এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মমতা-অভিষেকের স্বপ্ন পূরণ করবেন এই দুই তরুণ তুর্কি হেভিওয়েটই! তীব্র গুঞ্জন শাসকদলের অন্দরে

মমতা-অভিষেকের স্বপ্ন পূরণ করবেন এই দুই তরুণ তুর্কি হেভিওয়েটই! তীব্র গুঞ্জন শাসকদলের অন্দরে


২০১৯ এর লোকসভা ভোটে তৃণমূল স্লোগান তুলেছিল ২০১৯, বিজেপি ফিনিস। সাথে তৃণমূল আওয়াজ তুলেছিল ২০১৯ সে ৪২ শে ৪২। কিন্তু ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের পর দেখা গেছে বিজেপি দিল্লির মসনদ দখল করার পাশাপাশি বাংলাতে তৃণমূলের সম্রাজ্যেও থাবা বসিয়েছে। আর তার পরেই নড়েচড়ে বসেছে তৃণমূল। বাংলাকে বিজেপি মুক্ত করতে ও ২০২১-এ বাংলা ফের দখলে রাখতে নিযুক্ত করা হয়েছে প্রশান্ত কিশোরকে।

কিন্তু প্রথমে তাঁর উপর ভরসা রাখলেও, এখন নেত্রীকে দেখা যাচ্ছে নিজেই কিছু কিছু দ্বায়িত্ব নিতে ও তা ভাগ করে দিতে। সম্প্রতি করোনা আবহে বিরোধীদের আক্রমণ ও অভিযোগ দুই বেড়েছে। সাথেই আম্ফানের জেরে বিধস্ত বাংলায় জল বিদ্যুৎ ইন্টারনেট – এখনো ঠিক না হওয়ায়, সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ফের বাড়ছে। সাথেই ক্ষতিপূরণের টাকা – প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা না পেয়ে, ঢুকছে তৃণমূলের নেতাদের অ্যাকাউন্টে – এই খবরও সামনে এসেছে।

তাছাড়া রেশন দুর্নীতি, পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষোভ, করোনা তথ্য লুকানো – এইসব নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ তো ছিলই। আর এর সাথেই নতুন করে শুরু হয়েছে নেতা নেত্রীদের অন্তর্দ্বন্দ্ব। এই সব কিছুকে হাতিয়ার করে বিরোধীদের তীব্রভাবে চেপে ধরা – তৃণমূলের ভাষায় যা অপপ্রচার, সব মিলিয়ে বিধানসভার আগে তৃণমূল কংগ্রেসের চাপ বাড়ছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

ফলে এই নিয়েই জোর গুঞ্জন তৃণমূল নেত্রী বা দলের অঘোষিত দুনম্বর নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর শুধুমাত্র পিকের উপর ভরসা রাখতে চাইছেন না। বিধানসভার কঠিন যুদ্ধে বিজেপিকে রিঙের বাইরে ছুড়ে ফেলে দিতে তৃণমূলের বর্তমান দুই ‘তুরুপের তাস’ তথা তৃণমূলী জনতার দুই ‘নয়নের মনি’কে পুরোদমে সামনে আগিয়ে দিতে চাইছেন। জোড়া ফলার ঝরে কার্যত তছনছ করে দিতে চাইছেন গেরুয়া শিবিরের ডিফেন্স!

আর তারই অন্যতম পদক্ষেপ হিসাবে পূর্ব মেদিনীপুরের ‘মুকুটহীন সম্রাট’ তথা তৃণমূল নেত্রীর পুরোনো দিনের সৈনিক শুভেন্দু অধিকারীকে বড়সড় দ্বায়িত্ব দেওয়া হতে চলেছে। কেননা তৃণমূলে মাঠি থেকে উঠে আসা নেতা হলেন শুভেন্দু অধিকারী। সিপিআইএম-এর গড় নন্দীগ্রামে ঘাসফুল ফোটানো থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব আন্দোলনের সঙ্গী শুভেন্দু অধিকারীর উপরে একটা আলাদা ভরসা আছে নেত্রীর এই কথা কারুর অজানা নয়।

