জাতীয় পতাকা ও হাজার হাজার মানুষের মোমবাতি মিছিলকে সাক্ষী রেখে পঞ্চভূতে বিলীন হলেন অমর শহীদ সুদীপ বিশ্বাস নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য February 18, 2019 গত 14 ই ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনের হামলায় প্রাণ গিয়েছে ভারতের প্রায় 42 জন জওয়ানের। আর যে 42 জনের মধ্যে বাংলার বাবলু সাতরা ও সুদীপ বিশ্বাসেরও প্রাণ কেড়ে নিয়েছে সেই পাকিস্তানের জঙ্গিরা। কিন্তু ঘরের ছেলের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে শনিবার গভীর রাতে সেই শহীদ সুদীপ বিশ্বাসের কফিনবন্দি দেহ পলাশীর শ্মশানের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় হাঁসপুকুরিয়া, পলাশীপাড়া, তেহট্ট, পলাশী সহ নদীয়ার বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত হন। যেখানে রাস্তার দু’ধারে সারিবদ্ধভাবে হাজার হাজার মোমবাতি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় সাধারণ মানুষকে। কারো চোখে জল, আবার কারো মুখে স্লোগান। কেউ বা বলছেন, “পাকিস্তান নিপাত যাক, সন্ত্রাসবাদ নিপাত যাক।” আবার কারওর ভাষায়, “সুদীপ বিশ্বাস অমর রহে।” এদিন সেই শহীদ বীর জওয়ান সুদীপ বিশ্বাসের দেহ গ্রামে পৌছতেই তার প্রিয় জায়গা পৌষকালীতলায় মঞ্চ করে কিছুক্ষণ তা শায়িত রাখা হয়। আর সেখানেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, রত্না ঘোষ, তৃণমূল বিধায়ক গৌরীশংকর দত্ত, তাপস সাহা, সিআরপিএফের ডিআইজি ভিকে সিং, জেলার পুলিশ সুপার রুপেশ কুমার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ণব বিশ্বাস, তেহট্টের মহকুমাশাসক সুধীর কোন্তম জেলা প্রশাসনের একাধিক আধিকারিকরা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিকে জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা সেই শহীদ সুদীপ বিশ্বাসকে সম্মান জানানোর পর সেখানে একে একে এলাকার মানুষেরা ঘরের ছেলে সুদীপকে চোখের জলে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এদিকে এরপরই কফিনবন্দি সুদীপ বিশ্বাসের দেহ তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা সন্ন্যাসী বিশ্বাস, মা মমতা দেবী এবং বোন ঝুম্পা বিশ্বাস। কাঁদতে কাঁদতে ঝুম্পা বলেন, “দাদাকে জঙ্গিদের হাতে মরতে হবে এমনটা কোনোদিনও কল্পনা করতে পারিনি।” এদিকে বাড়িতে পরিবারের লোকেরা শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর সেই সুদীপের কফিনবন্দি দেহ রাতেই শেষকৃত্যের জন্য পলাশীর শশানঘাটে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে পা মেলান অসংখ্য মানুষ। রাস্তার ধারে তখন মোমবাতি নিয়ে দাঁড়িয়ে সারিবদ্ধ জনতা। সকলের মুখে চোখে ফুটে উঠছে আক্ষেপের ছাপ। অনেকেই বলছেন, “সুদীপ ওর বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে ছিল। ওর মৃত্যুতে সকলেই অনাথ হয়ে গেল। রাজনৈতিক নেতারা খোজ নিলেও পরে আর কারোরই এই সুদীপের আত্মত্যাগের কথা মনে থাকবে না। অবিলম্বে এই জঙ্গিদের নিকেশ করতে হবে সরকারকে। তাহলেই সুদীপের আত্মা শান্তি পাবে।” সব মিলিয়ে ঘরের ছেলে সুদীপের কফিনবন্দি দেহ গ্রামে ফিরে আসায় সেই সুদীপ বিশ্বাসের নামের আগে শহীদ জওয়ান বসে যাওয়ায় চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন না গোটা নদীয়াবাসী। আপনার মতামত জানান -