এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধং দেহি মনোভাব থেকে এখনই সরছেন না স্পষ্ট ইঙ্গিত রাজ্যপালের

রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধং দেহি মনোভাব থেকে এখনই সরছেন না স্পষ্ট ইঙ্গিত রাজ্যপালের


 

রাজ্য বনাম রাজ্যপালের সম্পর্কের তিক্ততা বর্তমানে চরম আকার ধারণ করেছে। রাজভবনের প্রধান ব্যক্তির পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই প্রায় বিভিন্ন ইস্যুতে তাঁর সঙ্গে রাজ্য সরকারের দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছিল। আর বিভিন্ন ঘটনায় রাজ্যপালের অতি সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে।

সম্প্রতি এই ব্যাপারে নাম না করে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হয়ে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। আর সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের সূচনাপর্বের আগে সর্বদলীয় বৈঠকে সেই রাজ্যপালের অতিসক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের সংসদীয় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। শুধু অভিযোগ জানানোই নয়, সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনে এই ব্যাপারে সংসদে সরব হতে দেখা যায় লোকসভায় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার ডেরেক ও’ব্রায়েনকে।

আর তৃণমূলের পক্ষ থেকে সংসদে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের অতিসক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে রাজ্যপাল হয়ত বা কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থা পালন করবেন বলে মনে করেছিল একাংশ। তবে তিনি রাজ্যে সাংবিধানিক প্রধান। তার পদ যে মাথা নোয়ানো পদ নয়, তা প্রমাণ করে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার।

সূত্রের খবর, সোমবার শিলিগুড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে এই ব্যাপারে তৃণমূলের তোলা অভিযোগের জবাব দেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল। তার বিরুদ্ধে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর যে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস করেছে, এদিন তাকেই কোট করে পাল্টা জবাব দেন জাগদীপ ধনকার। তিনি বলেন, “সংবিধান রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। তাই কোনো পরিস্থিতিতেই আমি আমার কর্তব্য থেকে সরব না। রাজ্যের মানুষের সেবা করব। এজন্য রাজ্যের সব জায়গায় যেতে হবে। এর ফলে কারো অনুমতির প্রয়োজন নেই।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

অন্যদিকে কিছুদিন আগেই শিলিগুড়ির একটি ঘটনার কথা তুলে ধরে এদিন রাজ্য সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে দেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, “কয়েকদিন আগে বণিকসভার একটি অনুষ্ঠানে শিলিগুড়িতে এসেছিলাম। সেবার প্রশাসনের কেউ সার্কিট হাউসে আসেনি। এদিন বিমানবন্দরে জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার কেউ ছিলেন না। উত্তর 24 পরগনায় গিয়েছিলাম। সেখানেও জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা ছিলেন না। 50 দিন কেটে গেল। রাজ্যের মুখ্যসচিব দেখা করার সময় পাননি। আমার জেলা সফরে জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার কেউ উপস্থিত থাকছেন না। তাহলে আমি সমান্তরাল প্রশাসন কিভাবে চালালাম! বিমানবন্দর থেকে এখানে আসার সময় মুখ্যমন্ত্রীর অনেকগুলো কাট আউট দেখলাম। আমার তো একটাও দেখিনি! তাহলে আমি কিভাবে সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছি! আমার কর্তব্য আমি জানি। আমি সংবিধান সম্পর্কে সচেতন।”

তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বুলবুলের ভয়াবহতায় মুখ্যমন্ত্রীর কাজ নিয়ে যে তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট, এদিন সেই কথাও জানিয়ে দেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার। এদিকে রাজ্যের মন্ত্রী রাজ্যপালের বিভিন্ন জেলা সফর নিয়ে তাকে “পর্যটক” বলে কটাক্ষ করায় এদিন তারও জবাব দেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল। তিনি বলেন, “আমি পর্যটক নই। তবে এই রাজ্যের পর্যটনশিল্পকে প্রমোট করছি। বলা হচ্ছে, আমি কেন্দ্রের এজেন্ট। তাহলে তাই। সংবিধান আমাকে সেই অধিকার দিয়েছে। রাজ্য এবং কেন্দ্রের মধ্যে যোগসূত্র রক্ষা করাই রাজ্যপালের কাজ। সেই ভূমিকা পালন করতে হলে কলকাতার বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংসদে তৃণমূলের তরফে রাজ্যপালের অতিসক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজ্য বনাম রাজ্যপালের তরজা থামবে বলে মনে করেছিল একাংশ। কিন্তু সোমবার সংসদে তৃণমূল এই ব্যাপারে প্রশ্ন তোলার সাথে সাথেই শিলিগুড়িতে বসে তৃণমূলের প্রশ্নের জবাব দিয়ে সরকারের সাথে দূরত্ব আরও বাড়িয়ে দিলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। যে ঘটনা রাজ্যের সাংবিধানিক বনাম প্রশাসনিক পরিকাঠামোর তরজাকে আরও অনেকাংশেই বাড়িয়ে দিল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!