এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ঘাঁটি গেড়েছে পিকের টিম, তৃণমূল সম্পর্কে সমীক্ষা নেওয়া হচ্ছে বিরোধী দলের কাছ থেকেও, জোর জল্পনা

ঘাঁটি গেড়েছে পিকের টিম, তৃণমূল সম্পর্কে সমীক্ষা নেওয়া হচ্ছে বিরোধী দলের কাছ থেকেও, জোর জল্পনা

 

উত্তরবঙ্গে গত লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফল করতে পারেনি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের হারের অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি বিশেষ কারণ হিসাবে মানুষের প্রতি নেতা-নেত্রীদের দুর্ব্যবহার এবং একাধিক নিচুস্তরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগকে চিহ্নিত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই আগামী পৌরসভা নির্বাচনের আগে একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে দলের মধ্যে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে প্রকৃত স্বচ্ছ মুখকে পৌরসভা নির্বাচনের প্রার্থী করতে চায় রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

আর সেই লক্ষ্যেই ইতিমধ্যেই শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী রণনীতিকার হিসেবে নিযুক্ত প্রশান্ত কিশোরের টিমকে। এক্ষেত্রে টিম পিকে এলাকায় এলাকায় ঘুরে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে যুবক যুবতীদের আড্ডার জায়গা, সবখানে গিয়ে জনমত সংগ্রহ করছে বলে খবর। তাদের সমীক্ষা থেকে বাদ পড়ছে না সিপিএম থেকে শুরু করে কংগ্রেস, এমনকি বিজেপি নেতা কর্মীরাও।

তাদের কাছে গিয়েও এলাকার উন্নয়ন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে দেখা যাচ্ছে প্রশান্ত কিশোরের টিমকে। যাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের অন্দরে। এই বিষয়ে তৃণমূল কর্মীরা ইতিমধ্যে ধারণা করতে শুরু করে দিয়েছেন শিলিগুড়ি পৌরসভার নির্বাচনে অনেক পুরনো মুখ বাদ পড়ে যাবে। যার ফলে প্রার্থী হিসেবে সামনে আসতে পারে সার্বিক গ্রহণযোগ্য কোনো নতুন মুখ। তবে দলগতভাবে এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।

এক্ষেত্রে যে রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন এই প্রসঙ্গে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা শিলিগুড়ি পৌরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, “পৌরসভা ভোট নিয়ে দলের রাজ্য কমিটি যা নির্দেশ দেবে, তাই পালন করা হবে। নির্বাচনের লড়াই করার রণকৌশল থেকে প্রার্থী তালিকা তৈরি সবই দলের রাজ্য কমিটি করবে।”

কিন্তু টিম পিকে সম্পর্কে কিছু জানা নেই বলে এদিন জানিয়েছেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি। এই বিষয়ে তিনি বলেন, “পিকের টিমের ব্যাপারে কিছু জানা নেই। তাই সেই ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।” তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বরাবরই উত্তরবঙ্গের রাজধানী হিসেবে পরিচিত শিলিগুড়ি। কাজেই শিলিগুড়ি পৌরসভার দখল নেওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সেই লক্ষ্যেই ইতিমধ্যেই পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে প্রশান্ত কিশোরের টিমের সদস্যদেরকে। স্থানীয় সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে, 10 থেকে শুরু করে 12 জন সদস্য বিশিষ্ট এই দল এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক শক্তি যাচাই করছে। সমীক্ষা করার জন্য কখনও বয়স্কদের আড্ডায়, আবার কখনও পড়ুয়াদের আড্ডায় গিয়ে তাদের মনোভাব যাচাই করে নিতে চাইছে।

এলাকার মানুষের প্রকৃত জনমত যাচাই করার উদ্দেশ্যে শিক্ষক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করছেন পিকের টিমের সদস্যরা। এছাড়াও নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের পুরোনো দিনের কর্মীদের কাছেও যাচ্ছে তারা।

শুধু তাই নয়, কংগ্রেস কর্মী, সিপিএম কর্মী, বিজেপি নেতা নেত্রী প্রত্যেকের কাছে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান যাচাই করে নিতে দেখা যাচ্ছে ওই পিকে টিমের সদস্যদেরকে। ভূতপূর্ব তৃণমূল কাউন্সিলর এলাকায় কিরকম উন্নয়ন করেছেন, তাদের ভাবমূর্তি কতটা স্বচ্ছ, সেই খবর নিচ্ছে ওই টিম। আগামী দিনে ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক বৈতরণী পার করার উদ্দেশ্যে কোন ওয়ার্ডে কোন সম্প্রদায়ের মানুষ বেশি বসবাস করেন!

এলাকার মানুষের মূল চাহিদা কি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জনমুখি প্রকল্পগুলো সম্পর্কে মানুষের কি ধারনা! নাগরিকত্ব আইন থেকে শুরু করে, এনআরসি নিয়ে মতামত! সব বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তা ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে ওই সমীক্ষকের দল।

স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা নেত্রীরা অবশ্য আশাবাদী, যেভাবে বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রশান্ত কিশোরের রণকৌশলে হ্যাটট্রিক করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস, সেভাবেই আগামীদিনে পৌরসভা নির্বাচনে শিলিগুড়ি পৌরসভাতে জয়যুক্ত হবে ঘাসফুল শিবির। তাই শিলিগুড়ির বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে প্রশান্ত কিশোরের টিম যে রিপোর্ট সংগ্রহ করবে, সেই রিপোর্ট অনুযায়ী আগামীদিনে প্রার্থী ঠিক করবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মনে করছেন তৃণমূলের একাংশ।

এছাড়াও শিলিগুড়ি পৌরসভার 47 টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে যে 18 টি ওয়ার্ড রয়েছে, তার মধ্যেও অনেক কাউন্সিলর নিষ্ক্রিয় থাকায় এবং অনেকের ভাবমূর্তি অসচ্ছ থাকায় নতুন মুখদেরকে নিয়ে এসে ভোট যুদ্ধে নামাতে পারে শাসক দল বলে মত অনেকের। তবে এই বিষয়ে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পরে পুরো মাত্রায় পৌরসভা ভোট নিয়ে এলাকায় সক্রিয় হতে দেখা যেতে পারে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে।

বস্তুত, রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের মূল প্রতিপক্ষ ভারতীয় জনতা পার্টি হলেও, শিলিগুড়ি ক্ষেত্র যে সিপিএমের সঙ্গে 35 বছর লড়াই করার পর এই রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখনও সেই সিপিআইএমই তাদের মূল প্রতিপক্ষ। কারণ শিলিগুড়ি পৌরসভা বর্তমানে বামফ্রন্টের। তাই আগামী দিনের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে প্রশান্ত কিশোরের টিমের পরামর্শ মত তৃণমূল কংগ্রেস কী ভূমিকা নেয়! সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!