আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে হঠাতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার অত্যন্ত জনবিরোধী, দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আর তাই নরেন্দ্র মোদির মত নেতাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তাঁর বাজি দেশের আঞ্চলিক দলগুলি। তিনি বিজেপিকে হারাতে, একের বিরুদ্ধে এক ফর্মুলার কথা জানিয়ে দিয়েছেন।

আর তৃণমূল নেত্রীর সেই প্রস্তাবিত পথেই উত্তরপ্রদেশে গেরুয়া ঝড় থামাতে দীর্ঘদিনের বৈরিতা ভুলে জোট বেঁধেছেন বহুজন সমাজবাদী পার্টির মায়াবতী ও সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব। কংগ্রেসকে উত্তরপ্রদেশের এই মহাজোটের বাইরে রাখা হলেও জোটকে সমর্থন জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি, কলকাতার ব্রিগেড সমাবেশের মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেত্রী ঘোষণা করেন উত্তরপ্রদেশের এই মহাজোট নাকি সেখানে বিজেপিকে শূন্য করে দেবে – সেইজন্য আগাম অভিনন্দনও জানান তিনি।

কিন্তু, এবার সুপ্রিম কোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেলেন সেই জোটের অন্যতম নেত্রী মায়াবতী। ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মায়াবতী উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বিভিন্ন জায়গায় বিএসপি নেতা কাঁসিরাম ও তাঁর নিজের মূর্তি নির্মাণ করার নির্দেশ দেন। যে নির্মাণ কাজে মোট ২,৬০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। যার ফলে রাজ্যের তহবিলে ১১১ কোটি টাকার ঘাটতি পড়ে যায় বলে অভিযোগ ওঠে মায়াবতীর বিরুদ্ধে। কিন্তু, জনগণের টাকায় এই কাজ কেন হবে? এই প্রশ্ন তুলে সুপ্রিমকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল।

এতদিন পর্যন্ত এই ‘মূর্তি-কেলেঙ্কারি’ নিয়ে বিজেপি সরব হলেও মায়াবতীর বক্তব্য ছিল, ওই সব মূর্তির টাকা দলের শুভানুধ্যায়ীরা দিয়েছেন! কিন্তু, আজ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এই টাকা জনগনের টাকা। ফলে, জনতার টাকায় গড়া সমস্ত মূর্তির খরচের টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে মায়াবতীকে। যদিও, আগামী ২ রা এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন। কিন্তু, এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতামত, এরফলে বড়সড় ধাক্কা খেল ফেডারেল ফ্রন্ট। কেননা, বিজেপি এতদিন দাবি করে আসছিল – যে সকল নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তাঁরাই ওই ফ্রন্টে শামিল হয়েছেন। আর আজকের সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে সেই প্রচার উচ্চগ্রামে নিয়ে যাবে বিজেপি বলেই মনে করছেন তাঁরা।