এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > শুভেন্দুর কার্যকলাপ নিয়ে কিছুই জানেন না, দলে কি ক্রমশ কোণঠাসা দিলীপ? বাড়ছে জল্পনা!

শুভেন্দুর কার্যকলাপ নিয়ে কিছুই জানেন না, দলে কি ক্রমশ কোণঠাসা দিলীপ? বাড়ছে জল্পনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2020 সালের ডিসেম্বর মাসে অমিত শাহের হাত থেকে গেরুয়া শিবিরের পতাকা তুলে নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী প্রথম বক্তব্যে বলেছিলেন, “আমি বিজেপিতে মাতব্বরি করতে আসিনি। আমি দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতি করা লোক। বিজেপি নেতৃত্ব আমাকে যে কাজ করতে বলবে, আমি সেই কাজ করব।” পরবর্তীতে বিভিন্ন সভা সমিতিতে শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষ জুটি বলে দাবি করতে দেখা গেছে শান্তিকুঞ্জের মেজো ছেলেকে।

এমনকি 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে তিনি এবং দিলীপ ঘোষ মিলেই সাগরের ওপার এবং ওপারে তৃণমূলকে উৎখাত করে দেবেন বলেও হুংকার ছেড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাক্তন সতীর্থ। তবে নির্বাচনে কি হয়েছে, তা সকলেরই জানা। নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী জয়লাভ করলেও, সারা রাজ্যজুড়ে বিজেপির ফল ভালো হয়নি। 213 টি আসন পেয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছে। অন্যদিকে 77 টি আসন পেয়ে বিরোধীদলের জায়গা পেয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

আর এরপরই শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা করা হয়েছে। তবে যত দিন যাচ্ছে, ততই শুভেন্দু অধিকারী সংগঠন এবং পরিষদীয় দিক থেকে নানা কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকলেও, তার কার্যকলাপ সম্পর্কে কিছুই জানতে পারছেন না সংগঠনের মাথা তথা বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ‌। যেখানে বিজেপি সাংগঠনিক এবং শৃঙ্খলা পরায়ন দল বলে নিজেদের বড়াই করে, সেখানে বিরোধী দলনেতা কেন সবকিছু রাজ্য সভাপতিকে না জানিয়ে করছেন, এখন তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাহলে কি ধীরে ধীরে দলীয় স্তরে কোণঠাসা হচ্ছেন দিলীপ ঘোষ? নাকি শুভেন্দু অধিকারী এবং তার মধ্যে তৈরি হচ্ছে দূরত্ব?

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে তলব করা হয়েছিল বাংলার বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীকে। সেই মত করে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করতে দেখা গিয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীকে। এদিকে শুভেন্দুবাবু যখন দিল্লিতে, তখন এই ব্যাপারে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হয়।

আর সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়ে দেন, তিনি শুভেন্দু অধিকারীর এই সফর সম্পর্কে কিছুই জানেন না। যদিও বা দিল্লি থেকে শুভেন্দু অধিকারী পাল্টা জানিয়ে দেন, তিনি দিলীপবাবুকে জানিয়ে এসেছেন। এক্ষেত্রে অমিতাভ চক্রবর্তীকে তিনি তার দিল্লি সফরের কথা জানিয়েছেন বলে দাবি করেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ককে। আর সেই সময় থেকেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শুভেন্দু অধিকারীকে ডেকে পাঠাল, অথচ বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হওয়া সত্বেও কেন দিলীপ ঘোষ গোটা বিষয়টি জানলেন না, তা নিয়ে তৈরি হতে শুরু করে প্রশ্ন।

আর এবার দিল্লি সফর নিয়ে বিতর্ক কিছুটা কমতে না কমতেই শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষ থেকে বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হলেও সেই বিষয়ে দিলীপ ঘোষ অবগত নন বলে খবর পাওয়া গেল। অর্থাৎ শুভেন্দু অধিকারী দিল্লি থেকে শুরু করে রাজভবনে গেলেও, সেভাবে দিলীপ ঘোষ তার কিছুই জানেন না। যাকে কেন্দ্র করে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।

একাংশ বলছেন, তাহলে কি শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত পেয়ে নিজের মত করে সংগঠনকে পরিচালনা করার দায়িত্ব পেয়ে গিয়েছেন? আর সেই কারণে দিলীপ ঘোষকে কিছু না জানিয়েই তিনি কখনও রাজভবন, আবার কখনও বা দিল্লিতে পৌঁছে যাচ্ছেন! কিন্তু বিজেপি দল তো সাংগঠনিক দল হিসেবে পরিচিত। এক্ষেত্রে সভাপতিকে না জানিয়ে বিরোধী দলনেতা কেন এইভাবে বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন, তা নিয়েও অনেকের মধ্যে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

বিশেষ সূত্র মারফত খবর, ইতিমধ্যেই দলীয় স্তরে রাজভবনে শুভেন্দু অধিকারী সহ দলের একাধিক বিধায়কের যাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দিলীপ ঘোষ‌। কেন তাকে এই ব্যাপারে কিছু জানানো হল না, তা নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। যদিও বা প্রকাশ্যে এই ব্যাপারে কিছুই বলেননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তবে এই ব্যাপারে অবশ্য অন্য যুক্তি দিচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তাদের দাবি, দিলীপ ঘোষ দলের সংগঠন দেখভাল করেন। সেদিক থেকে শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভার দলনেতা। তাই পরিষদীয় দিক থেকে তিনি কী করবেন, তা রাজ্য সভাপতিকে নাও জানাতে পারেন। তাই শুভেন্দু অধিকারী যদি দিলীপ ঘোষকে এই ব্যাপারটি না জানান, তাহলে তাতে দোষের কিছু নেই। এক্ষেত্রে দিলীপ ঘোষ সংগঠন এবং শুভেন্দু অধিকারী পরিষদীয় দিক দেখভাল করে তৃণমূল কংগ্রেসকে আরও কোণঠাসা করতে সক্ষম বলে দাবি করছেন একাংশ।

তবে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা এই ব্যাপারে যে যুক্তিই দিন না কেন, বিজেপির অন্দরে দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারীর বনিবনা যে খুব একটা ভালো হচ্ছে না, তা দিনকে দিন স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একাংশ বলছেন, এতদিন মুকুল রায় এবং দিলীপ ঘোষের গোষ্ঠীর মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেই মুকুল রায় এখন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তবে তৃণমূল থেকে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে এখন দিলীপ ঘোষের অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে। তাকে না জানিয়েই শুভেন্দু অধিকারীর বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ কার্যত মেনে নিতে পারছেন না দিলীপ ঘোষ। অনেকে বলছেন, সত্যিই তো তাই! তিনি তো সংগঠনের মাথা।

এক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারী যতই পরিষদীয় দলের নেতা হোন না কেন, সংগঠনের নিয়মকে মান্যতা দিয়ে দিলীপ ঘোষকে সমস্ত কিছু জানানো উচিত। কিন্তু এভাবেই যদি দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারী নিজের নিজের মত করে চলতে শুরু করেন, তাহলে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব যেমন বাড়বে, ঠিক তেমনই অন্তর্কলহে ব্যাপক সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টিকে। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব মেটাতে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!