প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে বর্তমানে ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়েছে গোটা রাজ্য জুড়ে। যেভাবে দল এবং সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি হচ্ছে রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রীর, তাতে নতুন করে রাজ্য রাজনীতিতে সমীকরণ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন একাংশ। আর এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জায়গায় শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা তার ছবি দিয়ে পোস্টার লাগাতে শুরু করেছে। যেখানে বিন্দুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল কংগ্রেসের চিহ্নটুকুও নেই।

এদিকে শুভেন্দু অধিকারী যখন অরাজনৈতিক সভায় যোগ দিচ্ছেন, তখন সেই সমস্ত সভায় উপস্থিত তৃণমূল নেতাদের দেহরক্ষী প্রত্যাহার করে নিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। যার ফলে মনে করা হচ্ছে যে, শুভেন্দু অধিকারীর হয়ে যারা আওয়াজ তুলছেন, তাদের প্রত্যেককে চাপে রাখতে এবং রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নানা মামলা করা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী।

আর এবার সেই অধীরবাবুর পথে হেঁটেই ঠিক তেমনটাই আশঙ্কা করতে শুরু করলেন শুভেন্দুবাবুর অনুগামীরা। জানা যায়, সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা আশঙ্কা করেছেন যে, পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে গাঁজা কেস দিয়ে দেওয়ার হুমকি দেখানো হচ্ছে। যার জেরে মুর্শিদাবাদ জেলার বেশ কয়েকজন অনুগামী যথেষ্ট ভয় রয়েছেন বলে খবর।

স্বাভাবিকভাবেই অধীরবাবু এই ধরনের অভিযোগ আনার পরই যেভাবে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা সেইরকম আশঙ্কার কথা বলতে শুরু করলেন, তাতে তৃণমূল কংগ্রেস এবং রাজ্য প্রশাসন অনেকটাই চাপে পড়ে গেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাহলে কি সত্যি সত্যিই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দূরত্ব ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে?

তাই বিভিন্ন জায়গায় শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে পরিচিত তাদেরকে চাপে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরকম উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দেওয়া হচ্ছে! এখন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। যদিওবা এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসেই রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। সেক্ষেত্রে তার অনুগামী হওয়ায় অপরাধ কোথায়, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।

অনেকে বলছেন, তৃণমূলে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পর যদি সব থেকে বেশি কারও জনপ্রিয়তা থেকে থাকে, তাহলে তার নাম শুভেন্দু অধিকারী। এক সময়ে মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন তিনি। তবে তার সঙ্গে যখন দল এবং সরকারের দূরত্ব বৃদ্ধি পেয়েছিল, তখন কিছুদিন আগেই মুর্শিদাবাদের এসে সভা করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী‌। যার পুরোটাই হয়েছিল অরাজনৈতিক ব্যানারে। আর এর পরেই সেই সভায় উপস্থিত মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতির সরকারি নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল রাজ্য সরকার।

অর্থাৎ শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হওয়াতেই তাকে বার্তা দিয়ে এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। আর এর পরবর্তী সময়কালে অধীর রঞ্জন চৌধুরীর মুখ থেকে শোনা গিয়েছিল, যারা শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী, তাদেরকে পুলিশ মামলা দেওয়ার চেষ্টা করবে।

স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার পরদিন যেভাবে মুর্শিদাবাদ জেলার শুভেন্দুবাবুর অনুগামীরা সেই একই ব্যাপার যেভাবে আশঙ্কা করতে শুরু করলেন, তাতে পুলিশ প্রশাসনের আচরণ নিয়ে তৈরি হয়েছে বড়সড় প্রশ্ন। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে শুভেন্দুবাবুর অনুগামীরা দলের সঙ্গে আরও দূরত্ব বৃদ্ধি করতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।