এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > শুভেন্দু অধিকারীর জীবনে কি গেরুয়া প্রভাব বাড়ছে? নতুন পদক্ষেপে বাক্যহারা তৃণমূল, শুরু জল্পনা

শুভেন্দু অধিকারীর জীবনে কি গেরুয়া প্রভাব বাড়ছে? নতুন পদক্ষেপে বাক্যহারা তৃণমূল, শুরু জল্পনা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একটা সময় শাসকদল তৃণমূলের একজন দাপুটে যোদ্ধা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর প্রচেষ্টায় রাজ্যের জেলায় জেলায় ঘাস ফুলের চাষ সফলভাবে সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু দলের সংগঠন গত পরিবর্তনের পর বেশ কিছু জেলার ক্ষমতা হারান পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এরপর রাজ্য সরকারে থেকেও দলের কাছে অনেকটাই ম্লান হয়ে পড়েছেন তিনি, দলের সঙ্গে যেমন দূরত্ব বেড়েছে তাঁর, তেমনি বারবার দলহীন জনসংযোগ করছেন তিনি ও তাঁর অনুগামীরা। যেখানে দলের নাম ব্যবহার না করে, সরাসরি তাঁর নামে চলছে নানান অনুষ্ঠান। তিনি সরাসরি সমস্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকলেও, তাঁর অনুগামীরা তাঁর নাম নিয়ে বিভিন্ন জনসংযোগ মূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে।

সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা বিজয়া সম্মেলন অনুষ্ঠিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র গেরুয়া রঙের। আমন্ত্রণপত্রতে রাজস্থানি পাগড়ি মাথায় শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেখা যাচ্ছে। আমন্ত্রণপত্রে প্রশাসন, শাসক দল তৃণমূলের কোন নাম নেই। অনুষ্ঠানের আয়োজকরা নিজেদের পরিচয় হিসেবে লিখেছেন, ‘আমরা দাদার অনুগামী’। বিজয়া সম্মেলনি অনুষ্ঠানের এই আমন্ত্রণপত্র ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে গেছে রাজনীতি মহলে। অনেকেই বলতে আরম্ভ করেছেন, তবে কি শুভেন্দু অধিকারী গেরুয়া শিবির ভুক্ত হতে চলেছেন?

সম্প্রতি পুরুলিয়া জেলায় শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা বিজয়া সম্মিলনীর আমন্ত্রণপত্র বিভিন্ন মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। পুরুলিয়াতে এই অনুষ্ঠান হবে আগামী ৭ ই নভেম্বর। এই অনুষ্ঠানের আগে আবার আজ শনিবার মেদিনীপুর শহরেও এরকম
একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ক্লাব সমন্বয় কমিটি। সেখানেও শুভেন্দু অধিকারীর নাম আছে, তবে প্রশাসন, শাসক দল তৃণমূলের নাম নেই। এদিকে আবার শুভেন্দু অধিকারী দল ও সরকারের সঙ্গে বেশ কিছু দিন ধরেই দূরত্ব রেখে চলছেন। দলের কর্মসূচি বা মন্ত্রিসভার বৈঠকে বেশি একটা দেখা যায় না তাঁকে। এদিকে তাঁকে দলে টানতে হাত বাড়াচ্ছে বিজেপি। সব নিয়েই একটা টানটান পরিবেশ।

পুরুলিয়াতে আগামী ৭ ই নভেম্বর বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হতে চলেছে ।সেই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা তথা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক গৌতম রায় জানালেন যে, তাঁরা সকলেই তৃণমূলের সৈনিক, কিন্তু দলের নামে কর্মসূচির আয়োজন করলে সে ক্ষেত্রে দলের অনুমতি নেওয়ার ব্যাপার থাকে। এছাড়া দলের নাম অনুষ্ঠান করলে যারা সরাসরি তৃণমূল করেন না, সেসব মানুষের ইচ্ছে থাকলেও তারা অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পারেন না। এ কারণেই শুভেন্দু অধিকারীর ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা এই নামেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। তাদের এই অনুষ্ঠানের ব্যানার বিভিন্ন ব্লকে টাঙানো হয়েছে বলে তিনি জানালেন। শুভেন্দু বাবুর অনুগামীরা আশা করছেন যে, তাদের এই বিজয়া সম্মেলনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী স্বয়ং।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

গতকাল শুক্রবার এই অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে তৃণমূল দলের পুরুলিয়া জেলা কমিটির চেয়ারম্যান সেইসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো জানালেন যে, শুভেন্দু অধিকারী ছবি দেওয়া আমন্ত্রণপত্র ছড়িয়ে দিয়ে বিজয়া সম্মেলনের অনুষ্টানের আয়োজন করা হয়েছে বলে, তিনি জানেন না। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী জানালেন যে, তৃণমূল দলে থেকে মোহভঙ্গ হয়েছে অনেকেরই।

তবে, গতকাল অনেকবার চেষ্টা করেও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নন্দীগ্রাম বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান মেঘনাদ পাল এ সম্পর্কে জানালেন যে, এই সম্মেলনের কর্মসূচিটি একেবারে অরাজনৈতিক। এ কারণেই হয়তো উদ্যোক্তারা চেয়েছেন মন্ত্রী বা দলের পরিচয় না রেখে তাঁর জননেতার ভাবমূর্তি সামনে ধরে আনতে। অনুষ্ঠানের গেরুয়া কার্ড সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, উদ্যোক্তারা নিজেদের পছন্দের মত এটা করে থাকবেন।

তবে দলহীন জনসংযোগ তথা গেরুয়া কার্ড ব্যবহার করে, রাজস্থানী কায়দায় শুভেন্দু অধিকারী ছবি দেখে কিছুতেই অস্বস্তি চেপে রাখতে পারছে না শাসকদল তৃণমূল। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কবিগুরুর কবিতার পংক্তি উদ্ধৃত করে জানালেন, ” রথ ভাবে আমি দেব, পথ ভাবে আমি, মূর্তি ভাবে আমি দেব, হাসেন অন্তর্যামী ” ফিরহাদ হাকিমের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারীর পিতা শিশির অধিকারী জানালেন, ” উনি কেন এ কথা বললেন, তার ব্যাখ্যা ফিরহাদই করতে পারবেন। এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।’’ তবে তৃণমূলের জনৈক শীর্ষ নেতা গতকাল জানিয়েছেন যে, বিজয়াদশমীর পরেও দলনেত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছিল শিশির অধিকারীর।

তবে শাসকদল তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে ব্যাখ্যাই দেওয়া হোক না কেন, শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের এই কার্যকলাপকে ঘিরে কিছুতেই স্বস্তিতে নেই শাসকদল তৃণমূল। গেরুয়া আমন্ত্রণ পত্র, রাজস্থানি পাগড়ি মাথায় শুভেন্দু অধিকারীর ছবি সমস্ত কিছুই জ্বালা ধরিয়েছে শাসক দলে। অনেকে আশঙ্কা করছেন, তৃণমূল ছেড়ে কি এবারে বিজেপির হাত ধরতে চলেছেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!