এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > শুভেন্দু মাঠে নামতেই চাপে দিলীপ? গড়-রক্ষায় একাধিক পদক্ষেপ বিজেপি রাজ্য সভাপতির?

শুভেন্দু মাঠে নামতেই চাপে দিলীপ? গড়-রক্ষায় একাধিক পদক্ষেপ বিজেপি রাজ্য সভাপতির?


সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল যেমন 34 থেকে 22 এ নেমে এসেছে, ঠিক তেমনই একদা রাজ্যের পরিবর্তনের আঁতুড়ঘর তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত জঙ্গলমহলেও শাসকদলের ভোটব্যাংকে ধ্বস নামতে দেখা গেছে। যেখানে তড়িৎগতিতে উত্থান ঘটেছে বিজেপি।

কিন্তু এবার তৃণমূলের জঙ্গলমহলের পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী তৎপর হতেই নিজের গড় রক্ষায় বারবার খড়্গপুরে ছুটে আসতে দেখা যাচ্ছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। জানা গেছে, রবিবার ছুটির দিনে দিলীপ ঘোষ শহরের বোগদা ও খরিদা এলাকায় একটি জনসংযোগ কর্মসূচিতে যোগ দেন।

পাশাপাশি সোমবারও আবার শহরের বিভিন্ন জায়গায় এই কর্মসূচি করার কথা রয়েছে তার। দলীয় সূত্রের খবর, এদিন নিজের দলের সাথে একটি ঘরোয়া বৈঠকে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ খড়্গপুর বিধানসভা উপনির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেন। অতীতের তিনি যেভাবে এই বিধানসভা কেন্দ্রে জিতেছিলেন, ঠিক সেইভাবে যে প্রার্থী হবে তাকেই যাতে জয়যুক্ত করা যায় তার জন্য সকলকে নির্দেশ দেন তিনি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর লোকসভা ভোটেও এই খড়্গপুর শহরে তৃণমূল খুব একটা ভালো ফল করতে পারেনি। প্রায় ৪৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে তৃণমূল প্রার্থীকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যান দিলীপ ঘোষ। আর বিধানসভা ভোটে জয়ের পর লোকসভা ভোটে এত বড় ধাক্কা খেয়ে তৃণমূলের নেতা ও কর্মীদের মনে প্রবল হতাশা গ্রাস করতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় তৃণমূলের অনেকেই বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন।

কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলে তৃণমূলের খারাপ ফলাফল হওয়ার পরই সেখানে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সেই জঙ্গলমহলের দায়িত্ব পড়ে তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারীর ওপর। আর দায়িত্ব নিয়েই খড়্গপুরে দলকে ঘুরে দাঁড় করানোর উদ্যোগ শুরু করেন শুভেন্দুবাবু। ইতিমধ্যেই একাধিকবার তিনি এই শহরে এসে দলের নেতাদের সঙ্গে যেমন বৈঠক করেছেন, ঠিক তেমনই কর্মীদের বক্তব্যও শুনেছেন।

যেখানে মেদিনীপুর সহ খড়্গপুর লাগোয়া এলাকা থেকে বাছাই করা ৫০জন নেতা- কর্মীকে খড়্গপুর পুরসভার ৩৫ টি ওয়ার্ডের পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করে তাঁদের সঙ্গে নিজের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে তাঁদের মাধ্যমে দল পরিচালনা করার কাজ শুরু করেছেন।

এছাড়াও গোটা দলকে আন্দোলনমুখী করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের দপ্তর রেলকেই শুভেন্দুবাবু তার প্রথম এবং প্রধান টার্গেট হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রেলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ডিআরএম অফিস অভিযানের ডাক দেন তিনি। যেখানে তিনি বলেন, কেবলমাত্র খড়্গপুর শহর থেকেই সাত হাজার কর্মী জমায়েত করতে হবে। বাইরে থেকে লোক আনা যাবেন না।

পর্যবেক্ষকদেরও এই কাজে নামিয়ে দেন। ডিআরএম অফিস অভিযানে কর্মী জমায়েত অবশ্য সাত হাজারও ছাপিয়ে যায়। সেই জমায়েতে শুভেন্দু অধিকারী নিজে উপস্থিত থেকে দলের নেতা এবং কর্মীদের উৎসাহিত করেন। কিন্তু এই আন্দোলনের জেরে বিজেপি নেতাদের কপালে প্রবল চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করে।কিন্তু তার গড় শুভেন্দু অধিকারীর পদার্পণের পর হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, তা অনুধাবন করেই খড়্গপুরে ছুটে আসতে দেখা যায় দিলীপ ঘোষকে।

যেখানে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিভিন্ন দোকানে বসে আড্ডা দিয়ে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ করে নিজের জনদরদি ভাবমূর্তি তুলে ধরেন। তবে তিনি চলে যাওয়ার পর আবার খড়্গপুরে শুভেন্দুবাবুর আসার কথা হয়। ঠিক হয়, প্রয়াত যুবনেতা গৌতম চৌবের স্মরণসভায় তিনি বক্তব্য রাখতে আসবেন। আর তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারীর আসার খবর পাওয়া মাত্রই স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে এই ব্যাপারে তীব্র উৎসাহ দেখতে পাওয়া যায়। তবে শেষ মুহূর্তে অন্য জেলায় চলে যাওয়ায় শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে আর খড়্গপুরে আসা সম্ভব হয়নি।

এদিন এই প্রসঙ্গে শহর তৃণমূলের সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “শুভেন্দুবাবুকে নিয়ে পুজোর আগেই শহরে একটা বড় সভা করা হবে।” এই বিষয়ে দলের নেতা তথা কাউন্সিলার তুষার চৌধুরী বলেন, “শুভেন্দুবাবুর নেতৃত্বে এই শহরে দল এখন অনেকটাই সংঘবদ্ধ। তিনি সামনে থাকলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব। খড়্গপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে জয় ছিনিয়ে নেওয়াও সহজ হবে।” একাংশের মতে, তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী আসছেন, এই কথা শোনার পরই বিজেপি পাল্টা দিলীপ ঘোষকে দিয়ে তাদের কর্মসূচি ঠিক করে নেয়।

যেখানে শনিবার রাতেই খড়্গপুরে চলে আসেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তৃণমূল এবং শুভেন্দু অধিকারীর হাত থেকে নিজের গড়কে রক্ষা করতে বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ করতে দেখা যায় তাকে। তাহলে কি শুভেন্দু অধিকারীকে তিনি ভয় পাচ্ছেন! আর তাই শুভেন্দুবাবুর আসার খবর শুনে তিনি তড়িঘড়ি এখানে ছুটে আসলেন!

এদিন এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের দিলীপ ঘোষ বলেন, “এরকম জনসংযোগ আমি প্রতিদিন করি। সারা রাজ্যে করি। খড়্গপুরে যখনই আসি তখনই করি। কারণ মানুষ জানে, দিলীপবাবুকে রাস্তায় পাওয়া যাবে। তাই তাঁরা আসেন, কথা বলেন। আমরা ঠিক প্রমাণ হয়ে গিয়েছে বলেই তৃণমূল তা অনুকরণ করছে। খড়্গপুর বিধানসভা উপ নির্বাচনে আমরা লড়ব, জিতব। এনিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।”

সব মিলিয়ে এবার তৃণমূল বনাম বিজেপি লড়াই যেন জঙ্গলমহল এবং খড়্গপুরে শুভেন্দু অধিকারী বনাম দিলীপ ঘোষের লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!