এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > রাজ্যজুড়ে উড়ালপুলের বেহাল দশার দায় রেলের উপর চাপিয়ে নবান্নে বৈঠকে রাজ্য

রাজ্যজুড়ে উড়ালপুলের বেহাল দশার দায় রেলের উপর চাপিয়ে নবান্নে বৈঠকে রাজ্য

রাজ্যে সেতুগুলির বেহাল অবস্থা। দীর্ঘদিন ধরেই সেই সেতুগুলির রক্ষণাবেক্ষণের অভাব উঠছিল। তবে এবার এই গোটা ঘটনায় রেলের দিকেই অভিযোগের আঙুল ওঠালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দাবি, শহর এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে উড়ালপুলের রেলের অংশ যথাযথ দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ার কারণেই বিপদ বাড়ছে। আর উড়ালপুলের বেহাল দশার দায় রেলের উপর চাপিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এহেন বক্তব্য নিয়েই এবার শুরু হয়েছে তীব্র গুঞ্জন।

সূত্রের খবর, সোমবার বিকেলে দূর্গাপূজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে বক্তব্য রাখতে উঠে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “টালা ব্রিজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেতু। বলা হয়েছে, তিনটনের বেশি ওজনের গাড়ি যাবে না। অনেকে বলছেন, জ্যাম হচ্ছে। জ্যাম তো ইচ্ছে করে করা হচ্ছে না। মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। আমরা এসে রেলকে বললাম, ব্রিজের অবস্থাগুলি দেখ। এখন রেল বলছে, বেহাল অবস্থা। তাহলে এতদিন কেন দেখেনি! না পারছি গিলতে, না পারছি ওগরাতে। কি করব! সব একসাথে ভেঙে দেব! তাহলে মানুষ যাতায়াত করবে কি করে! চেতলা ব্রিজ এতদিন রেলের হাতে থাকলেও এখন বলছে, সেই ব্রিজের অবস্থা খারাপ। মাঝেরহাট ব্রিজ রেলের অংশটা ভেঙে পড়ার পর রেলের কাছে অনুমতি চাইছিলাম। দুই তিন দিন হল রেল অনুমতি দিয়েছে। আরও আগে এই অনুমতিটা দিলে ভালো হত। কোথায় কি হয়েছে, বোঝাই যাচ্ছে না। ফেলে রেখে দিলে মানুষ মারা গেলে তখন তো আমাকে ধরবে!”

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পুজোর মুখে যদি রাজ্যের কোনো একটি সেতু ভেঙে পড়ে, তাহলে চরম বিপাকে পড়বে শাসকদল। সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী রেলের বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কেউই রেলকে দোষারোপ করবে না। বরঞ্চ রাজ্য সরকারের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলবে। আর তাইতো আগেভাগেই পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে রেলের হাতে থাকা সত্ত্বেও অনেক ব্রিজের কাজ ঠিকঠাক হয়নি বলে নিজেদের সরকারকে সমালোচনার মুখ থেকে বাঁচাতে প্রবল চেষ্টা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলে মত বিশ্লেষকদের।

তবে বাংলার প্রশাসনিক প্রধান এই ব্যাপারে রেলকে দোষারোপ করলেও তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেল এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্ত ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা। তাদের দাবি, প্রত্যেকটা জায়গায় প্রতিনিয়ত নজরদারি করা হয়।এদিকে রাজ্যের অনেক সেতুরই যে সংকটজনক অবস্থা, তা অনুধাবন করে পুজোর সময় যাতে কোথাও কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য এদিন নবান্নে বৈঠক করতে দেখা গেল রাজ্য প্রশাসনকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, নবান্নে মুখ্যসচিব মলয়কুমার দের উপস্থিতিতে রেলের সঙ্গে রাজ্য সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহন এবং পূর্ত দপ্তরের সচিবরা। জানা গেছে, এই বৈঠকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সাতরাগাছি, সোদপুর, বেলঘড়িয়া, বেলগাছিয়া, বর্ধমান, বীরভূম, উত্তরবঙ্গ সহ সমস্ত উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে রেল যেন তাদের রিপোর্ট দেয়, তা জানানো হয়।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, রাজ্যের অনেক সেতুই ভয়াবহ জায়গায় অবস্থান করছে তা ভালই জানে রাজ্য এবং রেল উভয়ই। কিন্তু এবার পুজোর মরশুমে সাধারণ মানুষ যাতে বিপদে না পড়ে, তার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই সেতুর ভয়াবহতা নিয়ে রেলের পর্যবেক্ষণ ত্রুটির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে নিজেদের সরকারকে সমালোচনার মুখ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও এবং নবান্নে এই ব্যাপারে তড়িঘড়ি মুখ্যসচিবকে দিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করালেও আদৌ কতটা এই ব্যাপারে সমস্যার সমাধান হবে!

এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। তবে সাধারণ মানুষ চাইছেন, তাদের সঙ্গে রেল বা রাজ্যের কোনো সম্পর্ক নেই। যদি কোনো একটা সেতুতে কোনো একটা দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে আখেরে ক্ষতি হবে সেই সাধারণ মানুষদের। তাই তারা চাইছেন, দুই পক্ষ একে অপরের দিকে অভিযোগ না তুলে বরঞ্চ এই সেতু সারাইয়ের দিকেই এখন মনোনিবেশ করুন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!