ভুল বোঝাচ্ছে তৃণমূল, তাই এবার কেন্দ্রীয় প্রকল্পের খুঁটিনাটি নিয়ে রাস্তায় নামবে বিজেপি রাজ্য June 9, 2019 2011 সালে রাজ্যে পালাবদলের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসলে উন্নয়নের ভিত্তিতেই প্রতিটা নির্বাচনে নিজেদের ভোট বৈতরণী পার হয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু একটি রাজ্যের উন্নয়ন শুধুমাত্র সেই রাজ্যের শাসকবর্গের দ্বারা যে নয়, তার সাথে যুক্ত থাকে কেন্দ্রের আর্থিক বরাদ্দ – তা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরা অপেক্ষা তারাই বাংলার উন্নয়ন ঘটাচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বাংলার সহজ-সরল সাধারণ মানুষেরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কথাটিকে সত্য বলে মেনেও নিয়েছিল। কারণ সুশীল সমাজ চায় অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান। চায় শুধুই উন্নয়ন। তাই রাজনীতির এই মারপ্যাঁচে তারা পড়তে চায়নি। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির ভালো ফলাফল হওয়ার পরই এবার কেন্দ্রের প্রকল্পেই যে রাজ্য আলো দেখছে, তা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে উদ্যোগী গেরুয়া শিবির। তাদের দাবি, রাজ্যের মানুষকে ভুল বুঝিয়ে কেন্দ্রের প্রকল্প নিজের বলে চালিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এবার সাধারণ মানুষের এই ভুল ভাঙাতে উদ্যোগী হবেন তারা। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে ভিন রাজ্যের এক বিজেপি নেতাকে গোটা বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে বিজেপির তরফে। অনেকে বলছেন, তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের কোনো ভালো প্রকল্প এলেই তাকে নিজের মতো করে নাম দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে সেই প্রকল্প পৌঁছে দিয়ে তৃনমূল সরকার এই প্রকল্প চালু করেছে বলে বড়াই করেন। বস্তুত বাম আমলে প্রায়শই শোনা যেত, কেন্দ্র মেঘ পাঠায়নি। তাই রাজ্যে বৃষ্টি হয়নি। আর এই রকম কেন্দ্র-রাজ্য বঞ্চনার তকমা লাগিয়ে 35 বছরে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে কেন্দ্র বিরোধী মনোভাব তৈরি করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিল। সফলতাও যে তারা লাভ করে এই বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। সাত সাত বার বামফ্রন্ট সরকার গঠন হওয়া তার মূর্ত প্রতীক। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া এবং সর্বোপরি সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে সমাজ এখন অনেকটাই উন্নতির পথে। কাজেই এই ধরনের প্রপোগান্ডা, অর্ধ সত্য, অসত্যের রাজনীতি মানুষ যে তোতার বুলির মত হজম করবে না তার প্রমাণ পাওয়া যায় বিগত দিনের নির্বাচনগুলিতে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - পাশাপাশি এটাও সত্য, আগে কেন্দ্রের শাসন ক্ষমতাশালী দল রাজ্যে শুধুই কেন্দ্রের ক্ষমতা দখলের জন্য ঘুটি সাজাতেন। রাজ্যের মাঠে ময়দানে নেমে কেন্দ্র সরকারের কাজের প্রচার আগে কোনো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতো করেননি। তাই সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে কেন্দ্র সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের কথা এবং সেই কাজগুলোকে শুধু নামের ফেরে রূপান্তরিত হয়ে যাওয়া সত্য মানুষ ইতিমধ্যেই বুঝতে শুরু করেছেন। তাই তাদেরকে আর কতদিন ভুল বুঝিয়ে রাখা যাবে এটাই এখন সংশয়ের বিষয়। বস্তুত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার দাবি করেছেন, কেন্দ্র কিছুটা টাকা দিলেও সব টাকা দেয় না। তাই রাজ্যকেই যখন বিভিন্ন প্রকল্প চালাতে হয় তখন রাজ্য সেটা তার মতো করেই চালাবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন, যখন তার মধ্যে কিছুটা টাকা কেন্দ্র সরকারের রয়েছে, আর বাকিটা রাজ্যের তাহলে সাফল্যের শ্রেয় কেন একা রাজ্য সরকারের দিকেই যাবে! এই প্রশ্নই এখন ঘোরাফেরা করছে ওয়াকিবহাল মহলে। আর এর রেশ ধরেই এবার সাধারণ মানুষের কাছে বাংলার সিংহভাগ উন্নয়ন যে কেন্দ্র সরকারের দ্বারাই হচ্ছে, তা তুলে ধরতে রাস্তায় নামতে চলেছে গেরুয়া শিবির। এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির এক নেতা বলেন, “লোকসভা ভোটে আমাদের ভালো ফল হয়েছে। সংসদে আমাদের 18 জন সাংসদ রাজ্যের হয়ে চিৎকার করবেন। সেই ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি সঠিকভাবে কার্যকর হয়েছে কিনা তা দেখভালের বাড়তি দায়িত্ব আমাদের কাছে এসে পড়েছে। তাই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত।” তবে প্রবল শক্তিশালী তৃণমূলের ক্ষমতায় বিরোধী দল বিজেপি কেন্দ্র থেকে রাজ্যের মানুষের জন্য নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্প আনলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখরাঙানি উপেক্ষা করে তারা সাধারণ মানুষের কাছে সত্য ঘটনাকে পৌঁছে দিতে আদৌ কতটা সফল হন, এখন সেদিকেই তাকিয়ে থাকলে। আপনার মতামত জানান -