প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বুধবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সুনীল মন্ডলের বাড়িতে একাধিক নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর তারপর থেকেই জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তাহলে কি এই সমস্ত নেতাদের নিয়ে একেবারে দলত্যাগ করবেন শুভেন্দুবাবু? অবশেষে যা আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তাই বাস্তব হতে চলল। বৃহস্পতিবার জল্পনায় সীলমোহর দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজের ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।

আর শুভেন্দু অধিকারীর পথে হেঁটেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজের ইস্তফা পত্র পাঠিয়ে দিলেন কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরী থেকে শুরু করে আসানসোল পৌরসভার প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। স্বাভাবিকভাবেই শুভেন্দু অধিকারীর সাথে কেউ যাবে না বলে এতদিন তৃনমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও, সেই শুভেন্দুবাবু দল ছাড়ার সাথে সাথেই যেভাবে একের পর এক নেতা পদ থেকে পদত্যাগ করা শুরু করলেন, তাতে অস্বস্তি ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে শাসকদলে।

বস্তুত, বুধবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মন্ডলের বাড়িতে উপস্থিত হন শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে একটি গোপন বৈঠক করতে দেখা যায় তাকে। আর এই বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরী থেকে শুরু করে আসানসোলের জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বলা বাহুল্য, কিছুদিন আগেই জিতেন্দ্র তিওয়ারি দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। এমনকি তাকে পদ থেকে সরিয়ে দিলে তার কিছু যায় আসে না, তা জানিয়ে দিতে দেখা গিয়েছিল তাকে।

কিন্তু এবার শুভেন্দুবাবু তৃণমূলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার সাথে সাথেই নিজেদের কাজ একধাপ এগিয়ে রাখলেন এই সমস্ত তৃণমূল নেতারা। যেখানে জিতেন্দ্র তিওয়ারির মত তৃণমূলের শীর্ষনেতা আসানসোল পৌরসভার প্রশাসক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়ে দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর এই ঘটনায় এখন তৃনমূলের ঘুম অনেকটাই উড়ে যাবে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

সকলেরই একটাই প্রশ্ন, শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগ করেছেন। কিন্তু তিনি পরবর্তী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত কি নেবেন? তিনি কি বিজেপিতে যাবেন, নাকি এই সমস্ত বিদ্রোহী নেতাদের সাথে করে নিয়ে নতুন টিম গঠন করবেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, সামনে নির্বাচনের আর কয়েকটা মাস বাকি। সেক্ষেত্রে নতুন টিম গঠন করে নির্বাচনে লড়ার মত শক্তি শুভেন্দু অধিকারী আদৌ পাবেন কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

তাই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে একাধিক তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা এবং জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে তিনি যদি বিজেপিতে যান, তাহলে তিনি অনেকটাই গুরুত্ব পেতে পারেন। তাই সেই বড় সিদ্ধান্তই নিতে চলেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। এক্ষেত্রে জিতেন্দ্র তিওয়ারি থেকে শুরু করে কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরী সরকারি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর পাশে থাকার বার্তা দিলেন বলেই দাবি একাংশের। যার ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি দ্বিগুনভাবে বেড়ে গেল বলে দাবি পর্যবেক্ষকদের। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।