স্টিয়ারিং কমিটি

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!