এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > শুভেন্দু-মুকুলকে পিছনে ফেলে বিধানসভায় বিজেপির মুখ হয়ে উঠবেন এই ‘আদি’ নেতা? জল্পনা চরমে

শুভেন্দু-মুকুলকে পিছনে ফেলে বিধানসভায় বিজেপির মুখ হয়ে উঠবেন এই ‘আদি’ নেতা? জল্পনা চরমে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  বিজেপির দুশো আসন দখলের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসে দাবি করেছিলেন, বাংলায় এবার বিজেপি সরকার গঠন হবে। কিন্তু সেই কথাও বাস্তব রূপ নেয়নি। উল্টে রাজ্যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় দু’শোর বেশি আসন লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার। সোমবার গঠন হতে চলেছে তৃণমূল সরকারের মন্ত্রিসভা। কিন্তু শাসকদলের মন্ত্রিসভা যখন গঠন হচ্ছে, তখন 77 টি আসন পেয়ে রাজ্যে বিরোধী দলের আসনে বসা ভারতীয় জনতা পার্টির বিধানসভার পরিষদীয় নেতা কে হবেন, এখন তা নিয়েই দলের অন্দরে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

ইতিমধ্যেই নির্বাচনের পরবর্তী সময়কালে দলের ভরাডুবি নিয়ে বিভিন্ন নেতারা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। আর এই পরিস্থিতিতে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা নিয়ে গুঞ্জন ক্রমশ বাড়ছে। পুরনো এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মুখকেই দায়িত্ব দেওয়া হবে, নাকি তৃণমূল থেকে আসা কোনো হেভিওয়েট নেতাকে করা হবে বিরোধী দলনেতা, এখন তা নিয়েই বিজেপির অভ্যন্তরীণ শিবির কার্যত দ্বিধাবিভক্ত বলেই খবর।

আর এর মাঝেই এবার মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দুই বারের জয়ী বিধায়ক মনোজ টিগ্গাকে বিরোধী দলনেতা করার দাবি তুললেন আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। স্বাভাবিকভাবেই দল যখন বিরোধী দলনেতা ঠিক করতে দুইজন পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে, তখন এক জেলা সভাপতির বিরোধী দলনেতা করবার জন্য মনোজবাবুকে সামনে দাঁড় করিয়ে এই ধরনের দাবি যে বিজেপির অন্দরমহলকে কার্যত যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলে দিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আজ সোমবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির পক্ষ থেকে বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বৈঠক করা হবে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নাম সামনে আসতে শুরু করেছে। যার মধ্যে রয়েছেন, মুকুল রায় থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী, মনোজ টিগ্গা থেকে শুরু করে অশোক লাহিড়ীর মত হেভিওয়েট বিধায়করা।

তবে শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে, এখন সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে বলেন, বিজেপির সাংগঠনিক এবং শৃঙ্খলা পরায়ন দল। কিন্তু সেই দলে যখন আলোচনা করে সবকিছু ঠিক হয়, তখন বিরোধী দলনেতা মনোজ টিগ্গাকে করার দাবি কেন তুললে আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির সভাপতি? এটা কি দলের বাইরে গিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়ে দলের শৃঙ্খলাকে নষ্ট করা নয়?

প্রকাশ্যে এইভাবে বিরোধী দলনেতা নিয়ে যদি বিজেপির পক্ষ থেকে একের পর এক নেতা নিজেদের পছন্দমতো নামগুলো সামনে আনতে শুরু করেন, তাহলে এবার বিরোধী দলনেতা ঠিক করার নিয়ম কার্যত অন্তর্দ্বন্দ্বে মুখ থুবড়ে পড়তে পারে গেরুয়া শিবির বলেই আশঙ্কা করছেন একাংশ। এদিন এই প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, “রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ লোকসভায় চলে যাওয়ার পর 2019 সালে বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচন হন। সেই দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করেছিলেন। বিরোধী দলনেতার অভিজ্ঞতাও তিনি অর্জন করেছেন। তাহলে এবার কেন মনোজ বিরোধী দলনেতা হবেন না? তাছাড়া দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় উত্তরবঙ্গের ভালো ফলাফল রয়েছে। তাই উত্তরবঙ্গের মানুষের হয়ে আমি দাবি তুলছি, মনোজ টিগ্গাকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা করা হোক।”

তবে গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা যখন এই ধরনের দাবি তুলছেন, তখন তা নিয়ে দলের অন্দরে বিতর্ক ক্রমশ মাথাচাড়া দিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। অনেকে বলছেন, এর আগে আলিপুরদুয়ার বিধানসভা কেন্দ্রে বালুরঘাটের বর্তমান বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ীকে প্রার্থী করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর কার্যত সেই প্রার্থীকে মানা হবে না বলে গর্জে উঠেছিলেন গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। অর্থাৎ দলের বিরুদ্ধে তার বিদ্রোহ নতুন কিছু নয়। দলীয় যে কোনো সিদ্ধান্ত অপছন্দ হলেই তিনি প্রকাশ্যে মুখ খুলে দলকে বিড়ম্বনার মুখে ফেলে দেন বলে অভিযোগ একাংশের।

আর এই পরিস্থিতিতে বিধানসভার ভেতরে বিরোধী দলনেতা কাকে করা হবে, তা নিয়ে যখন চিন্তায় রাজ্য বিজেপি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় বিজেপি, তখন নিজের মতামত জানিয়ে দিলেন আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। যেখানে মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গাকে বিরোধী দলনেতার করার দাবি তুলে তিনি দলের মধ্যে বিরোধী দলনেতার নাম নিয়ে যে সমস্ত আলোচনা শুরু হয়েছিল, তার মধ্যে কার্যত ঘৃতাহুতি দিলেন বলেই মনে করছেন একাংশ। এখন জেলা সভাপতির এই প্রকাশ্যে করা মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিজেপির অন্দরমহল কতটা তোলপাড় হয় এবং শেষ পর্যন্ত কাকে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা করে ভারতীয় জনতা পার্টি, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!