করোনা পরিস্থিতির মধ্যে রাজ্যে একের পর এক প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের পদে বদল ঘটতে শুরু করেছে। মহামারীর মধ্যে রেশনের ত্রাণ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। বিরোধীদের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে সোচ্চার হয়ে সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল। যার ফলে কার্যত বিড়ম্বনায় পড়ে পরবর্তীতে সরকারের পক্ষ থেকে কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেখানে খাদ্য সচিব মনোজ আগরওয়ালকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে এক প্রকার ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। আর এই ঘটনার পরেই সম্প্রতি রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব পদে বদল আনে রাজ্য সরকার।

যেখানে বিবেক কুমারকে সরিয়ে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশ দপ্তরের সচিব পদে বসানো হয়। আর করোনা পরিস্থিতির মধ্যে প্রথমে খাদ্য সচিব এবং তারপর স্বাস্থ্য সচিবকে সরিয়ে দেওয়ায় এখন রাজ্যের মুখ্যসচিবের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছে জল্পনা। সূত্রের খবর, সোশ্যাল মিডিয়া একটু চোখ বোলালেই এখন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে নেটিজনেদের বক্তব্য। যেখানে তারা সেভাবে কোনো নাম না নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে উদ্দেশ্য করেই যে এই কথা বলছেন, তা বুঝতে বাকি নেই কারোরই‌।

দেখা গেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে পোস্ট করছেন, “খাদ্য গেল, স্বাস্থ্য গেল, এবার কি মুখ্যর পালা!” অর্থাৎ “খাদ্য-স্বাস্থ্য” এই সমস্ত শব্দ প্রয়োগ করলেও, রাজ্যের বর্তমান প্রশাসনিক ক্ষেত্রে এর বদলের পরিপ্রেক্ষিতেই যে একাংশ এই ধরনের কথা বলছেন এবং তারা যে মুখ্যসচিবের বদলের ব্যাপারেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, তা কার্যত নিশ্চিত হয়ে গেছে বিশেষজ্ঞদের কাছে। কিন্তু কেন হঠাৎ মুখ্যসচিব রাজিব সিনহার বদলের ব্যাপারে একাংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় জল্পনা উসকে দিচ্ছেন?

অনেকের মতে, প্রথমদিকে করোনা মোকাবিলায় প্রতিনিয়ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করে তথ্য দিতে দেখা যেত রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে। কিন্তু এখন আর তাকে দেখা যাচ্ছে না। তার জায়গায় প্রতিদিন সাংবাদিক বৈঠক করে সেই তথ্য দিচ্ছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এখানেই একাংশের প্রশ্ন, তাহলে কি মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার প্রতি ভরসা উঠেছে রাজ্য সরকারের?

তাহলে কি এবার স্বাস্থ্য দপ্তর এবং খাদ্য দপ্তরের সচিবের মত মুখ্যসচিবকেও সরিয়ে দেওয়া হতে পারে? সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সমস্ত বক্তব্য এবং জল্পনা তৈরি হলেও এখনও পর্যন্ত সরকারের তরফে সেরকম কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তবে যেভাবে খাদ্য দপ্তর এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিবকে হঠাৎ করেই সরিয়ে দেওয়া হল, তাতে মুখ্যসচিবকে নিয়ে কোন বিষয় সামনে আসে কিনা, তার দিকে নজর থাকবে সকলেরই।