আর নেত্রী তাঁকে যেখানে যা দ্বায়িত্ব দিয়েছেন সেখানে সেই দায়িত্ব অত্যন্ত যত্নের সাথেই পালন করেছেন তিনি। একের পর এক সাফল্যও মিলেছে তাঁকে দিয়ে। এমনকি ২০১৬-এর ঘাসফুল ঝড়ের সময়েও যে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যেত না, সেখানেও অধীর চৌধুরীর মত বাঘা নেতাকে কার্যত ‘ঘোল খাইয়ে’ বাজিমাত করে ছেড়েছেন তিনি। ফলে এই ২০২১-এর কঠিন যুদ্ধে একা পিকের উপর ভরসা না করে ফের শুভেন্দুকে মাঠে নামানোর পরিকল্পনা করছেন নেত্রী বলেই তীব্র জল্পনা শাসকদলের অন্দরে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সাথেই নেত্রী জানেন তৃণমূলের অন্দরে মমতা যেমন একটা আবেগের নাম, মুকুল শুভেন্দুও ঠিক তেমনই আবেগের নাম। মুকুলবাবু তৃণমূল ছেড়েছেন – মুখে অন্যকথা বললেও ফলাফলেই স্পষ্ট, সেই ক্ষত সামলাতে তৃণমূলের অনেকটা সময় লেগেছে বলে ইঁট রাজনৈতিক মহলের। আর সেই অবহেও, মাটি কামড়ে পরে থেকে লড়াই করার জন্যই – শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের আবেগ বেড়েছে বই কমেনি। তাই তাঁকে দ্বায়িত্ব দিলে সেই আবেগকেই কাজে লাগানো যাবে বলেই মনে করছে শাসকদলের অন্দরমহল।

এদিকে শুভেন্দুর পরে যাকে নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে তিনি হলেন বর্তমানে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল জেলা সভাপতি ও সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র। তাঁকেও বড়সড় দ্বায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলেই শোনা যাচ্ছে তৃণমূলের অন্দরে। কেননা মহুয়া মৈত্র গত লোকসভা নির্বাচনে দলের হাল শক্ত করে ধরে নির্বাচনটি জিতেছিলেন ছিনিয়ে নিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরের অন্যতম শক্তিশালী ঘাঁটি। এর পরেও তিনি ইতি টানেননি, যৎপরোনাস্তি খেটে গত বিধানসভা উপনির্বাচনে বিরোধীদলকে অনেকটা পেছনে ফেলে দলকে জিতিয়ে ছিলেন তিনি।

এর পরেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে মহুয়া মৈত্র কৃষ্ণনগরের জেলা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান। প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালে মহুয়া মৈত্র জেপি মরগানের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে রাজ্যের শাসকদল অর্থাৎ তৃণমূলে যোগ দেন। এরপর ২০১৬ সালে তিনি করিমপুর আসন থেকে বিধানসভা নির্বাচনে এবং কৃষ্ণনগর আসন থেকে লোকসভা নির্বাচনে তিনি জয়ী হন।এরপরও তিনি থামেননি দলের জন্য নিজেকে সম্পূর্ণ উজাড় করে দিয়ে কাজ করে চলেছেন।

এমনকি সাংসদের নতুন ভূমিকায় দিল্লি গিয়েই কার্যত একাই ঝড় তুলে দিচ্ছেন। তাঁর তীক্ষ্ন যুক্তিবানে যেভাবে কেন্দ্র সরকারকে ক্ষত-বিক্ষত করে ছাড়ছেন – তা ইতিমধ্যেই সারা জাগিয়েছে রাজধানীর অলিন্দে! সুবক্তা মহুয়া মৈত্রের ভাষণ শুনতে রীতিমত ভিড় জমে লোকসভায়। তাঁর প্রতি ভরসা করেন তৃণমূলের কর্মীরাও – তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে গুঞ্জন, মহুয়া মৈত্রের মধ্যেই যেন নতুন করে উঠে আসছে তাঁদের প্রিয় নেত্রীর সেই ‘অগ্নিকন্যা’ ইমেজ।

তাঁর উপরে যে একটা আলাদা ভরসা করেন নেত্রী, তার বড় একটা প্রমান হচ্ছে, সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সে বিভিন্ন জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে স্পষ্ট ভাষায় দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, জেলা নেতৃত্ব কোনো কমিটি তৈরি করতে পারবে না। কিন্তু মহুয়া মৈত্র যে কমিটি তৈরী করেছিলেন তা ভাঙার কোনো ইঙ্গিতই দেখা যায়নি। মহুয়া মৈত্রের উপর পূর্ণ সমর্থন ও আস্থা দেখিয়েছেন জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও।

সংশ্লিষ্ট মহল বলছে – তৃণমূল দলটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে আবর্তিত। নেত্রীর অগোচরে কিছুই থাকে না, ফলে মুহুয়া মৈত্র যা করছেন তাতে নেত্রীর আস্থা ও সম্মতি যে আছে তা প্রতি পদেই স্পষ্ট হচ্ছে। আর তাই এই দুই তরুণ তুর্কির উপর ভরসা করেই কি তৃণমূল ২০২১ এর বৈতরণী পার করতে চলেছে? সেই নিয়েই বড়সড় জল্পনা শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরেই। যদিও এই নিয়ে তৃণমূলের তরফ থেকে কোনো সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে দলের সুপ্রিমো এই নিয়ে প্রায় একপ্রকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন বলেই গুঞ্জন দলের অন্দরে। এখন সেই গুঞ্জন সত্যি হয় কিনা তা সময় বলবে – ততদিন অপেক্ষা রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!