শুভেন্দু অস্বস্তি ঢাকতে দুমুখো নীতি তৃণমূলের, এটাকে কল্যাণ আর ডিফেন্সে সৌগত? তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য হাওড়া-হুগলি November 21, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে যখন জল্পনা চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, তখন তাকে ম্যানেজ করতে সৌগত রায় এক পা বাড়ালেও, তার বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের আরেক সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। স্বভাবতই এই ঘটনায় এখন ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়েছে। জানা গেছে, শুক্রবার নাম না করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করেছেন। আর শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে যখন দলের দূরত্ব বাড়ছে, তখন কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ধরনের আক্রমণাত্মক মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সেই দূরত্বকে আরও বাড়িয়ে দেবে বলেই দাবি করছেন একাংশ। এদিকে কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই আক্রমণাত্মক মন্তব্যের পর এদিন হুগলির বলাগড়ে একটি কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে নাম না করে সেই কল্যাণবাবুকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে তিনি বলেন, “আমি শ্রদ্ধা জানিয়েই বলছি, প্রাক্তন সাংসদ অনিল বসু যখন কারও বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছিলেন, তখন হুগলি জেলার মানুষ সেটা মেনে নেননি। আর যদি কোনো বর্তমান জনপ্রতিনিধি আমার বা আমার পরিবারের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন, তাহলে আপনারা কি সেটা মেনে নেবেন! আপনারা কি এই কালচার সমর্থন করেন!” স্বভাবতই শুভেন্দুবাবুকে যখন দলে সক্রিয় করতে সৌগত রায়ের মত নেতারা চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে উদ্দেশ্য করে শুভেন্দু অধিকারীর পাল্টা মন্তব্য তৃণমূলে ব্যাপক আলোড়নের সৃষ্টি করল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত 10 নভেম্বর একটি দলীয় সভায় নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামের গাছের তলায় বড় হয়েছিস। চারটে মন্ত্রিত্ব পেয়েছিস। চারখানা চেয়ারে আছিস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে মিউনিসিপ্যালিটিতে আলু বেচতিস রে! আলু বেচতিস!” যার পরেই প্রশ্ন তৈরি হয়, যে শুভেন্দু অধিকারী এত গুরুত্বপূর্ণ, এত সাংগঠনিক দাপট থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে এইরকম মন্তব্য করে পেছনে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে? অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, তাহলে কি শুভেন্দু অধিকারীকে প্রয়োজন নেই তৃণমূল কংগ্রেসের! যে শুভেন্দু অধিকারী সারা রাজ্য জুড়ে নিজের সংগঠনকে শক্তিশালী করার কাজ করেছিলেন, সেই শুভেন্দু অধিকারীকে কেন এইভাবে কটাক্ষ করা হচ্ছে? কেন তার রাজনৈতিক প্রতিপত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত নেতারা? আর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সেই প্রশ্ন তুলছেন, কেন তাকে আটকানোর চেষ্টা করছে না তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব! এখন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এই ধরনের কথা বলছেন, তখন বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে পেরে তৃণমূলের তরফে সৌগত রায়ের মত প্রবীণ সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর মান ভাঙানোর জন্য উদ্যত হয়েছেন বলে খবর। অনেকেই বলেন, শুভেন্দু অধিকারী যদি দলত্যাগ করেন, তাহলে তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক বর্তমান জনপ্রতিনিধি তার পথে হাঁটতে শুরু করবেন। যার ফলে তৃণমূল কংগ্রেস ব্যাপক চাপে পড়তে পারে। তাই কল্যাণবাবু শুভেন্দু অধিকারীকে অলওভার আক্রমণ করলেও পাল্টা সৌগত রায় ডিফেন্স খেলতে ময়দানে নেমে পড়লেন। স্বাভাবিকভাবেই একটা জিনিস পরিষ্কার যে, শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কিছুটা হলেও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে উদ্যত হয়েছে। কেননা বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগ করলে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে তা বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই এই সমস্ত কিছু সমীকরণকে মাথায় রেখেই কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষের পরেই সেই শুভেন্দুবাবুর মান ভাঙানোর জন্য সৌগতবাবুকে নামানো হল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে শেষ পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারী কি পদক্ষেপ নেন, তিনি দলে সক্রিয় হন কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -