এবার স্কুলের প্রধান শিক্ষককে সবার সামনে স্টেশনে ফেলে পেটালেন তৃণমূল নেতা! কলকাতা রাজ্য September 2, 2019 রক্ষক যখন ভক্ষক হয়ে ওঠে তখন সমস্যাসঙ্কুল হয়ে ওঠে সেখানকার পরিস্থিতি। বাংলায় বর্তমানে ঠিক এইরকমই হাল-হকিকত দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতাদের চোখরাঙানি সহ্য করতে হচ্ছে নিরীহ মানুষদের বলে অভিযোগ বিরোধীদের। যার থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না শিক্ষককুলও। এবার স্কুলের মাঠে পুজো করার অনুমতি না দেওয়ায় এবং এই ব্যাপারে সরকারিভাবে অনুমতি নেওয়ার কথা বলে তৃণমূল নেতার কাছে মার খেতে হল দত্তপুকুর 1 গ্রাম পঞ্চায়েতের নিবাধুই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে। জানা গেছে, এই স্কুলের মাঠে প্রায় 50 বছর ধরে একটি সার্বজনীন দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতিবারের ন্যায় এবারও সেই দুর্গাপুজোয় স্কুলের মাঠ নেওয়ার জন্য এলাকাবাসীর তরফে স্কুল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ গত ডিসেম্বর মাসের একটি নির্দেশিকার কথা উল্লেখ করে এলাকার বাসিন্দাদের এই মাঠ নেওয়ার ব্যাপারে স্কুল শিক্ষা দপ্তর থেকে অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেয়। আর এতেই তৈরি হয় সমস্যা। অভিযোগ, এরপর থেকেই সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অপূর্ব পালের উপর স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের প্রবল আক্রোশ তৈরি হয়। কেন প্রধান শিক্ষক পুজোর জন্য অনুমতি দিচ্ছেন না! তা নিয়ে তার ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করা হয় তৃণমূল নেতাদের তরফে বলেও জানা যায়। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সূত্রের খবর, শনিবার দুপুরে স্কুল ছুটির পর সমস্ত শিক্ষক বাড়ি ফিরে গেলেও স্কুলের কিছু কাজ থাকায় প্রধান শিক্ষক স্কুলে থাকেন। এরপর বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ তিনি স্কুল থেকে বের হয়ে দত্তপুকুর স্টেশনে আসলে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তাপস ঘোষের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন শাসকদলের নেতাকর্মী সেই প্রধান শিক্ষক অপূর্ব ঘোষকে ঘিরে ধরে পুজোর অনুমতি কেন দেওয়া হচ্ছে না! তা নিয়ে গালিগালাজ করতে শুরু করে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় যায় যে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মেই সেই প্রধান শিক্ষককে পেয়ে তৃণমূল নেতারা বেধড়ক মারধর করে। আর এরপরই কোনরকমে সেই তৃণমূল নেতাদের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অপূর্ববাবু সহকর্মীদের ফোন করে বিষয়টি জানান এবং দত্তপুকুর থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ইতিমধ্যে এই ব্যাপারে মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য তাপস ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, ধৃতকে এদিন বারাসাত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তার জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন এই প্রসঙ্গে সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অপূর্ব ঘোষ বলেন, “আমি শুধু সরকারি নিয়মের কথা জানিয়েছিলাম। আমাদের অনুমতি দেওয়ার কোনো অধিকার নেই। আর আমি এই কথা বললে ওরা আমার কথা শোনেনি। স্টেশনের প্লাটফর্মের মধ্যে এইভাবে আমার ওপর হামলা করা হবে, তা আমি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারি না।” অন্যদিকে দল এই ধরনের ঘৃণ্য কাজকে সমর্থন করে না। দলীয় স্তরে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বারাসাত 1 ব্লকের তৃণমূল সভাপতি রবিউল ইসলাম। কিন্তু যেখানে খোদ তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নেতাকর্মীদের সংযত হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন, সেখানে এইভাবে শিক্ষকের ওপর তৃণমূল নেতার আক্রমণ যে শিক্ষক দিবসের আগে রাজ্যের শাসক দলকে বড়সড় বিড়ম্বনায় ফেলবে, তা নিঃসন্দেহে বলাই যায়। আপনার মতামত জানান -