এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > আমাদের আচার-আচরণ ব্যবহার ও ঔদ্ধত্য মানুষ থেকে সরিয়ে দিয়েছে: বিস্ফোরক হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা

আমাদের আচার-আচরণ ব্যবহার ও ঔদ্ধত্য মানুষ থেকে সরিয়ে দিয়েছে: বিস্ফোরক হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা


2011 সালে বামেদেরকে সরিয়ে বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মা-মাটি-মানুষের সরকার। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে সেইভাবে আর মুখ ফিরে তাকাতে হয়নি তৃণমূল কংগ্রেসকে। যতগুলো নির্বাচন এসেছে, প্রায় সব নির্বাচনেই অনায়াসেই তাদের বৈতরণী পার করেছে শাসক দল।

কিন্তু বাধাটা এসেছে, সদ্যসমাপ্ত 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে। 42 এ 42 এর স্লোগান দিয়ে 22 টি আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। অপরদিকে উত্তরবঙ্গ জুড়ে আটটি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সাতটি লোকসভা কেন্দ্র নিজেদের দখলে রেখে সারা রাজ্যব্যাপী 18 আসন নিজেদের দখলে নিয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।

আর এই পরিস্থিতিতে ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করতে গিয়ে তৃণমূল প্রত্যক্ষ করেছে, ক্ষমতায় থাকার সুবাদে তাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে অহংকার বোধ জাগ্রত হয়ে উঠেছে। আর তার কারণেই মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ফলে এবারের লোকসভা নির্বাচনে তাদের ফল অত্যন্ত খারাপ হয়েছে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের।

আর এই পরিস্থিতিতে এবার লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল খারাপ হওয়ার কারণ তুলে ধরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আরও বেশি করে সকলকে জনসংযোগ করার নির্দেশ দিলেন রাজ্য তৃণমূল সভাপতি তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, সোমবার সুব্রতবাবু কোচবিহার পৌঁছে জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে আয়োজিত বিজয়া সম্মেলনে যোগ দিয়ে দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “আমার বলতে কোনো দ্বিধা নেই 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর আমাদের দলের কর্মীদের মধ্যে একটা মানসিক প্রস্তুতি তৈরি হল, বোধহয় বাংলার মাটিতে মানুষের পাশে না থাকলে এই রাজনৈতিক দল বছরের পর বছর ক্ষমতায় থাকবে

। কিন্তু মানুষের ক্ষমতা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের থেকেও বেশি। 2016 সালের পর দেখেছি, কোথাও কোথাও আমাদের নেতা কর্মীদের আচরণ ও ঔদ্ধত্য মানুষ থেকে আমাদের দূরে সরিয়ে দিয়েছে। যারা দূরে সরিয়ে দিয়েছেন, যারা আমার সহকর্মী আছেন, তারা লক্ষ্য করে বলবেন, যারা দূরে সরিয়ে দিয়েছেন, তারাই বলছেন যে, কিছু নয়।

আপনারা সবাই সংঘবদ্ধভাবে চলুন। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা যতটা বিচলিত ছিলাম দলীয় কর্মী হিসেবে, তার থেকেও বেশি বিচলিত ছিলেন মানুষ। কাজেই সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলার চেষ্টা করুন। দল কর্মসূচি দিচ্ছে। “দিদিকে বলো” কর্মসূচি করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ রক্ষা করুন।”

বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, অবশেষে হয়ত বা রাজ্য তৃণমূল সভাপতির বোধোদয় হল। লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার জেলা সহ অন্যান্য জেলাগুলিতে যেভাবে তৃণমূলকে হারের মুখ দেখতে হয়েছে, তাতে সেই পরিস্থিতি থেকে দলকে জেতানোর জন্য এদিন সুব্রত বক্সি চাপে পড়ে এই ধরনের মন্তব্য করলেন।

কিন্তু সমালোচক মহলের একাংশ বলছেন যে, সুব্রতবাবু দলের কর্মীদের “ঔদ্ধত্য হয়েছে” বলে দাবি করছেন, সেই সুব্রতবাবুই তো সাধারণ মানুষ তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন। তাহলে তিনি কি এখন নিজের আচরণকেও ধীরে ধীরে সমঝে নেবেন! প্রশ্নটা তুলতে শুরু করেছে দলের একাংশও।

এদিকে এদিন এই বিজয়া সম্মেলনীর মঞ্চ থেকে সম্প্রতি কোচবিহারের পাতলাখাওয়ায় যুব তৃণমূল নেতা মজিরুদ্দিন সরকারের মৃত্যু নিয়েও বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সুব্রত বক্সি। তিনি বলেন, “মহাত্মা গান্ধী সংকল্প যাত্রার নাম করে ভারতীয় জনতা পার্টি একটা সভা করে, একটা যাত্রার প্রচেষ্টা চালিয়ে সংঘাত ঘটিয়ে আমাদের এক সহকর্মীর মৃত্যু ঘটেছে। আজকে যখন কোচবিহার এসেছি, তখন আমরা ওই সহকর্মীর বাড়িতে যাব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃত ব্যক্তির পরিবারের প্রতি কিছু বার্তা দিয়েছেন। সেটা পৌঁছে দিতেই যাব।”

এদিকে বিজয়া সম্মিলনী শেষ করে এদিন পাতলাখাওয়ায় মৃত তৃণমূল যুব কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী এবং পুত্রের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি। সব মিলিয়ে একদিকে দলীয় কর্মীদের ঔদ্ধত্য দূর করে জনসংযোগে যাওয়ার বার্তা এবং অন্যদিকে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলার বার্তা দিলেন সুব্রত বক্সি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!