এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিপুল ঋণের হাত থেকে বাঁচতেই তৃণমূলের নামে অপহরণের গল্প ফেঁদে বিজেপির মুখ পোড়াল দলীয় কর্মী

বিপুল ঋণের হাত থেকে বাঁচতেই তৃণমূলের নামে অপহরণের গল্প ফেঁদে বিজেপির মুখ পোড়াল দলীয় কর্মী

লোকসভা ভোটের মুখে ফের বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলে তৃণমূলের নামে মিথ্যে অপহরণের গুজব রটিয়ে ফাঁদে পড়লেন বলরামপুরের বিজেপি কর্মী কার্তিক গড়াই। প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা ঋণ থেকে বাঁচতে অপহরণের মিথ্যে নাটক করে কোলকাতা আত্মগোপন করেছিলেন তিনি। তাঁর নিখোঁজের পাঁচদিনের মাথায় কোলকাতা পুলিশ উদ্ধার করে তাকে।

কার্তিক গড়াই গ্রেফতার হওয়ার পর পুরো বিষয়টিই সাংবাদিক সম্মেলন করে খোলাসা করেন পুরুলিয়া পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া। এদিকে প্রকৃত ঘটনা সামনে আসার পর গেরুয়াশিবিরের ভাবমূর্তি তো নষ্ট হলই,পাশাপাশি এক স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগের ভিত্তিতে বিজেপি কর্মী কার্তিক গড়াইয়ের বিরুদ্ধে পাল্টা আর্থিক প্রতরণার মামলাও দায়ের করেছে পুলিশ।

পুরুলিয়া পুলিশ সুপারের বক্তব্য,গত ৫ ফেব্রুয়ারি নাগাদ কার্তিক গড়াই নামের ওই বিজেপির কর্মীর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর স্ত্রী। এরপর থেকে অপহরণের মামলা নিয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। বিজেপি কর্মীর হদিশ পাওয়ার জন্যে জেলা পুলিশের তরফ থেকে সিট গঠন করে তদন্তও শুরু করা হয়।

তদন্তসূত্রে জানা যায়, কোলকাতার সোনারপুরের একটি লজে গা ঢাকা দিয়ে থেকে বাড়ি ভাড়া খুঁজছিলেন কার্তিক। এসপি জানান,একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে এজেন্টের কাজ করতেন কার্তিক। তবে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিলেও সেরা ব্যাঙ্কে জমা করতেন না তিনি। এর জেরে প্রায় ১২ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল তাঁর। এই দেনা থেকে মুক্তি পেতেই পরিকল্পনামাফিক একটা নিখুঁত মিথ্যে অপহরণের গল্প তৈরি করে সে।

তাকে ধাওয়া করা থেকে শুরু করে বজরং দলের এক কর্মীকে ফোন করে বাঁচানোর আর্তি সবই ছিল একেবারে ত্রুটিহীন। সেই মতোই নিজের বাইক এক জায়গায় ফেলে রেখে মোবাইলের ব্যাটারি অন্যত্র ছুঁড়ে ফেলে গা ঢাকা দেয় কার্তিক। এদিকে কার্তিকের হদিশ না পাওয়া বিজেপি কর্মী সমর্থকরা অভিযোগের আঙুল তোলে তৃণমূলের দিকে।

অনেকে আবার আগ বাড়িয়ে পঞ্চায়েত ভোটের সময় বলরামপুরের দুই বিজেপি কর্মী খুনের মতো কার্তিককেও খুন করা হয়েছে বলে প্রকাশ্যে আশঙ্কা প্রকাশ করে গুজবকে অক্সিজেন দেন। কিন্তু বিজেপির সমস্ত সাজানো গোছানো পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেয় কার্তিকে দেনার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায়। প্রসঙ্গত,এলাকার বাসিন্দা কল্যাণ মাঝি কার্তিকের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করে হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেন। বর্তমানে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন বিজেপি কর্মী কার্তিক গড়াই।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এ প্রসঙ্গে কার্তিকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন তার সহযোদ্ধারাই। বলরামপুরের বাসিন্দা তথা বিজেপির পুরুলিয়া জেলার সম্পাদক বাণেশ্বর মাহাত বলেন,প্রশাসনের পাশাপাশি বিজেপি দলকেও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে কার্তিক। ওঁর দেনার বিষয়টা দলের কারোরই জানা ছিল না। এইধরণের একটা প্রতারকের বিরুদ্ধে পুলিশের আইন অনু্যায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার উচিৎ বলেই জানান তিনি।

দেনার বিষয়টি পরিবারের কারোরই জানা ছিল না বলে বক্তব্যে জানান বিজেপি কর্মীর দাদা বুদ্ধেশ্বর গড়াই এবং ভাইপো কৈলাস গড়াই। এ বিষয়ে উদ্ধার হওয়া বিজেপি কর্মী কার্তিক গড়াইকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘ছবি তোলার হলে ছবি তুলন। তবে অন্য কিছু বিষয়ে বলতে পারব না।’

অন্যদিকে,বিজেপি কর্মীর এই প্রতারণা ঘটনায় লোকসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক ফায়দা লুটে নিল তৃণমূল। শাসকদলের পুরুলিয়া জেলা সাধারণ সম্পাদক নব্যেন্দু মাহালির বক্তব্য,’ঘটনার প্রথম দিন থেকেই আমরা বলে আসছিলাম, কার্তিকের নিখোঁজের ঘটনায় কোনওভাবেই তৃণমূল জড়িত নয়। বিজেপি তৃণমূলের নাম জড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছিল। এখন সত্যিটা প্রকাশ্যে এসেছে। এলাকার মানুষ বুঝতে পারছেন, বিজেপি কত নোংরা রাজনীতি করে।’

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!