তৃণমূলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম কথা হলে দ্বিতীয় কথা বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারীরা। প্রায় সকলেই একথা স্বীকার করে নেন। বিজেপি প্রভাবিত এলাকাগুলোতে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের তরফে দায়িত্ব পেয়ে ঘাসফুল ফোটানো শুরু করে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।

আর এবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে যখন গোটা দলকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঠিক তখনই প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমে শান্তি স্থাপনের আহ্বান জানালেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, শনিবার রাজ্যের 294 টি বিধানসভার মত নন্দীগ্রামেও এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে ধর্না কর্মসূচি পালিত হয়। যে কর্মসূচিতে উপস্থিত হন নন্দীগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

আর সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “ভোটের সময় রাজনীতি হবে। একে অপরের বিরুদ্ধে বলব। কিন্তু যখন আমরা ভোটে জিতে যাব, তখন সবার দায়িত্ব আমাদের। তাই কোনোরুপ অশান্তি সৃষ্টি না করে এনআরসির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক ভাবে আমাদের আন্দোলন করতে হবে। এই আন্দোলন করতে গিয়ে যারা বাস পুড়িয়েছে, ট্রেন ভেঙেছে, এটা কখনও সমর্থনযোগ্য নয়। তাই আমি আইন হাতে তুলে নেওয়ার বিরোধিতা করছি।”

এদিকে এদিনের সভা থেকে বিজেপিকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূলের হেভিওয়েট মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “ক্ষমতায় আসার আগে বিজেপি নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু আমরা দেখছি, তাদের প্রতিশ্রুতির মধ্যে একটি প্রতিশ্রুতিও তারা পূরণ করতে পারেনি। নোটবন্দি এবং জিএসটির ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে চলে গিয়েছে। বিজেপি সরকারের সময় দেড় হাজার জন আর্মি, প্যারা মিলিটারি এবং সিআরপিএফ শহীদ হয়েছেন।”

তবে এদিনের এই সমাবেশ থেকে শুভেন্দু অধিকারী সবথেকে যে বিষয়ে জোর দেন, তা হল শান্তি স্থাপন। কেননা নাগরিকত্ব সংশোধনী ইস্যুতে ইতিমধ্যেই অনেক সংগঠন রাস্তায় নেমে জ্বলন্ত বিক্ষোভ শুরু করেছে। যা নিঃসন্দেহে আইন-শৃঙ্খলাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। তাই তৃণমূলের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ আন্দোলন থেকে শুভেন্দু অধিকারী বিক্ষোভকারীদের সংযত থেকে শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানালেন। যা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে একাংশ। এখন শুভেন্দু অধিকারী এই আহ্বান জানালেও, বিক্ষোভকারীরা সংযত থেকে এই আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে পারে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।