এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ফের শিক্ষক নিয়ে নিয়ে বড়সড় অভিযোগ উঠলো, জেনে নিন

ফের শিক্ষক নিয়ে নিয়ে বড়সড় অভিযোগ উঠলো, জেনে নিন


রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শূন্যপদগুলিতে যথাযোগ্য নিয়োগ না করার অভিযোগ উঠেছে বারবার। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শূন্যপদে নিয়োগ না হলে কার্য পরিচালনার অসুবিধার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আর এবার মেদিনীপুরে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনগুলোর তরফ থেকে এক বছর আগে বেরোনো শূন্যপদে নিয়োগ না করার অভিযোগ উঠতে দেখা গেল।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের তরফ থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, জেলায় মোট 265 টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তবে এই স্কুলগুলির মধ্যে অনেকগুলো স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে। 2014 সালের নভেম্বর মাসেই প্রধান শিক্ষক পদে সর্বশেষ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল বলে জানা যায়। কিন্তু এরপর থেকে প্রায় পাঁচ বছর জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন শিক্ষক এবং শিক্ষিকারা। তার কারণে ওই পদে শূন্য আসন তৈরি হয়েছে। আবার প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তার কারণে তাদের উপরে রীতিমত বাড়তি চাপ পড়ছে।

বস্তুত, এই জেলায় বর্তমানে দেড় হাজারেরও বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থায়ী প্রধান শিক্ষক নেই বলে আন্দোলনকারী শিক্ষক সংগঠনের অভিযোগ। তবে এর আগে 2019 সালের 15 জানুয়ারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের পক্ষ থেকে রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে 1450 জন প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণ করার জন্য সহকারি শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছ থেকে আবেদনপত্র জমা নিয়েছিল। সংসদের পক্ষ থেকে 15 ফেব্রুয়ারি সব আবেদন পত্র জমা নেওয়া সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল।

জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের পক্ষ থেকে সেই সময় জানানো হয়েছিল যে, চলতি 2019 সালে সমস্ত শূন্যপদে নিয়োগ সম্পন্ন হবে। তবে বছর পূর্ণ হতেই হাতেগোনা দিন বাকি থাকা সত্ত্বেও, এখনও পর্যন্ত সেই ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদকে। তাই রীতিমতো হতাশা ছড়িয়েছে জেলার সহকারী শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে। এক্ষেত্রে যারা আবেদন করেছিল, সেই সমস্ত প্রধান শিক্ষক পদপ্রার্থী তো বটেই, সঙ্গে সঙ্গে যে সমস্ত সরকারি শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরকে প্রধান শিক্ষক পদের বাড়তি দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে, তারাও রীতিমতো সমস্যায় পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ।

সেই কারণেই যেন দ্রুততার সঙ্গে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, সেই দাবিতে এর আগে জেলার শিক্ষক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। কিন্তু স্মারকলিপি জমা দিয়েও কোনরকম লাভ হয়নি। আবার শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই জেলার অর্ধেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন শুরু হবে। ফলে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদগুলিতে যে সমস্ত সহকারী শিক্ষকরা দায়িত্বভার সামলাচ্ছেন, তাদের আয়ও বৃদ্ধি পেতে পারে। সেই কারণেই রীতিমতো চিন্তায় পড়েছে ওই সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই ঘটনা প্রসঙ্গে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক সতীশ সাউ বলেন, “জেলার প্রায় অর্ধেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ খালি। ওই দায়িত্ব পালনের জন্য কোনো আর্থিক সুবিধা পান না সহ সরকারি শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ। আর এবার অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পঠনপাঠন শুরু হলে তো দায়িত্ব আরও বাড়বে।” আবার নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক অশোক দাস অভিযোগ করেছেন, নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর সেই বছরের 31 ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে তা হল না। এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংসদের সভাপতির কাছে দাবি জানানো হয়েছে।

শুধু বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি বা নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি নয়, এই ঘটনায় অভিযোগ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক অরূপ ভৌমিক। তিনি বলেন, “প্রধান শিক্ষক পদের জন্য যারা আবেদন করেছেন, তাদের দ্রুত নিয়োগ করার জন্য পদক্ষেপ করার দাবি জানাচ্ছি।” তবে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনগুলির দাবির ভিত্তিতে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি মানস দাস বলেন, “আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবে অনুমোদন পেলেই প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।”

গোটা বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন-পাঠনের পাশাপাশি সমগ্র স্কুল পরিচালনা একটা বড় দায়িত্ব এই দায়িত্ব অর্পিত থাকে প্রধান শিক্ষকের উপরে। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে যদি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকে, তাহলে সহকারি শিক্ষক শিক্ষিকাদেরকে সেই দায়িত্ব পালন করতে হয়। এইজন্য তারা কোনো অতিরিক্ত পরিশ্রমিক পান না।

তার কারণে অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে একদিকে যেমন বিদ্যালয়ের পঠন পাঠন ব্যাহত হতে পারে, অপরদিকে আবার ক্ষোভের সঞ্চার হতে পারে সরকারি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে। সেই কারণেই শিক্ষা দপ্তরের উচিত এই সমস্ত ব্যাপারে অত্যন্ত দ্রুততার সরকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এখন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত এই সমস্যার কি সমাধান হয়! সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!