এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > দলীয় নেতাদের ‘কালিদাস’ তকমা দিয়ে বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী

দলীয় নেতাদের ‘কালিদাস’ তকমা দিয়ে বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী

কথায় আছে, একসময় কালিদাস যে গাছে বসেছিলেন, সেই গাছের ডালই কাটছিলেন। তাই অনেকেই একটা গোষ্ঠী বা সংস্থায় থেকে যদি সেই সংস্থারই সর্বনাশ করেন, তাহলে তাকে কালিদাস বলে আখ্যা দেওয়া হয়। আর এবার যেন সেই ‘কালিদাস’ তকমা ঘোচানোই বহরমপুর শহরের তৃণমূল নেতাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সূত্রের খবর, শনিবার মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের এক সভায় জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী জেলার সদর শহরের নেতাদের ‘কালিদাস’ বলে কটাক্ষ করেন। তবে এই প্রথম নয়, এর আগে বেলডাঙায় কর্মীদের সামনেও তিনি একইভাবে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। কর্মীদের অনেকে বলছেন, পুরসভা নির্বাচন তাদের কাছে অগ্নিপরীক্ষা। সেই কঠিনপর্বে তারা যদি উত্তীর্ণ হতে পারেন, তাহলে সেই তকমা ঘুচে যাবে। আর না পারলে তাঁদের কালিদাস হয়েই থাকতে হবে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এবারের লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হওয়া শাসকদলের কাছে প্রেস্টিজ ফাইট ছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত শাসক দলকে ডুবিয়ে দিয়ে সেখানে জয়লাভ করে কংগ্রেস। আর তার ফলেই যে জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী এখানকার নেতাদের ওপর বেশ অসন্তুষ্ট, তা তার এই দলীয় নেতাদের “কালিদাস” দেওয়া তকমা থেকেই পরিষ্কার বলে মনে করছেন একাংশ। এদিন এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বহরমপুরের অনেকেই তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে হেঁটে কংগ্রেসে ভোট দিয়েছে। সব কিছুই আমার জানা আছে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে এই ব্যাপারে বহরমপুরের তৃণমূল নেতা অরিৎ মজুমদার বলেন, “দলে থেকে যাঁরা বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন তাঁদের সত্যিই ক্ষমা করা যায় না। শুভেন্দুবাবু বহু পরিশ্রম করেছিলেন। এরকম সংগ্রামী নেতাকে আমরা পেয়েও সম্মান দিতে পারিনি। কারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন তা উনি ভালোভাবেই জানেন। কয়েকজন তাঁকে ভুল পথে পরিচালনা করেছিলেন। আমি আপ্রাণ দলকে জেতানোর চেষ্টা করেছিলাম।”

এদিকে এই ব্যাপারে বহরমপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা নীলরতন আঢ্য বলেন, “নেতা এরকম কথা বলায় আমরা খুব মুশকিলে পড়ে যাচ্ছি। আমরা মানুষের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু, কে কাকে ভোট দেবে সেটা আমাদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। নেতৃত্ব এই ধরনের কথা বললে আমরা কী করি বলুন তো! তবে আগামীদিনে আমরা দলের হয়ে কাজ করব। ভোটে জিতেও দেখাব।”

তবে দলীয় পর্যবেক্ষকের এই কথা হজম করে নিয়ে শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “নেতা বলতেই পারেন। আমরা ছাত্র।” তৃণমূলের অনেকে বলছেন, ইতিমধ্যেই আগামী পৌরসভা নির্বাচনে তিনি বহরমপুরের দায়িত্ব নেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। জেলার নেতাদেরই শহরের সংগঠন দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ফলে সেদিক থেকে যদি সেই পৌরসভা নির্বাচনেও এখানে তৃণমূল জিততে না পারে, তাহলে যে জেলা তৃণমূল নেতাদের অনেকেরই ডানা ছাটা হতে পারে, তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এদিন এই প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবু তাহের বলেন, “শহরে লাগাতার কর্মসূচি নেব। রবিবারও এনআরসির বিরুদ্ধে আমরা মিছিল করেছি। জিরো থেকে হিরো হয়ে আমরা দেখাবই।”
বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলছেন, রাজনীতিতে পক্ক শুভেন্দু অধিকারী ভালোই বুঝতে পেরেছেন যে, বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের না জেতার কারণ। তার কাছে কে দল বিরোধী কাজ করেছেন, তার নির্দিষ্ট তথ্য আছেও বলে মনে করছেন একাংশ। আর তাইতো কারও নাম না নিয়ে দলের একাংশকে “কালিদাস” বলে কটাক্ষ করে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের অন্দরে নেতাদের নাভিশ্বাসকে আরও বাড়িয়ে দিলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!