প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিকে দিকে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের ঘটনা আলোড়ন ফেলে দিয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি নেতা কর্মীদের ওপর আক্রমণ এবং খুনের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। আর এবার আরও এক বিজেপি কর্মী খুন করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। যে ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুক পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না বাকচা গ্রাম পঞ্চায়েতের খিদিরপুর এলাকায়।

বস্তুত, গত শনিবার বিকেলে পশ্চিম মেদিনীপুর সবংয়ের শিশুশিক্ষা পল্লীর মাঠে একটি খেলার প্রতিযোগিতা ছিল। আর সেই প্রতিযোগিতা দেখতেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন দীপক মন্ডল নামে এক বিজেপি কর্মী। অভিযোগ, রাতে বাড়ি ফেরার পথেই বেশ কিছু যুবক তার পথ আটকায়। আর এর পরেই তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরবর্তীতে তাকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হলে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় দীপকবাবুর দেহ।

এদিকে রাত গড়িয়ে গেলেও দীপকবাবু বাড়ি না ফেরায় তার পরিবারের আত্মীয়-স্বজনরা চিন্তা শুরু করেন। আর এরপরে গভীর রাতে দীপকবাবুর দেহ মাঝ রাস্তায় পড়ে রয়েছে বলে তার বাড়িতে খবর পৌঁছানোর সাথে সাথেই আত্মীয়-পরিজনরা সেখানে ছুটে গিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে ততক্ষণে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন সেই বিজেপি কর্মী।

আর এই গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবার তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। তাদের দলের এক কর্মীকে এইভাবে বোমা মারার অভিযোগে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এই প্রসঙ্গে গোটা ঘটনায় তৃণমূলকে দায়ী করেছেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েক।

তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ময়না ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুব্রত মালাকার বলেন, “নিজেরাই ফুর্তি করতে গিয়ে গন্ডগোল করেছে। ওদের কাছে বোমা ছিল। ওরাই খুন করেছে। আমাদের শতাধিক কর্মী সমর্থক বাড়িতে ফিরতে পারছেন না। ময়নাকে সন্ত্রাস মুক্ত করার দাবি জানাই।” অন্যদিকে এই ঘটনায় তৃণমূল কোনোভাবেই জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র মধুরিমা মন্ডল।

তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে কথাই বলা হোক না কেন, যেভাবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপি নেতা কর্মীদের উপর আক্রমণ এবং খুনের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে, তাতে শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিনকে দিন বাড়ছে। এই রকম ভাবেই যদি পরিস্থিতি চলতে থাকে, তাহলে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা যেমন বিঘ্নিত হবে, ঠিক তেমনই বিরোধীদের পক্ষ থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আরও বেশি করে সোচ্চার হওয়ার প্রবণতা দেখা যাবে। যার ফলে অস্বস্তিতে করবে শাসকদল।

এবার শুভেন্দু অধিকারীর ঘাঁটিতে যেভাবে এক বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলতে শুরু করল ভারতীয় জনতা পার্টি, তাতে তৃণমূল কংগ্রেস কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়ল বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, পুলিশি তদন্তে এই মৃত্যুর কারণ নিয়ে কি উঠে আসে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।