এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > তৃণমূলকে ধুয়েমুছে “সাফ” করার ডাক দিয়ে এবার নীরবতা ভেঙে আসরে নামলেন উত্তরবঙ্গের হেভিওয়েট নেতা

তৃণমূলকে ধুয়েমুছে “সাফ” করার ডাক দিয়ে এবার নীরবতা ভেঙে আসরে নামলেন উত্তরবঙ্গের হেভিওয়েট নেতা


অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন তিনি। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই জেলায় ফিরে “তৃণমূলকে তিনি সাইনবোর্ডে পরিণত করে দেবেন” বললেও সেইভাবে তার সাফল্য দেখতে পায়নি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মানুষ। উল্টে তার হাত ধরে বিজেপির সদর দপ্তরে গিয়ে যে সমস্ত জেলা পরিষদের সদস্যরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তারা জেলায় ফিরে আসার পরই আবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তৃণমূলে ফিরে এসেছেন।

ফলে একসময় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলের শেষ কথা বলা বিপ্লব মিত্র বিজেপি নেতা হয়ে খুব একটা সাফল্য পেলেন না বলেই মনে করেছিল বিশেষজ্ঞমহল। তবে এবার হয়ত পরিস্থিতি ঘুরতে শুরু করল। এবার সত্যি সত্যিই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে তৃণমূলকে সাফ করে দেওয়ার জন্য মরণপণ করে বসলেন সেই তৃণমূলেরই প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা বর্তমান বিজেপি নেতা বিপ্লব মিত্র।

সূত্রের খবর, তৃণমূলে থাকার সময় যে গঙ্গারামপুরে নিজের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন বিপ্লববাবু, বিজেপিতে যোগদানের পরেই গঙ্গারামপুর দিয়েই নিজের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করলেন তিনি। জানা যায়, বিজেপিতে যোগদানের পর এই প্রথম গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর এর ঠ্যাঙ্গাপাড়ায় বিজেপির একটি কর্মীসভায় প্রায় একঘন্টা ধরে বক্তব্য রাখেন বিপ্লব মিত্র।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই সভা থেকেই নিজের প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে হুংকার ছাড়েন মিত্র পরিবারের মেজছেলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একসময়কার সহকর্মী বলেন, “তৃণমূলের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। জেলায় বিজেপিকে ক্ষমতার অলিন্দে পৌঁছে দিতেই আমি কাজ শুরু করে দিয়েছি। দূর্গাপূজার বিসর্জনের ঢাকে কাঠি পড়লেই জেলার তৃণমূল বলে আর কিছু থাকবে না। আমি 11 জনকে যোগদান করিয়েছিলাম। পুজোর পর 14 জন জেলা পরিষদের সদস্য বিজেপিতে যোগদান করবেন। এবারে আর কেউ পুলিশ দিয়ে আমাদের আটকাতে পারবে না।”

অন্যদিকে যে অর্পিতা ঘোষের জন্য বিপ্লববাবু দল ছেড়েছিলেন, সেই অর্পিতা ঘোষকেও এদিনের সভা থেকে একহাত নেন তিনি। বিপ্লব মিত্র বলেন, “বহিরাগত আসার পর জেলায় তৃণমূলের সংগঠন বলে কিছু নেই। যারা এখানে তৃণমূল করেন, তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় তারা বহিরাগতের নেতৃত্ব মানছেন। কিন্তু আমি তা পারিনি। তাই দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে বেরিয়ে এসেছি। এবার আমার হাত দিয়ে তৈরি গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিগুলো আমরা ছিনিয়ে নেব। পুজোর পর জেলাবাসী সমস্ত কিছু দেখতে পাবেন।”

আর অবশেষে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এই প্রথম বিপ্লব মিত্রের গা ঝাড়া দিয়ে উঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য এবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা রাজনীতিতে তীব্র গুঞ্জন তৈরি করে দিয়েছে। তাহলে কি সত্যি সত্যি পুজোয় বিসর্জনের ঢাকের কাঠি পরার সাথে সাথেই তৃণমূলের ঘর ভাঙতে শুরু করবেন বিপ্লব মিত্র! তিনি কি প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন যে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বিএম অর্থাৎ বিপ্লব মিত্রই শেষ কথা!

এদিন এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি শুভেন্দু সরকার বলেন, “পুজোর আগে পর্যন্ত আমরা সাংগঠনিক সভা করছি। বিপ্লবদাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সেই কাজ শুরু করে দিয়েছি। বিপ্লবদা গা ঝাড়া দিয়েছেন। তাকে নিয়েই আমরা পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের দখল নেব। বিপ্লবদার পেছনে এখনও যে তার অনুগামীরা রয়ে গেছেন, তা ঠেঙ্গাপাড়ার সভা থেকেই তার প্রমাণ পেয়েছি।”

তবে বিপ্লব মিত্র তৃণমূলের উদ্দেশ্য এই ধরনের মন্তব্য করলেও তা নিয়ে পাল্টা বিপ্লববাবুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তপনের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। তিনি বলেন, “বিপ্লব বাবু আমাদের দলে আর নেই। তাই উনি কি বললেন তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। জেলার মানুষ তৃণমূলের ওপরই ভরসা রেখেছে। বিপ্লববাবু বিজেপিতে গিয়ে কোনো জায়গা করতে পারেননি। বিভিন্ন সভায় লোক দেখতে না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে উনি এইসব কথা বলছেন।”

তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, একসময় তৃণমূলের জেলা সভাপতি থাকার সুবাদে বিপ্লব মিত্রর সাথে তৃণমূলের অনেকেরই যোগাযোগ রয়েছে। তাই এখন সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরে পদ্মফুলের জোয়ার আনতে পদ্মচাষি হিসেবে ঠিক কতটা দক্ষ হাতে কাজ করেন বিপ্লব মিত্র! এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!