এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > শুভেন্দু মমতার সামনে টক্কর, সময় বাড়ছে যত – দূরত্ব প্রকট তত!

শুভেন্দু মমতার সামনে টক্কর, সময় বাড়ছে যত – দূরত্ব প্রকট তত!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2011 সালে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যে ক্ষমতা দখলের পেছনে যে দুই জায়গার ভূমিকা অনস্বীকার্য, তার মধ্যে রয়েছে, সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রাম। নন্দীগ্রামে গণআন্দোলনের যে লড়াই, সেখানে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর যতদিন গিয়েছে, ততই তার গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। নন্দীগ্রামের একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে উঠেছেন তিনি। বেড়েছে তার রাজনৈতিক প্রভাব। পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন তিনি। এমনকি যেখানে যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস সমস্যায় পড়েছে, সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বস্ত সেনাপতি হিসেবে সেই শুভেন্দু অধিকারীর উপর দায়িত্ব দিয়েছেন।

আর দলের অনুগত হিসেবে সেই সমস্ত কিছু সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছেন শুভেন্দুবাবুঋ তবে সাম্প্রতিক কালে এহেন দলের অনুগত সৈনিককে নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে তৃণমূলের অন্দরমহলে। একাংশের অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারী দলের জন্য সমস্ত কিছু করে গেলেও, তিনি দলে গুরুত্ব পাচ্ছেন না। তার জায়গায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছে অন্য এক যুবনেতাকে। যার ফলে তিনি অপমানিত বোধ করেছেন। তাই তার মত লড়াকু নেতাকে কেন দল গুরুত্ব দিচ্ছে না, তার জন্যই এখন শুভেন্দুবাবু নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন।

আর সেই কারণেই পৃথকভাবে সভা-সমিতিতে যোগ দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক হিসেবে নিজের পরিচয় না দিয়ে বরং সমাজসেবক হিসেবে নিজের পরিচয় দিতে শুরু করেছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী। এদিন নন্দীগ্রামের সূর্যোদয়ের বর্ষপূর্তি ছিল আশা করা হয়েছিল, এই সভা থেকেই শুভেন্দু অধিকারী নিজের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেবেন। আর রক্তস্নাত সূর্যোদয়ের 13 বছর পূর্তিতে যখন ভূমি উচ্ছেদ কমিটির সভায় উপস্থিত হলেন শুভেন্দু অধিকারী, ঠিক তখনই এই দিনটিকে স্মরণ করে টুইট করলেন তার দলের নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সূত্রের খবর, পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী যখন নন্দীগ্রামের রাস্তায়, ঠিক তখনই সকাল দশটা নাগাদ একটি টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে 13 বছর আগের সেই দিনটিতে “কালো দিন” হিসেবে স্মরণ করে টুইটারে পোস্ট করেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে এই ঘটনার জন্য সিপিএমকে সব সময় তৃণমূল কংগ্রেস দায়ী করলেও, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টুইটারে সিপিএমের নাম উল্লেখ করতে দেখা যায়নি। যার ফলে জল্পনা ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে।

এদিকে শুভেন্দু অধিকারী এদিন সেই ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ডাকে সভায় যোগ দিয়ে এত বছর পর নন্দীগ্রামকে মনে করেছে বলে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। যে সভার পাল্টা তৃণমূলের সভাকে উদ্দেশ্য করে শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্য বলে দাবি করছেন একাংশ। স্বাভাবিকভাবেই এতদিন শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে দলের অন্দরে জল্পনা তৈরি হলেও, এদিন শুভেন্দু অধিকারী পৃথকভাবে অরাজনৈতিক সভায় উপস্থিত থেকে নন্দীগ্রামের ধ্বনি দেওয়া এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেন্দু অধিকারী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে কার বিরোধকেই তীব্র করল বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের। কেন এই দিনটিকে স্মরণ করে টুইট করেও সেখানে সিপিএমের নাম নিলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! এখন তা নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তৃণমূলের অনেকে বলছেন, নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের শুরুতে তৃণমূল সাফল্য পাওয়ার পর ক্ষমতায় আসার অব্যবহিত পরে আর নন্দীগ্রামকে অনেকেই মনে রাখেননি। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী প্রতিনিয়ত সেই নন্দীগ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। 2018 সালের 10 নভেম্বর কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব ছিল। সেই সময় নন্দীগ্রামের কথা তৃনমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কারোরই মনে পড়েনি। সেই কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে উপস্থিত হতে দেখা দিয়েছিল তৃণমূলের সকল স্তরের নেতা নেত্রীদের। কিন্তু সেই অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী এই দিনটিকে স্মরণ রেখে নন্দীগ্রামে উপস্থিত হয়েছিলেন।

তাই এখন শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে যখন জল্পনা তৈরি হচ্ছেড় তখন তিনি ঠিক থাকলেও, অতিরঞ্জিত করে তৃণমূলের কেউ কেউ নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য নন্দীগ্রামের দরদ দেখাতে এসেছেন সমালোচনা করতে শুরু করেছেন একাংশ। বলা বাহুল্য, শুভেন্দু অধিকারী যখন অরাজনৈতিক ব্যানারে এই সভায় উপস্থিত হচ্ছেন, তখন তার পাল্টা জবাব দিতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে, অন্য একটি সভা যেখানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের।

স্বাভাবিকভাবেই এতদিন পর কেন নন্দীগ্রামের কথা মনে পড়ল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই নিজের সভা থেকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে এক্ষেত্রে কারো নাম নেননি তিনি। তবে তাকে লক্ষ্য করে, তা বুঝতে বাকি নেই বিশেষজ্ঞদের। স্বাভাবিকভাবেই এখন রাজ্যজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছে যেড় নন্দীগ্রামের এই সূর্যোদয়ের বর্ষপূর্তিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর আড়ালে থাকা বিবাদ এখন প্রকাশ্যে চলে এল। সব মিলিয়ে এর কি প্রভাব পড়ে বঙ্গ রাজনীতিতে, কোন দিকে এগোয় গতিপ্রকৃতি, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!