প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –যেখানে বিপদ সেখানেই শুভেন্দু অধিকারী, তৃণমূলের নানা কর্মীরা এই দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন। তাদের বক্তব্য, দলকে সাফল্য পাওয়ানো থেকে শুরু করে বিরোধীদের দখলে থাকা শক্ত জমিতে ঘাসফুল ফোটানো, সমস্ত কিছুর দায়িত্ব শুভেন্দু অধিকারীর কাঁধে।

কিন্তু তার জায়গায় দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসছেন অন্য কেউ। অর্থাৎ শুভেন্দুবাবু দলের অনুগত সৈনিক হিসেবে সমস্ত কাজ করে গেলেও, ফসল অন্য কারো ঘরে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর অনুগামীদের। সাম্প্রতিককালে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে।

কেউ কেউ বলছেন, দলে ঠিকমত সম্মান না পেয়ে বড়সড় কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। আর যদি 2021 এর আগে তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তা তৃণমূলের পক্ষে অত্যন্ত খারাপ দিক হিসেবেই ফুটে উঠবে। এমতাবস্থায় সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেন্দু অধিকারীর অনেক অনুগামীরা তাকে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি করার জন্য দাবি তুলতে শুরু করেছেন।

বস্তুত, তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই দলের রাজ্য সভাপতি রয়েছেন সুব্রত বক্সি। বহু পদের অদল বদল হয়েছে‌। কিন্তু রাজ্য সভাপতির জায়গায় সুব্রতবাবুই থেকে গেছেন। তবে অনেকেরই অভিযোগ, সুব্রতবাবুকে নিয়ে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু অনেকেরই আপত্তি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে। লড়াই না করা সত্ত্বেও যেভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ক্রমশ দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হয়ে উঠছেন, তাতে তৃণমূলের একাংশ ক্ষুব্ধ।

অনেকে বলছেন, তাহলে শুভেন্দু অধিকারী এত পরিশ্রম করা সত্ত্বেও তিনি কেন একজন সাধারন নেতা হয়ে থাকবেন? কেন তিনি দলের কোনো শীর্ষ পদে জায়গা পাবেন না! আর এই সমস্ত প্রশ্ন যখন তৃণমূলের অন্দরমহলে ঘোরাফেরা করছে, ঠিক তখনই সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্য সভাপতি করার দাবি উঠেছে , যা নিঃসন্দেহে শাসকদলের অন্দরমহলে শোরগোল তৈরি করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন তৃণমূলের কাছে অত্যন্ত চাপের। ক্রমশ মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তাই এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জেলায় যেখানে বিজেপি ব্যাপকভাবে ক্ষমতা বাড়াচ্ছে, সেখানে ঘাসফুল ফোটাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর কাধে।

শুভেন্দুবাবুর অনুগামীরা এবার এই রকম সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বোঝাতে চাইছেন যে, তাদের নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতেই হবে। একাংশ বলছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের যুব সংগঠনের সভাপতি। তাই শুভেন্দু অধিকারীকে মূল সংগঠনের রাজ্য সভাপতি করার দাবি করে তার অনুগামীরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চাপে রাখতে চাইছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালে সাংগঠনিক বৈঠক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার আগে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা তাকে রাজ্য সভাপতি করার দাবি প্রবল পরিমাণে জানাতে শুরু করেছেন। প্রসঙ্গত ২০২১ কে সামনে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজকের সাংগঠনিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারীর গুরুত্ব বাড়িয়ে দিতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন শেষ পর্যন্ত এই ব্যাপারে দলীয় স্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি সিদ্ধান্ত নেন, আর যদি শুভেন্দু অধিকারীকে কোনো দায়িত্ব নাই দেওয়া হয়, তাহলে তার অনুগামীদের তরফ থেকে কি প্রতিক্রিয়া আসে, এখন তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।