প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – শুভেন্দু অধিকারীর পর তাকে নিয়ে জল্পনা ক্রমাগত বাড়তে শুরু করেছিল। অনেকেই দাবি করেছিলেন, এবার বিজেপিতে যোগদান করবেন রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাভাবিকভাবেই রাজীববাবুর গতিবিধি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছিল। এমনকি তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মান ভাঙানোর জন্য একাধিকবার বৈঠক সেই জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।

আর এই পরিস্থিতিতে এবার তাকে নিয়ে নানা জল্পনা কার্যত দমিয়ে দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শুভেন্দু অধিকারীর পর সেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টার বিভিন্ন জায়গায় পড়তে দেখা যায়। এমনকি দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে তার বিভিন্ন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় রাজ্য রাজনীতিতে। আর এরপর তার মান ভাঙানোর জন্য তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে বৈঠক করা হয়।

একাংশ দাবি করতে শুরু করেছিলেন আগামী জানুয়ারি মাসে রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ। স্বাভাবিকভাবেই তার সফরে বড় কোনো তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগদান করতে পারেন। আর এই যোগদান পর্বে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে জল্পনা আলোচনার পর্যায়ে এসে পড়ে। তবে এবার বিধানসভায় উপস্থিত হয়ে সেই সমস্ত জল্পনাতেই জল ঢেলে দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

জানা যায়, সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠক করেও, সেখানে অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যার ফলে তাকে নিয়ে জল্পনা আরও বাড়তে শুরু করে। কিন্তু এদিন বিধানসভার ফুলমেলায় উপস্থিত হন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান এবং জল্পনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, তা সম্পূর্ণরূপে নস্যাৎ করে দেন তিনি।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাকে নিয়ে জল্পনার কোনো প্রয়োজন নেই। আমি তৃণমূলেই আছি।” অর্থাৎ বিভিন্ন মহলের তরফে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হলেও, তাতে যে তিনি গুরুত্ব দিতে নারাজ, তা এদিনের মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার করে দিলেন রাজ্যের এই হেভিওয়েট মন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি বুঝিয়ে দিলেন, তিনি এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসেই রয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকারীর পর যদি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত স্বচ্ছ নেতারা দলত্যাগ করেন, তাহলে তৃণমূলের কাছে তা ব্যাপকভাবে চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই এই পরিস্থিতিতে শাসক দলের পক্ষ থেকে সেই রাজীববাবুর মান ভাঙানোর জন্য সম্প্রতি তার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়‌‌। তারপর হয়ত অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আর তাই এদিন বিধানসভায় ফুলমেলায় উপস্থিত হয়ে তাকে নিয়ে সমস্ত জল্পনাতে জল ঢেলে দিলেন রাজ্যের এই হেভিওয়েট মন্ত্রী।

অনেকে আবার বলছেন, অতীতে এরকম ঘটনা অনেক ঘটেছে। আগের দিন তারা তৃণমূলে আছেন বললেও পরের দিন অনেক নেতাকে বিজেপিতে যোগদান করতে দেখা গেছে। স্বাভাবিকভাবেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলবদলের জল্পনাকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও তার পরবর্তী রাজনৈতিক গতিবিধির দিকে নজর রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।